×

জাতীয়

পদ্মা সেতুতে সহসা চালু হচ্ছে না রেল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুলাই ২০২২, ০৮:২২ এএম

পদ্মা বহুমুখী সেতু চালুর ৬ মাসের মধ্যে সেতু দিয়ে রেল চলাচল শুরুর কথা থাকলেও সহসা চালু হচ্ছে না ট্রেন। এদিকে চলতি বছরের ২৫ জুন স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর পরের দিন ২৬ জুন জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয় পদ্মা সেতু। কিন্তু কথা ছিল পদ্মা সেতু চালু হবার ৬ মাসের মধ্যে অর্থাৎ ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু দিয়ে চলাচল করবে ট্রেন। কিন্তু এখন তা পিছিয়ে যাচ্ছে অন্তত এক-দেড় বছর।

রেলওয়ের পক্ষ থেকে জানা গেছে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলতে অন্তত আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। প্রকল্প পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুনে যশোর পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজ শেষ করতে হবে। এ পর্যন্ত ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত রেলপথ নির্মাণকাজের অগ্রগতি ৪২ শতাংশ। মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশে অগ্রগতি ৮০ শতাংশ। ভাঙ্গা থেকে যশোর অংশে নির্মাণের কাজ হয়েছে ৪৪ শতাংশ।

রেল প্রকল্পের কাজে বিলম্বের বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন জানান, পদ্মা সেতুর নিচ অংশে রেল পার্টি বসানোর জন্য রেলপ্রকল্পের হাতে হস্তান্তর করা হচ্ছে অনেক বিলম্বে। যদি একই সঙ্গে সেতু ও রেলের কাজ করা যেত তাহলে রেলপ্রকল্প অনেক এগিয়ে থাকত। কিন্তু কয়েকবার অনুমতির জন্য চিঠি দেয়া হলেও আজ পর্যন্ত সেতু কর্তৃপক্ষ রেলের কাজের জন্য অনুমতি দেয়নি। বারবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৭ জুলাই সেতু কর্তৃপক্ষ পদ্মা সেতুর নিচ অংশ দিয়ে রেল পার্টি বসানোর অনুমতি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি ভোরের কাগজকে জানান, আগে কথা ছিল, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার ট্রেন চালানো হবে, সে হিসেবে আমরা মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু এখন রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, একেবারে ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮১ কিলোমিটার ট্রেন চালানো হবে। সে কারণে এই ৮১ কিলোমিটার কাজ শেষ করতে আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ আরো এক-দেড় বছর সময় লাগতে পারে।

তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর জাজিরা পয়েন্ট থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত কাজের অগ্রগতি বেশ ভালো, এখানে প্রায় ৮০ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। সেতুর এ প্রান্তের ভায়াড্রাক্টের ওপর ১১ কিলোমিটারসহ মোট ১৪ কিলোমিটার রেললাইন বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ৬-৮ মাসের মধ্যে মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত কাজ শেষ করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।

তিনি জানান, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮১ কিলোমিটার ট্রেন একবারে চালাতে গেলে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। তার মধ্যে রয়েছে ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত মাটি ভরাটের কাজ। যার মাত্র ৪০-৪২ শতাংশ শেষ হয়েছে। আবার এ অংশে বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর ওপর দুটো বড় ব্রিজের কাজ চলমান। আছে অনেকগুলো কালভার্ট, ছোটখাটো ব্রিজ, যা শেষ হতে সময় লাগবে। তারপরে অনেকগুলো স্টেশন নির্মাণ, পুরো অংশে মাটি ভরাট করে লাইন বসানোর উপযোগী করতে আরো বেশ কিছু সময় লাগবে।

পদ্মা সেতুতে গাড়ি চলাচল করলে রেলের কাজে কোনো সমস্যা হবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্প পরিচালক আফজাল হোসেন বলেন, কম্পনের কারণে সমস্যা হবে না। সেতুতে রেলপথ হবে পাথরবিহীন। এ কাজে অন্তত ছয় থেকে আট মাস লাগবে।

এদিকে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুর উপর জুলাইয়ের ১ তারিখে থেকে রেলের কাজ শুরু কথা থাকলেও সেতু বিভাগ রেলওয়েকে ১৭ জুলাই থেকে কাজ করার জন্য অনুমতি দেবে বলে জানিয়েছে। আমরা মাওয়া থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালানোর জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি নিলেও এখন ঢাকা থেকে একেবারে ভাঙ্গা পর্যন্ত মোট ৮১ কিলোমিটার ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে মোট প্রকল্পটি ঢাকা থেকে মাওয়া, পদ্মা সেতু, ভাঙ্গা হয়ে যশোর পর্যন্ত মোট ১৬৯ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ। যার জন্য আমাদের সময় আছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। তবে আপাতত ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই ৮১ কিলোমিটার রেলপথ আগামী বছরের জুন মাস আমরা টার্গেট করছি, তা না হলে ডিসেম্বর চালু হবে। আমাদের হাতে সময় রয়েছে ২০২৪ সাল পর্যন্ত।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App