×

প্রবাস

যুক্তরাজ্যে আহমেদ কায়সার প্রাইড অব বেঙ্গল পুরস্কারে ভূষিত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২২, ০৭:৩১ পিএম

যুক্তরাজ্যে আহমেদ কায়সার প্রাইড অব বেঙ্গল পুরস্কারে ভূষিত

টি এম আহমেদ কায়সার

যুক্তরাজ্যে আহমেদ কায়সার প্রাইড অব বেঙ্গল পুরস্কারে ভূষিত

অনুষ্ঠানে আগত অতিথি ও পুরস্কারপ্রাপ্তরা।

সৌধ পরিচালক কবি টি এম আহমেদ কায়সার যুক্তরাজ্যেরর সংসদ ভবন হাউজ অব কমন্সের চার্চিল হলে শিল্প ও সংস্কৃতিতে "তাৎপর্যপূর্ণ অবদানে"র জন্যে প্রাইড অব বেঙ্গল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। গত বুধবার (২০ জুলাই) তাকে এ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়।

বৃটিশ-ভারতীয় কোম্পানি এডভাটেক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে এই পুরষ্কার প্রদান করেন সংস্থার চেয়ারপার্সন ও যুক্তরাজ্যের সাংসদ আনা ফার্থ ও ট্রাস্টি সামিত বিশ্বাস। গত চার বছর ধরে প্রবর্তিত এই পুরস্কার ইতিপূর্বে নোবেল বিজয়ী অমর্ত্য সেন, ক্রিকেটার সৌরভ গাঙ্গুলী সহ দেশ বিদেশে যে সব বাঙালী শিল্পে, ব্যবসায়, নারী ক্ষমতায়নে, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সেবা, একাডেমিক গবেষণায় অসামান্য অবদান রেখে চলেছেন - তাদেরকেই দেয়া হয়ে আসছে বলে জানিয়েছেন এডভাটেক ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র সামিত বিশ্বাস।

[caption id="attachment_359315" align="aligncenter" width="1080"] অনুষ্ঠানে আগত অতিথি ও পুরস্কারপ্রাপ্তরা।[/caption]

এ বছর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্ম ও স্মৃতির প্রতি বিশেষ সম্মাননার পাশাপাশি লাইফ-টাইম এচিভমেন্ট এওয়ার্ড পান বিশিষ্ট রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা। গণমাধ্যমে অবদানের জন্যে এটিএন বাংলার প্রতিষ্ঠাতা ডা. মাহফুজুর রাহমান এবং স্বাস্থ্য ও সামাজিক পরিচর্যায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সংবাদপাঠিকা, লেখিকা ড. জাকি রেজওয়ানা আনোয়ারও এ বছর প্রাইড অব বেঙ্গল পুরষ্কার পান।

পুরষ্কার প্রদানের পর এক সংক্ষিপ্ত প্রতিক্রিয়ায় টি এম আহমেদ কায়সার বলেন, "পুরষ্কারের ব্যাপারে আমি নিজেকে ফরাসি দার্শনিক জা পল সার্ত্রের ভাব-শিষ্য বলে মানি - যিনি নোবেল পুরষ্কারও অবলীলায় প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। এই ছোট্র জীবনে আমিও কোনো রকম কুন্ঠা ছাড়াই বহু জিনিস প্রত্যাখ্যান করেছি এটা ভেবে যে মানুষের প্রেরণা আসবে ফলত তার নিজের অন্তর্গত সত্ত্বা থেকে, বাইরের কোনো প্রতিষ্ঠানকে এই দায়িত্ব কিছুতেই অর্পণ করা উচিত নয়। কিন্তু তবু এই পুরষ্কার নিতে আমি লিডস শহর থেকে এই সম্মানজনক হাউস অব কমন্স পর্যন্ত এসেছি প্রথমত তাকে সম্মান জানাতে যিনি আমাকে মনোনয়ন করেছেন এই পুরষ্কারের জন্যে। ইলিকা চক্রবর্তী - যিনি ভেবেছেন দুই-বাংলার মিলন ও বিশ্বমঞ্চে আমাদের বাঙালি সহ দক্ষিণ এশীয় শিল্পের প্রচারে আমি ছাড়া অন্য এমন কাউকে তিনি এদেশে চেনেন না বা কারো নাম তার মাথায় পর্যন্ত আসেনি। দ্বিতীয়ত, যে সব কাজের জন্যে বিচারকেরা আমাকে এই পুরষ্কার প্রদানে সম্মত হয়েছেন তা কিছুতেই আমার একার কাজ নয়। গত তেরো বছর ধরে যে পরিমাণ সমর্থক, স্বেচ্ছাসেবিদের সহযোগিতা আমরা পেয়েছি - এই পুরষ্কার প্রকারান্তরে তাদেরই সর্বাত্মক সহযোগিতারও স্বীকৃতিও বটে।

কায়সার বলেন, যদি সামান্য কিছু অবদান রেখে থাকি যুক্তরাজ্যের শিল্প ও সঙ্গীত মঞ্চে, তা বোধকরি এজন্যে যে জীবনভর আমি মানুষে মানুষে সংযোগ রচনা করতে চেয়েছি। নিজের কাজের চাইতেও অন্যের ভাল কাজগুলো জনসমক্ষে নিয়ে আসতে চেয়েছি। সেতুবন্ধন রচনা করতে চেয়েছি এক শিল্পের সঙ্গে আরেক শিল্পের, এক সংস্কৃতির সঙ্গে আরেক সংস্কৃতির। কিছুদিন আগেও রয়াল আলবার্ট হলে আমাদের প্রোডাকশন ফ্রিডা কাহলো থ্রু ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল মিউজিক দেখে দর্শকেরা জিজ্ঞেস করেছেন - মেক্সিকান শিল্পের সঙ্গে ভারতীয় সঙ্গীতের অন্বয় বা যোগসাজসের ভিত্তি কোথায়? আমি বলেছি, আমি যতটা বাঙালি বা যতটা ভারত উপমাদেশিয় ঠিক ততটাই আন্তর্জাতিক এবং বিশ্বের সমস্ত শিল্প সংস্কৃতির উত্তরসূরীও। সমস্ত শিল্পের মূলে যে মানবিক আবেগ আবেদন লুকিয়ে আছে তা কোনো ভৌগলিক সীমারেখা দিয়ে খন্ডন করা যাবে না। আমরা ঐ সার্বজনীন মানবিকতাকেই প্রচার করতে চাই যা সংকীর্ণ কোনো ভৌগলিক বলয়ে বিভক্ত নয়।

বিশিষ্ট টিভি উপস্থাপিকা উর্মি মাজহারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই বর্ণাঢ্য উদযাপনে উপস্থিত ছিলেন সাংসদ বীরেন্দ্র শর্মা, সাংসদ রোশনারা আলি লন্ডন সিটির ডেপুটি মেয়র রাজেশ আগরওয়াল, সাংসদ আনা ফার্থ সহ বৃটেনের রাজনীতি, সংস্কৃতি ও গণমাধ্যমের বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App