×

বিনোদন

পরী মণির বিরুদ্ধে নাসিরকে হত্যাচেষ্টার মামলা গ্রহণ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুলাই ২০২২, ০৩:৪৫ পিএম

ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত চিত্রনায়িকা পরী মণির বিরুদ্ধে মারধর, হত্যাচেষ্টা, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলার আবেদন গ্রহণ করেছেন আদালত।

আজ সোমবার (১৮ জুলাই) বিকালে ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজিব হাসানের আদালত মামলাটি গ্রহণ করে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করতে সিআইডিকে দায়িত্ব দেন।

আগামী ৬ অক্টোবর সিআইডিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবীর বাবুল এ তথ্য জানান। এদিন বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আদালতে হাজির ছিলেন।

নাসির উদ্দিন ভোরের কাগজকে বলেন, ঘটনার দিন অ্যালকোহল পান করে মাতাল হয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে আকৃষ্ট করার চেষ্টা ও ভাঙচুর করেন পরী মণি।

তিনি আরও বলেন, পরী মণি আমার বিরুদ্ধে যে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার মামলা করেছিল তা পুলিশ তদন্তে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। ওই মামলা থেকে আমি অব্যাহতি পেয়েছি। এছাড়া পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, পরীমনি সেদিন অ্যালকোহল পান করে ক্লাব ভাঙচুর করে। আমার উপর গ্লাস ছুড়ে মারে। তাই আমি নতুন এই মামলাটির (ক্লাবে ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টা) জন্য আবেদন করেছি।

সেদিন কি ঘটেছিল- প্রশ্নে নাসির উদ্দিন ভোরের কাগজকে বলেন, পরী মণি প্রথমে ক্লাবে এসে অ্যালকোহল পান করে। এরপর মাতাল হয়ে সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। আমি ক্লাব থেকে বের হওয়ার সময় মাতাল অবস্থায় অশ্লিল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে আমাকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে। এছাড়া বিনামূল্যে একটি অ্যালকোহলের বোতল বাসায় নিয়ে যেতে চায়। আমি রাজি না হওয়ায় আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে গ্লাস ও মোবাইল ফোন ছুড়ে মারে। গ্লাস আমার হাতে লাগে। অনেক ব্যাথা পায়। গ্লাস যদি মাথায় লাগতো, তাহলে না জানি কি হতো।

পরী মণি এর আগে আর কখনো বোট ক্লাবে এসেছিল কিনা- প্রশ্নের জবাবে সভাপতি নাসির উদ্দিন বলেন, ওইদিনই সে প্রথম এসেছিল। আর কখনো আসেনি।

এর আগে, গত ৬ জুলাই বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ আদালতে এ মামলাটির আবেদন করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে আদেশের জন্য আজ দিন ধার্য করেন। এ মামলায় পরী মণি ছাড়াও তার দুই সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে, মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করে না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে এবং দ্বিতীয়তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। সেদিন বাদী (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত সোয়া একটার দিকে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন। তখন পরী মণি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাসিরকে ডাক দেন। তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসারও অনুরোধ করেন।

একপর্যায়ে পরী মণি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেয়ার জন্য চাপ দেন। নাসির উদ্দিন এতে রাজি না হওয়ায় পরী মণি তাকে গালমন্দ করেন। নাসির ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরী মণি বাদীর দিকে একটি সার্ভিং গ্লাস ছুঁড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

মামলায় নাসির উদ্দিন আরও উল্লেখ করেন, পরী মণি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসিরউদ্দিনকে) মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন ও বোট ক্লাবে ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য পরী মণি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা করেন।

২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে পরী মণি ঢাকার সাভার থানায় মামলা করেন। মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১ আগস্ট দিন ধার্য রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App