×

মুক্তচিন্তা

অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০২২, ০১:৫২ এএম

অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান
গত ৪ জুন রাত সাড়ে ৯টার দিকে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকায় বিএম কন্টেইনার ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। যা ছিল অত্যন্ত ভয়াবহ ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। প্রচণ্ড বিস্ফোরণে প্রায় ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে কম্পন অনুভূত হয়। এ দুর্ঘটনায় নিহত হন ৫০ জন এবং আহত হন প্রায় ২ শতাধিক মানুষ। এ দুর্ঘটনায় অনেকের হাত-পাও উড়ে যায়। যা খুবই মর্মান্তিক। অনেকেই তখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হন। চট্টগ্রামের অনেক মানুষ এই ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মানবতার হাত বাড়িয়ে দেন। অনেক ফার্মেসি থেকে বিনা টাকায় ওষুধ দেয়া হয়। অনেক ট্যাক্সি, রিকশাওয়ালা গাড়ির ভাড়া নেননি। অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের পাশে দাঁড়ান। বিএম ডিপো থেকে হতাহতদের উদ্ধার করা থেকে শুরু করে হাসপাতালে পৌঁছে দেয়া, রক্তের ব্যবস্থা করা, ওষুধের ব্যবস্থা করা, কাফন-দাফনসহ সব কাজে অংশগ্রহণ করে কিছু স্বেচ্ছাসেবক সংঘ। তাদের নিরলস পরিশ্রম সত্যিই প্রশংসনীয়। এরাই হচ্ছে মানবতার ফেরিওয়ালা। নিঃস্বার্থ মানবসেবার মতো তাদের এই কাজ প্রমাণ করে যে, পৃথিবীতে আজো কিছু ভালো মানুষ আছে। যারা মানুষের বিপদে পাশে এসে দাঁড়ায়। অথচ সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যায় আমরা কী দেখলাম? ভয়াবহ বন্যায় ডুবে গেছে সিলেট-সুনামগঞ্জ। সিলেট-সুনামগঞ্জের প্রায় ৪০ লাখ মানুষ ১০-১৫ দিন ধরে পানিবন্দি ছিল। তাদের বাড়িঘর জিনিসপত্রসহ সবকিছুই ডুবে গেছে। সেখানে খাবার ও বিশুদ্ধ পানির জন্য চলছিল তীব্র হাহাকার। অথচ দুঃখজনক যে, বন্যার ওই দুঃসময়েও নিত্যপণ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। সুনামগঞ্জে বন্যার আগে ২৫ টাকা কেজির আলু বন্যার সময় ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি হয়। বন্যা আসার আগে প্রতি কেজি মসুর ডালের দাম ছিল ১২০ টাকা। পরবর্তীতে এর দাম বেড়ে হয় ১৪০-১৫০ টাকা। চাল কেজিতে বেড়েছে ১০-১৫ টাকা। সিলেটে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। শুকনো খাবারের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। দাম বেড়েছে সব নিত্যপণ্যের, যা মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। গাড়ি ভাড়াও বেড়েছে অনেক। যা সত্যিই অমানবিকতার পরিচয়। এ সময় ব্যবসায়ীদের উচিত ছিল সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমিয়ে দেয়া। অথচ বেশিরভাগ ব্যবসায়ী তা করেনি। এর বদলে তারা সবকিছুর দাম বাড়িয়ে দিয়ে চরম অমানবিকতার পরিচয় দিচ্ছে। এসবের দিকে সরকারের লক্ষ্য রাখা দরকার। সরকারের উচিত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমিয়ে আনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। সিলেট-সুনামগঞ্জের ভয়াবহ বন্যার জন্য দায়ী হলো প্রচুর বৃষ্টিপাত এবং ভারত থেকে উজানে আসা পানির ঢল। বর্তমানে চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক মানুুষ ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে সিলেট-সুনামগঞ্জে। ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে। এই কর্মকাণ্ড মানবতার পরিচয় বহন করে। একইভাবে সবারই উচিত বন্যাকবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়া। কারণ মানুষ তো মানুষের জন্য। মানুষের জন্য কিছু করার মাধ্যমেই জীবনকে করা যায় সার্থক ও ধন্য। তাই আসুন, যে যেভাবেই পারেন নিজ নিজ অবস্থান থেকে সাধ্যানুযায়ী অসহায় বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ান। নূরতাজ তাফহিমা খান শিক্ষার্থী, অপর্ণাচরণ সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টগ্রাম। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App