×

মুক্তচিন্তা

চলমান সংকট নিরসনে সাশ্রয়ী হতে হবে

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২২, ০১:৫৩ এএম

চলমান সংকট নিরসনে সাশ্রয়ী হতে হবে
চারদিকজুড়ে শুধু হাহাকার, সংকট নামক দাবানল চোখ রাঙাচ্ছে প্রতিদিন। নাই আর নাই এই ছোট্ট শব্দতে বিপন্ন হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। শব্দটা চর্মচক্ষুতে নিছক ছোট মনে হলেও এর ব্যাপকতা বেশ বড়। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে খুব ভয়াবহভাবে। সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাস, তেল ও বিদ্যুতের সংকটের খবরে ভারি হচ্ছে সংবাদপত্র। গ্যাস, তেল ও বিদ্যুতের গুরুত্ব যে কোনো দেশের জন্য অপরিহার্য। বাংলাদেশে এখন বিদ্যুৎ সরবরাহ দেশব্যাপী বড় মাত্রায় কমিয়ে দেয়া হয়েছে। সরকার বলছে, গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় বিদ্যুতের লোডশেডিং করতে হচ্ছে। গ্যাস সংকটের কারণে বিশ্ববাজারে দাম চড়া হওয়ায় খোলাবাজার বা স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজি কেনা বন্ধ রাখার বিষয়কে তুলে ধরা হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কয়েক দিন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিং হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে প্রভাব পড়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের, তাই সবাই তেল ও গ্যাস সংকটে। জ্বালানি খাতে বিশ্বব্যপী রাশিয়ার প্রভাবের কিছু চিত্র দেখানো হচ্ছে। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার ওপর কঠোরতম অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপের অংশ হিসেবে সেদেশ থেকে জ্বালানি পণ্য আমদানি বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্র ইউরোপীয় ইউনিয়ন। অথচ ইইউর সদস্য দেশগুলোর জ্বালানি চাহিদার বেশিরভাগ পূরণ হয় রাশিয়া থেকে আমদানি করা তেল-গ্যাস দিয়ে। ইইউর দেশগুলোর আমদানি করা জ্বালানি তেলের এক-চতুর্থাংশ সরবরাহ করে আসছে রাশিয়া। এ বছরের মধ্যে সমুদ্রপথে রাশিয়া থেকে আসা তেল বন্ধ করার পরিকল্পনা নিয়েছে এই জোট। এর ফলে ইইউতে রাশিয়ার সরবরাহ করা তেল দুই-তৃতীয়াংশ কমে যাবে। অবশ্য এরপরও ইইউ সাময়িকভাবে পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল আমদানি বজায় রাখবে। কারণ হাঙ্গেরি রাশিয়া থেকে তাদের মোট চাহিদার ৬৫ শতাংশ তেল রাশিয়া থেকে আমদানি করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানির ৪০ শতাংশ আসে রাশিয়া থেকে। জার্মানির মতো দেশে মোট গ্যাস চাহিদার অর্ধেকের বেশি সরবরাহ করে মস্কো। তাই নিজেদের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে রাশিয়ার গ্যাসের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ইইউর জন্য কঠিন হবে। এদিকে বিশ্ববাজারে জ্বালানির দাম বেড়ে চলায় সুবিধা পাচ্ছে রাশিয়া। শুধু ইইউতে তেল ও গ্যাস বিক্রি করে তারা এক বছরে প্রায় ৪ লাখ কোটি ইউরো আয় করতে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও এর প্রভাব লক্ষণীয়। প্রযুক্তিনির্ভর এই যুগে আমরা গ্যাস বিদ্যুতের ওপর ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এক মুহূর্ত চলা যায় না। পড়াশোনা, প্রযুক্তি, শিল্পকারখানা প্রভৃতি ব্যবহারে সর্বক্ষেত্রে বিদ্যুতের প্রয়োজন। জ্বালানি, অর্থনীতি খাত অর্থাৎ বড় ফ্যাক্টরিতে গ্যাসের প্রভাব রয়েছে, এমনকি বিদ্যুৎ উৎপাদনেও। দৈনন্দিন রান্না থেকে শুরু করে নানা ক্ষেত্রে তেলের প্রয়োজন অথচ তেলের দাম এখন আকাশচুম্বী। তাই সীমিত ব্যবহার পারে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অপচয় রীতিমতো চোখ কপালে ওঠার মতো। অনেকেই নিভু নিভু গ্যাস জ্বালিয়ে রাখেন সারাদিন। আবার গ্যাস দিয়ে কাপড় শুকানোর সংখ্যাটাও কম নয়। তাই সংকটের সময় এ বিষয়ে নজরদারি প্রয়োজন। বিলাসিতা করে বিদ্যুতের অপচয় প্রতিদিনের ঘটনা। জনস্বার্থে এই কুৎসিত কাজ থেকে সরে দাঁড়ানোর উচিত। তবেই গ্যাস, তেল ও বিদ্যুতের সংকট মোকাবিলা সম্ভব। জুবায়েদ মোস্তফা শিক্ষার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App