×

জাতীয়

যত্রতত্র কোরবানি: বর্জ্য অপসারণে হিমসিম দু’সিটির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ জুলাই ২০২২, ০৮:২৬ পিএম

যত্রতত্র কোরবানি: বর্জ্য অপসারণে হিমসিম দু’সিটির

যত্রতত্র পশু কোরবানি। বর্জ্য অপসারণ কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। ছবি: ভোরের কাগজ

দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে

ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুর বর্জ অপসারণে হিমসিম খেতে হচ্ছে দু সিটির কর্মীদের। বিশেষ করে বাড়ি, রাস্তাঘাটের আনাচে কানাচে পশু কোরবানি দেয়ায সেগুলো এখনো অপসারণ করতে পারেনি সিটি কর্পোরেশন। যদিও বড় রাস্তা ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের নির্দ্দিষ্ট স্থানে যারা কোরবানি করেছেন সে সব বর্জ অধিকাংশ অপসারণ সরা হয়েছে বলে দু সিটি কর্পোরেশনের তরফ থেকে জানান হয়েছে।

রবিবার (১০ জুলাই) মুসলমানদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হচ্ছে দেশজুড়ে। আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুয়ায়ী পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন। গত বারের তুলনায় এবার কুরবানির সংখ্যা বেশি বই কম হবে না বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আর কোরবানির পশু জবাইয়ের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় বাড়তি বর্জ্য। পশুর বর্জ্য দ্রুত অপসারণে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) প্রতি বছরই নানামুখী পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। এবারও বিশেষ ব্যবস্থায় কোরবানির দিন দুপুর থেকে বর্জ্য অপসারণ করছে দুই সিটি করপোরেশন। এদিকে দু সিটিতে বর্জ সব সরানো না হওয়ায় দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে বিভিন্ন এলাকায়।

ঢাকা দক্ষিণের কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কিছু ওয়ার্ডের সড়কে যত্রতত্র বর্জ্য পড়ে আছে। বিকাল পর্যন্ত সেগুলো সরানো হয়নি। তবে কিছু কিছু ওয়ার্ডের অধিকাংশ বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটির রামপরা, মিরপুরসহ কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আগের তুলনায় সড়কে বর্জ্যের পরিমাণ কম। এখনো যেখানে বর্জ্য রয়েছে সেগুলো অপসারণে কাজ করছে সিটি করপোরেশন। ঢাকা উত্তর সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন জানিয়েছেন, কোরবানির বর্জ্যের ৮০ ভাগ অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে। এরইমধ্যে ৬, ১৩, ১৯, ২৫, ৩১, ৪৪, ৪৫, ৪৬, ৫২, ৫৩ এবং ৫৪ নাম্বার ওয়ার্ডে শতভাগ বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলোও রাতের মধ্যেই শেষ হবে বলে জানান তিনি।

এরআগে সকালে বর্জ্য অপসারণে সবার সহযোগিতা কামনা করে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি সবাইকে অনুরোধ করবো, ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করবো- আপনারা আমাদেরকে সহযোগিতা করুন। আপনারা নির্দিষ্ট স্থানে বর্জ্য রেখে দিন। আমাদের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা এরইমধ্যে মাঠে নেমেছে। জনগণের সহযোগিতা পেলে আশা করি খুব শিগগির সব বর্জ্য অপসারণ করতে পারবো।

এরপর রাজধানীর শাহীনবাগ এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে রাস্তার পাশে বর্জ্যের স্তুপ দেখতে পান মেয়র আতিকুল ইসলাম। এসময় তিনি দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।

এদিকে, ঢাকা দক্ষিণ সিটির শনির আখড়া, দনিয়াসহ কয়েকটি এলাকার অধিকাংশ বর্জ্য রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অনেকে সিটি করপোরেশনের দেওয়া ব্যাগ না পাওয়ায় যত্রতত্র আবর্জনা ফেলেছেন। ফলে সেখানে ময়লা জমে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও হাটের কার্যক্রম শেষ হলেও এখনও হাটের বর্জ্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

তবে এরইমধ্যে ঢাকা দক্ষিণের বর্জ্য পরিষ্কারে কাজ শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা। কোরবানি পরবর্তী বর্জ্য অপসারণে নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু করেছে ডিএসসিসি। নিয়ন্ত্রণকক্ষে দক্ষিণ সিটির বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছাড়াও সব বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন সেশনে দায়িত্ব পালন করছেন।

কোরবানি পরবর্তী বর্জ্য অপসারণ সংক্রান্ত তথ্য নিয়ন্ত্রণকক্ষে জানাতে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাসরত নাগরিকদের অনুরোধ করেছে কর্তৃপক্ষ। নিয়ন্ত্রণকক্ষের ফোন নম্বর ০১৭০৯৯০০৮৮৮ ও০ ২২২৩৩৮৬০১৪। কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ সংক্রান্ত নাগরিকদের যেকোনো অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে করপোরেশন।

বর্জ্য অসারণ প্রসঙ্গে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাহদাত হোসেন বলেন, আমরা বর্জ্য অপসারণে বিশেষভাবে কাজ করছি। দুপুর থেকে কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের রাত ১০টা লাগবে না, রাত ৮টার মধ্যেই সব পরিষ্কার করে দেবো। আমাদের লক্ষ্য ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করা। তবে মূল কাজ আজ রাতেই শেষ করে ফেলবো। শাহজাহানপুর হাটের সব ময়লা এরইমধ্যে পরিষ্কার করে ফেলেছি।

এর আগে সকালে দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমি সবাইকে অনুরোধ করবো সুষ্ঠু ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে যেন আমরা কোরবানি দিতে পারি। এরপর আমরা দুই মেয়র মিলে ঢাকা শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার জন্য সব বর্জ্য অপসারণে দুপুর ২টা থেকে কার্যক্রম শুরু করবো বরে ঘোষণা দেন।

বর্জ অপসারণ কর্মীরা জানান, আজ যতটা সম্ভব শেষ করার চেষ্টা করবো বাকিটা কাল দুপুরের মধ্যে শেষ হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App