×

সম্পাদকীয়

রেলের অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ জুলাই ২০২২, ১২:২৮ এএম

রেলের অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে

রেলের টিকেট নিয়ে যাত্রীদের দুর্ভোগ কমছে না, বরং বাড়ছে। রেলের টিকেট বিক্রির দায়িত্বে থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সহজ ডটকমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠছে। গত বুধবার টিকেট বিক্রিতে অবহেলার দায়ে টিকেট বুকিং অপারেটর সহজ ডটকমকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রনির অভিযোগের ভিত্তিতে দুই পক্ষের শুনানি শেষে জরিমানা করা হয়। এ ঘটনা প্রমাণ করে রেল খাতে কেমন অনিয়ম-দুর্নীতি হচ্ছে। রেলের অব্যবস্থাপনার অবসান চেয়ে বেশ কয়েক দিন কমলাপুর রেলস্টেশনে অবস্থান করেছেন মহিউদ্দিন রনি। তুলে ধরেছেন ছয় দফা দাবি। তার সঙ্গে সংহতি জানিয়ে চট্টগ্রাম ও জামালপুর রেলস্টেশনেও অবস্থান করেন শিক্ষার্থীরা। তারা রেলের এই অব্যবস্থাপনার অবসান চাইছেন। আমরাও তাদের সঙ্গে একমত পোষণ করছি। মহিউদ্দিন রনি টিকেট অব্যবস্থাপনার সঙ্গে রেলের অনিয়ম-দুর্নীতি যোগ করেছেন। রেলের অনিয়ম-দুর্নীতির কথা দুর্নীতি দমন কমিশনও বলেছে। রেলমন্ত্রীর কাছে দুদক প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে রেল খাতে দুর্নীতির ১০টি উৎস চিহ্নিত করে তা বন্ধে ১৫টি সুপারিশ করা হয়েছে। এসব সুপারিশ কর্তৃপক্ষ কোনো আমলে নিয়েছে বলে মনে হয় না। জানা গেছে, সহজ ডটকম অনলাইনে ৫০ শতাংশ এবং অফলাইনে রেলের কাউন্টারে ৫০ শতাংশ টিকেট বিক্রি করেছে। মহিউদ্দিন রনির অভিযোগ, অনলাইনে চারটি টিকেট কেটে টাকা পরিশোধ করলেও টিকেট পাননি এবং পরে কাউন্টারে গিয়ে দেখেন, তার টিকেটগুলোর একটি অপর একজনের কাছে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টিতে সহজ ডটকমের অবহেলা প্রমাণিত হয়েছে। এর দায়ভার রেল কর্তৃপক্ষ এড়ানোর সুযোগ নেই। রেলের টিকেট নিয়ে ভোগান্তি যেন প্রতিদিনের চিত্র। বিশেষ করে ঈদ পার্বণে চরম পর্যায়ে দেখা যায়। তখন যেন রেল টিকেট সোনার হারিণ রূপ নেয়। এ সুযোগে একটি সিন্ডিকেট টিকেট কালোবাজির সুযোগ নেয়। এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি পুরো টিকেট ব্যবস্থাকে জিম্মি করে রেখেছে। তারা দ্বিগুণ-তিনগুণ দামে টিকেট বিক্রি করে টু-পাইস কামিয়ে নিচ্ছে। এই চক্রের হাত থেকে রেলের টিকেট উদ্ধার করার কোনো উদ্যোগ নেই। দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, টিকেট কালোবাজারি ও স্বজনপ্রীতির আখড়ায় পরিণত হচ্ছে রেল। দিন দিন সুনাম নষ্ট হচ্ছে যোগাযোগের এই পুরনো গণপরিবহন খাতের। দীর্ঘদিনের এই বিশৃঙ্খলা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। দেশের বৃহত্তম ও সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রীয় গণপরিবহন খাতের এই চিত্র হতাশাজনক। দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম প্রধান মাধ্যম হলো রেল। অথচ দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে অবহেলার শিকার হয়ে আসছিল রেল। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হয়ে রেলের দিকে দৃষ্টি ফেরায়। যা দেশবাসীকে খুবই আশান্বিত করেছে, এ কথা বলতেই হয়। দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে। ফলে মানুষ ও পণ্যের চলাচলের জন্য রেলের প্রয়োজনীয়তাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের রেল চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মেলাতে পারছে না। আমরা মনে করি, রেল খাতের পুনরুজ্জীবন ঘটানো এখন জাতীয় স্বার্থেই প্রয়োজন। রেলের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ওঠা অভিযোগগুলোকে আমলে নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App