×

মুক্তচিন্তা

কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে যাদের লেখাপড়া গৌণ হয়ে যায়

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০২২, ১২:৩৫ এএম

বাংলাদেশে কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের পেছনে রাষ্ট্র এবং অভিভাবকদের ব্যয় প্রতিষ্ঠানভেদে বিবেচনা করতে হবে। যারা নামিদামি বেসরকারি কলেজে ভর্তি হতে যায় তাদের অভিভাবকরা জানেন যে উচ্চ মাধ্যমিকের দুই বছর পড়াতে গেলে কত লাখ টাকা তাদের ব্যয় করতে হয়। আবার এমপিওভুক্ত স্কুল এন্ড কলেজ কিংবা সাধারণ কলেজে পড়াতে গেলেও অভিভাবকদের শুধু কলেজের বেতনই নয়, শিক্ষকদের কাছে বাধ্যতামূলক কোচিং বাবদ মাসে গুনতে হয় বাড়তি কয়েক হাজার টাকা। এমপিওভুক্ত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যয় ছাড়াও প্রতিষ্ঠান নির্মাণসহ নানা ধরনের অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা সরকার থেকে পেয়ে থাকে। সেই হিসেবে বিবেচনা করলে দেশের কয়েক হাজার এমপিওভুক্ত কলেজ শিক্ষায় রাষ্ট্র বিপুল অর্থ ব্যয় করে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যয় সিংহভাগই সরকার বহন করে, ছাত্র বেতন সেগুলোতে এখনো নামমাত্র। সরকারি কলেজগুলোতেও উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর পর্যায় পর্যন্ত লেখাপড়ার জন্য শিক্ষার ব্যয়ের সিংহভাগই বাংলাদেশ রাষ্ট্র বহন করে আসছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার ব্যয় নিজেদের অর্থেই অভিভাবকরা সন্তানদের জন্য মিটিয়ে থাকে। সে কারণে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মানের তারতম্য এবং নানা প্রশ্ন থাকলেও সেগুলোতে ছাত্র রাজনীতি বা ছাত্র সংগঠনের কোনো কর্তৃত্বের কেউ ধার ধারে না। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে আমাদের দেশে যেসব কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার ব্যয়ের বড় অংশ সরকারকে বহন করতে হয়, সেই সব সরকারি-বেসরকারি কলেজ এবং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশটি বহুকাল থেকেই শিক্ষার অনুকূলে যাচ্ছে না। ছাত্র রাজনীতির নামে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসলেই কী চলেছে বা চলছে, কেন চলছে তা আজো আমরা নির্মোহভাবে অনুধাবন করতে চাইছি বলে মনে হয় না। গ্রামেগঞ্জেও এমপিওভুক্ত কলেজে লেখাপড়ার চাইতেও ‘ছাত্র রাজনীতি’ যেন প্রতিষ্ঠানকে যুগ যুগ ধরে গ্রাস করে আছে। যেসব সরকারি কলেজে হোস্টেল আছে সেখানে সিট দখল ও নিয়ন্ত্রণ করার নামে অর্থ ও প্রভাব বিস্তার করার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ছাত্র সংগঠনের নামধারী তথাকথিত নেতারা। কলেজে পড়তে এসে রাতারাতি কেউ যখন ‘নেতা’ বনে যান, ‘ছাত্র নেতা’ নামে পরিচিত হয়ে যান, তখন ওই ১৮ ও ২০-২২ বছরের তরুণের মাথা ঠিক থাকে বলে মনে হয় না। সে ক্রমেই ক্লাসে উপস্থিত না থেকে বাইরে আড্ডা দেয়া, মিছিল-সেøাগানের নামে ‘সাংগঠনিক’ কাজে ব্যস্ত থাকাকেই নতুনভাবে নিজেকে ক্ষমতাবান ভাবতে কিংবা দেখতে শুরু করে। নতুনরাও তাকে ‘বড়ভাই’ বা ‘নেতা’ হিসেবে ডাকতে শুরু করে। এসব নেতার জীবন থেকে শিক্ষা লাভ করার অধ্যায়টি একেবারে হারিয়ে যায়। এটি শুধু সাম্প্রতিক কালের কথা নয়। বহু আগ থেকেই এটি তিলে তিলে তাল হয়ে উঠেছে। এই তাল জাতির জন্য কত বড় কাল হয়ে উঠেছে- সেটি আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব, সমাজ, শিক্ষা, সংস্কৃতিজনরা এখনো বোধহয় উপলব্ধি করতে পারছেন না। যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, তখন সেই সরকারের ছাত্র সংগঠন সরকারি-বেসরকারি কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতারাতি দখল এবং প্রভাব বিস্তার করে নেয়। অনেকেই তখন আগের ছাত্র সংগঠনের ব্যানার ছেড়ে নতুন ছাত্র সংগঠনের আশ্রয়ে চলে যায়। প্রথমেই যেই কাজটি তারা করে তা হচ্ছে ছাত্রাবাস এবং হলগুলোর কর্তৃত্ব নিজের হাতে তুলে নেয়া। কেবলমাত্র আধা সরকারি এবং সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেই এই রাম-রাজত্ব চলে আসছে। আমি শিক্ষক হিসেবে আশির দশকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবাসে ছাত্রশিবিরের একক কর্তৃত্ব দেখেছি। নব্বইয়ের দশকে বিএনপির শাসনামলেও তাদেরই কর্তৃত্ব দেখেছি। ছাত্র হলগুলোতে পাহারাদার বসিয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ তারা প্রতিষ্ঠা করত। ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ছাত্রলীগ ঢাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হলগুলোতে কিছুটা কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারলেও, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে তা পারেনি। ছাত্রশিবিরের দীর্ঘদিনের অবস্থান তখনো সরকারের পক্ষেই ভাঙা সম্ভব হয়নি। এসব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে কত নিরপরাধ এবং নিরীহ ছাত্রের জীবন গেছে তার কোনো শেষ নেই। ২০০১ সালের পর ঢাকায় আবার ছাত্রদলের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হলেও চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুষ্টিয়া কিংবা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরই রাজত্ব করেছিল। ২০০৯-১০ সালের পর এই পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটতে থাকে। এখন ছাত্রলীগ হল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তৎপর আছে। কিন্তু‘ ছাত্রলীগের নামে যারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেতা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে তাদের কতজন ছাত্রলীগ কিংবা আওয়ামী লীগের রাজনীতির ভালোমন্দ বোঝে কিংবা পড়াশোনা করে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও ছাত্র সংগঠনের নামে যারা পরিচিত তাদের বেশিরভাগই লেখাপড়ার মূল কাজটির সঙ্গে নিজেদের যুক্ত রাখে না। অথচ এই বয়সেই শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাসে যাওয়া, লেখাপড়া করা, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, সহশিক্ষাক্রম, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটানোই মুখ্য হয়ে ওঠার কথা ছিল। শিক্ষাজীবন তো শিক্ষা বিচ্ছিন্নতার মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠে না। নিয়মিত পঠনপাঠন ছাড়া একজন শিক্ষার্থীর নিজেকে যোগ্য, মেধাবী এবং সুশিক্ষিত করে তোলা তো মোটেও সম্ভব নয়। বেশিরভাগ কলেজেই এইচএসসি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা যতটা লেখাপড়ায় মনোযোগী থাকার চেষ্টা করে। এইচএসসি পরবর্তী সময়ে তাতে বড় ধরনের ধাক্কা লেগে যায়। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার পরিবেশ মানসম্মত পর্যায়ে থাকে না। সেখানে কোথাও দায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির, কোথাও শিক্ষকদের একটি অংশের, কোথাও ছাত্র সংগঠনের ‘বড় ভাইদের’। অনেক কলেজেই উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়েও নিয়মিত ক্লাস হয় না। সেই কলেজে যদি ছাত্র সংগঠন প্রভাবশালী থাকে। তাহলে এর ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া এসে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যেও পড়তে দেখা যায়। সেখানেই শিক্ষা বিমুখিনতার প্রবণতা শিক্ষার্থীদের একটি অংশের মধ্যে ঢুকে যায়। তারা নিজেদের অজান্তেই লেখাপড়ার প্রতিযোগিতা থেকে কিছুটা দূরে সরে যায়। এইচএসসির ফলাফলে এর প্রভাব পড়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অনেকেই আর খুব একটা এঁটে উঠতে পারে না। অনেকেই কলেজে পড়তে আসে, সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক সম্মান পর্যায়ে ভর্তি হয়। অথচ কলেজগুলোতে না আছে স্নাতক বিষয়ে পড়ানোর কোনো শিক্ষক, না আছে পড়াশোনার পরিবেশ, না আছে শ্রেণিপাঠের তাগিদ। অনেকের জন্য এটি একটি অলস শিক্ষাপর্ব। আবার বড় বড় কলেজগুলোতে ছাত্র রাজনীতির প্রভাব দেখে প্রলুব্ধ হয় অনেকেই। সেখানে আসলে ছাত্র রাজনীতির নামে যা চলে তাতে আদর্শের চর্চার কোনো বালাই থাকে না। ছাত্র সংগঠনের নেতাদের আজ্ঞাবাহক হয়ে একসময় তারাই সংগঠনের অমুক ভাই, তমুক ভাইয়ের গ্রুপের অনুসারী হয়ে যায়। এদের জীবনাচরণে তখন শিক্ষা নয় বরং ক্ষমতা, দাপট, প্রভাব, আশপাশের দোকান ব্যবসাবাণিজ্যের ক্ষেত্রে চাঁদাবাজি করার অভ্যাস গড়ে ওঠে। নীরবে এসব চাঁদাবাজ ছাত্ররাই একসময় সন্ত্রাসী এবং দুর্নীতিপরায়ণ ছাত্র নেতারূপে পরিচিত হয়ে ওঠে। কলেজের প্রশাসন, পরীক্ষা, ছাত্রাবাসসহ সর্বত্রই তাদের অর্থের বিনিময়ে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। এসব কলেজ নামক উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে উচ্চশিক্ষা এভাবেই বিদায় নিয়েছে। লাখ লাখ বেকার সার্টিফিকেটধারী ওইসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হচ্ছে। রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতিবছর এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যয়ভার বহনের জন্য খরচ হচ্ছে। কিন্তু‘ রাষ্ট্র কী পাচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার সময় অনেক আগেই এসেছিল কিন্তু‘ কেউ প্রশ্ন করছে না। আমাদের লাখ লাখ মেধাবী শিক্ষার্থী অদক্ষ জনশক্তিতে পরিণত হয়ে গেছে তার খোঁজ আমরা রাখিনি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, ছাত্রাবাসগুলোতে সরকারি ছাত্র সংগঠনের একচ্ছত্র কর্তৃত্বের কথা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। হল প্রশাসন অনেক ক্ষেত্রেই তাদের কাছে জিম্মি হয়ে থাকে। হলে একটি সিট পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীকে প্রশাসনের চাইতেও আগে যেতে হয় ক্ষমতাশীল নেতাদের কাছে। এর ফলে যেই নৈরাজ্য বছরের পর বছর ধরে হল প্রশাসনের গভীরে স্থান করে নিয়েছে তা ভাঙার কোনো উদ্যোগ নতুন প্রশাসন নিতে চায় না, পারেও না। সব জায়গায় স্থিতাবস্থা বজায় রেখে চলার প্রবণতা দেখা যায়। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাই একটা বড় সংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পড়ালেখা, স্বাধীনভাবে চলাফেরা, সহশিক্ষাক্রমে অংশ নেয়া ইত্যাদি তারা প্রায় ভুলতেই বসেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন নেই তেমন কোনো ডিবেটিং সোসাইটি, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, এমনকি দেশ, জাতি ও বিশ্ববাস্তবতা সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞানতাত্ত্বিক কোনো আলোচনা সভা কিংবা সেমিনার, সিম্পোজিয়ামেরও ব্যবস্থা। ছাত্র সংগঠনের নেতারা হলগুলোতে এক আয়েশি জীবনযাপন করেন। তাদের খাওয়া-দাওয়া, জীবনযাপন, ঘুম থেকে ওঠা, আড্ডা দেয়া এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে আড্ডাস্থলে যেভাবে কাটাতে দেখা যায় তাতে তাদের তখনই নিজেদের একেকজন নেতা ও ক্ষমতাধর ব্যক্তি হিসেবে উপভোগ করতে দেখা যায়। ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের জীবনাচরণই সম্পূর্ণরূপে আলাদা হয়ে ওঠে। যারা বিশ্ববিদ্যালয়ে সত্যিকার অর্থেই পড়তে আসে তারা এগুলোর থেকে অনেক দূরেই থাকতে পছন্দ করে। বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এটি অনেকটা সম্ভব হলেও, ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এটি সম্ভব হয় না। নেতাদের ‘সমীহ’ করে চলতে হয়। প্রায় নেতাদের দেখা যায় দলবল নিয়ে চত্বরে রাউন্ড দিতে। প্রশাসনের সঙ্গে মাঝেমধ্যে নেতাদের বসতেও দেখা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে আসা কোনো শিক্ষার্থী যখন এ পর্যায়ে চলে যায় তখন সে নিজে যেমন আর নিজেকে শিক্ষার্থী ভাবতে পারে না, অন্যরাও তাদের ভাবী নেতা হিসেবে কল্পনা করতে থাকে। কিন্তু‘ ছাত্র রাজনীতির এমন নেতাদের মধ্য থেকে কজনই সত্যিকার অর্থে রাজনীতি অথবা শিক্ষায় নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতায় গড়ে ওঠে তা একটু পেছনের পরিসংখ্যান নিয়ে দেখলেই দেখা যাবে। এদের অনেকেই কোথাও তেমন কোনো স্থান করে নিতে পারে না। কিন্তু যতদিন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা ‘ছাত্র নেতা’ নামে পরিচিত থাকে ততদিন তাদেরই আশ্রয়-প্রশ্রয়ে নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত হয় কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। কোথাও যৌন হয়রানি, কোথাও ছাত্র নিপীড়ন, কোথাও মারামারি, গ্রুপিং, চাঁদাবাজি, মাস্তানি, প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপ ইত্যাদিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কখনোবা অচল, কখনোবা কলঙ্কিত করতে দেখা যায়। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সময়ে ছাত্রী হয়রানির ঘটনার সঙ্গে এক ছাত্রলীগ নেতার প্রশ্রয়ে থাকা দুই ছাত্রলীগ কর্মীর নাম আলোচিত হয়েছে, ধরাও পড়েছে। তাদের সঙ্গে আরো কয়েকজন যারা ওই অপরাধ সংগঠনে যুক্ত ছিল তারাও ধরা পড়েছে। কথা হচ্ছে এরা যৌন হয়রানির মতো অপরাধ করার সাহস পেল কীভাবে? পাওয়ার প্রধান কারণটিই হচ্ছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে ভাবতে শিখেছে, ‘বড় ভাই’ বা দল তাদের পেছনে আছে। সুতরাং যা খুশি তা করে পার পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু রাষ্ট্র তো সব অপরাধকে চোখ বুজে না দেখার ভান করে থাকতে পারে না। এই ন্যূনতম জ্ঞানটুকু ওদের সাধারণ জ্ঞানে থাকে না। সে কারণেই বলছি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে এসে যাদের জীবনে লেখাপড়া করা গৌণ হয়ে যায়, তাদের বড় বড় অপরাধী হতে বাধা থাকে না। আমরা কি রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ খরচে আমাদের ভাবী প্রজন্মের একটি বড় অংশকে এভাবে নষ্ট হতে দেব?

মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী : অধ্যাপক (অবসরপ্রাপ্ত), ইতিহাসবিদ ও কলাম লেখক। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App