×

মুক্তচিন্তা

বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হোন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ জুলাই ২০২২, ০১:৩৩ এএম

জ্বালানি সংকটের প্রভাবে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার ফলে ইতোমধ্যে সারাদেশে এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং করার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। জ্বালানি সংকটের তীব্রতা কাটিয়ে না ওঠা পর্যন্ত এমন ভোগান্তি পোহাতে হবে সাধারণ মানুষকে। বর্তমানে নির্ধারিত সময়সূচিতে চলমান রয়েছে লোডশেডিং। তবে রাজধানীকেন্দ্রিক এ সময়সূচি অনুযায়ী বিদ্যুৎ থাকলেও দেশের অনন্য শহর কিংবা গ্রামগুলোতে লোডশেডিং অনেক বেশিমাত্রায় দেখা দিয়েছে। কোথাও কোথাও দুই বা তিন ঘণ্টার সময়সূচি প্রকাশিত হলেও সেসব অঞ্চলে ৬ কিংবা ৭ ঘণ্টারও বেশি লোডশেডিং দেখা যাচ্ছে। এর ফলে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সাধারণ মানুষ। বিঘিœত হচ্ছে বিভিন্ন কলকারখানার কাজ। হ্রাস পাচ্ছে উৎপাদন। এর মধ্যে কেউ কেউ শতভাগ বিদ্যুতায়ন জেলা বা উপজেলার কথা বলে বসিয়েছে আলোচনা-সমালোচনার আসর। জ্বালানি সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া অব্দি এ উৎপাদনকৃত বিদ্যুৎ নিয়ে কীভাবে সব কাজ সামলিয়ে সামনের দিকে এগোনো যায় সেসব বিষয়ে নেই কোনো পরিকল্পনা। এজন্য এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সমালোচনা এড়িয়ে কিংবা সরকারকে অযথা দোষারোপ না করে আমাদের উচিত হবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া। প্রতিটি ঘর, পরিবার, প্রতিষ্ঠান থেকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাই যদি সচেতনতা অবলম্বন করে তাহলে অনেকাংশেই কমে আসবে বিদ্যুতের ঘাটতি। চলমান ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে পৃথিবীর অনেক দেশে দেখা দিয়েছে নানা জটিলতা। যার প্রভাবে বাংলাদেশেও বিভিন্ন জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখীসহ নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সরকার মনে করছে, জ্বালানি সংকটের তীব্রতা কাটিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শীতকাল পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে। তবে সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাবে এবং সংকটপূর্ণ এ পরিস্থিতির বেশকিছুটা উন্নতি হবে বলে আশা করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তবে নিজেদের সচেতনতা বাড়ানো এবং বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া ছাড়া পরিস্থিতি আবারো স্বাভাবিকে আনা খুব কঠিন হয়ে পড়বে। এজন্য আমাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে শুধু আরাম-আয়েশের দিকে না তাকিয়ে, দেশের কথা ভেবে, সাধারণ মানুষের কথা ভেবে বিদ্যুৎ ব্যবহারে আরো সাশ্রয়ী হতে হবে। যেহেতু আধুনিক জীবনযাপনে আমরা সবাই বিদ্যুতের ওপর নির্ভরশীল। ফলে দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে বিদ্যুৎ খরচের পরিমাণ। এজন্য শুধু ব্যবহার না বাড়িয়ে সাশ্রয়ী হওয়ার দিকেও তাকাতে হবে। এতে একদিকে যেমন বিদ্যুতের সংকট স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে চলে আসবে, অন্যদিকে মাস শেষে বিদ্যুৎ বিলও কমে আসবে। কিছুদিন আগে এমন পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বেড়েছে, পর্যাপ্ত কয়লা পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সবাইকে বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। এজন্য বাসাবাড়িতে অপ্রয়োজনীয় লাইটগুলো জ্বালানো থেকে বিরত থাকতে হবে। সেক্ষেত্রে এনার্জি সেভিং বাল্ব ব্যবহার করলে তা ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে সাহায্য করে। অনেক সরকারি অফিস-আদালতে বিনা প্রয়োজনে বৈদ্যুতিক পাখা চালিয়ে রাখা হয়, সেগুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনেক সরকারি প্রতিষ্ঠানে দিনের বেলায়ও লাইট জ্বলতে দেখা যায়, সেগুলো বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরো আন্তরিক হতে হবে। যেহেতু বর্তমানে বিদ্যুতের সংকট চলছে সেহেতু এয়ারকন্ডিশন চালানোর ব্যাপারে সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে। দীর্ঘ সময় চালিয়ে না রেখে রুম ঠাণ্ডা হয়ে গেলে সেটা বন্ধ করতে হবে। অনেক সময় বিদ্যুৎ সংযোগে সমস্যা থাকায় বিদ্যুৎ বেশি খরচ হয়, সেসব দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি দেশের উত্তরাঞ্চলসহ যেসব অঞ্চলে বড় কয়লার খনি রয়েছে সেসব দিকে সরকারকে নজর দিতে হবে। কারণ এসব কয়লার মজুত থেকে সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে গ্যাসের বিকল্প হিসেবে আমরা কয়লাকে ব্যবহার করতে পারব। আর তখন নিজস্ব জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল হয়ে জ্বালানি আমদানিনির্ভরশীলতা কমিয়ে আনতে পারলেই এসব সংকট সহজেই মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। রিয়াদ হোসেন শিক্ষার্থী, সরকারি বিএল কলেজ, খুলনা। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App