×

জাতীয়

ঈদের ট্রেন টিকিট ছাড়াই ফিরলো অসংখ্য প্রত্যাশী, ভোগান্তি ছাড়ছে না

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২২, ০৬:৪৫ পিএম

মন্ত্রী বললেন, টিকিট কম তাই সবাই পাচ্ছে না

ট্রেনে ঈদ যাত্রায় মানেই ভোগান্তির এক শেষ। ঈদুল আযহা উপলক্ষে নাড়ির টানে বাড়ি ফিরতে চাওয়া যাত্রীরা একটি টিকিটের জন্য ২৪-৩২ ঘন্টা পর্যন্ত কমলাপুর রেল স্টেশনসহ রাজধানীর অন্য টিকিট বিক্রির স্টেশনগুলোতে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা রেলের এই অমানবিকতা ও টিকিট বিক্রির পদ্ধতি বদলানোর দাবি জানিয়ে আসছে। কিন্তু অসহায় রেল কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের সক্ষমতা কম, আর চাহিদা কয়েকগুণ, ফলে সকলকে টিকিট দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। একই সাথে অসহায় যাত্রীরাও, ঈদে সড়কের চেয়ে ট্রেন ভ্রমণ অনেক আরামদায়ক। একইসাথে নিরাপদও বটে। সেকারণে অধিকাংশ বাড়ি ফেরা যাত্রীরা ঈদে বাহন হিসেবে ট্রেনকেই বেছে নিতে পছন্দ করেন। কিন্তু গতকাল শত শত যাত্রী ট্রেনের টিকিট না পেয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

সোমবার (৪ জুলাই) কমলাপুরে গিয়ে দেখা গেছে ঈদ টিকিটের জন্য হাজারো মানুষ লাইনে অপেক্ষমান। কেউ গতকাল রবিবার লাইনে দাঁড়িয়েও টিকিট না পেয়ে সোমবার ৯-১০টা নাগাদ টিকিট পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এদিকে অনলাইনে ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রির জন্য সহজ ডট কমের সঙ্গে রেলের চুক্তি হলেও সহজ এসে টিকিট প্রাপ্তি অ-সহজ বা কঠিন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা। অধিকাংশ যাত্রীদের হাতে এনরয়েড ফোনে সারাক্ষণ এ্যাপসে ঢোকার অক্লান্ত চেষ্টায় তারা ক্লান্ত, কিন্তু টিকিট পাননি। যার ফলে কাউন্টারে যে অর্ধেক টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে সেখানে প্রায় অধিকাংশ টিকিট প্রত্যাশিদের ভিড়। সহজের নামে হাজারো অভিযোগ তাদের। এ ছাড়া রয়েছে এসি বার্থ ও এসি প্রথম শ্রেণির টিকিট না পাওয়া, টিকিট ইস্যূতে ধীরগতিসহ লাইনের সামনে ২৫-৩০ জনকে টিকিট দিয়ে টিকিট শেষ হয়ে যাবার নোটিশ ঝোলানো ইত্যাদি অভিযোগ।

গতকাল রবিবার দুপুর ১২টা নাগাদ টিকিট কাটার জন্য লাইনে দাড়ান রাজশাহীর নেহা ইসলাম ও তার বান্ধবী লাবনী। কিন্তু ওই দিন তারা রাজশাহীগামী কোন ট্রেনের টিকিট না পেয়ে অগত্যা স্টেশনে অবস্থান করার সিদ্ধান্ত নেন। তারা জানান, প্রায় ৫ শত নারী পুরুষ পরের দিনের টিকিটের জন্য কমলাপুর স্টেশনে খবরের কাগজ পেতে অবস্থান করেন। তারাও ভয়ের মধ্যে জীবনে প্রথমবারের মত খোলা আকাশের নিচে নির্ঘুম রাত কাটাতে বাধ্য হন। তারপরেও ভোগান্তির শেষ ছিল না। রাতে ভিক্ষুক, স্টেশনে অবস্থান করা টিন এজের মাল বাহকদের বারবার বিরক্তকরা, মোবাইল, মানিব্যাগ চুরির আশঙ্কা ইত্যাদি তো ছিলোই। অবশেষে আজ সকাল ৮টার পরে কাউন্টার খুললে ৮-১০জনের পরে তারা টিকিট পান। এমনি অসংখ্য যাত্রী ২০-৩২ ঘন্টার অসীম ধৈর্যের পরীক্ষার পরে টিকিট পেয়ে রেলের ওপর এ অব্যস্থাপনার জন্য অভিযোগ জানিয়েছেন।

এদিকে সোমবার যেসব ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেছে তার মধ্যে ১০-১২টি ট্রেনের সিডিউল ঠিক ছিল না। এসব ট্রেন কোনটি ১ ঘন্টা অঅবার কোনটি ৩০ মিনিট দেরিতে ছেড়েছে। যাত্রীরা মনে করছেন বিগত কয়েক বছরের মত ঈদ যাত্রার কয়দিন অর্থাৎ ৫-৯ জুলাই পর্যন্ত ট্রেন আসলে যাবে এমন পদ্ধতিতে চলবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে যাত্রীদের। আর বিনা টিকিটের যাত্রীদের জন্য টিকিট ধারী যাত্রীরা ট্রেন উঠতে পারবে কিনা তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নারী যাত্রীরা। যদিও রেলওয়ে বলছে এবারে কমলাপুর মুখি ঈদ ট্রেনগুলো বিমান বন্দরে স্টপেজ না দেয়ায় বিনা টিকিটের যাত্রীরা উঠতে পারবে না। সবাইকে লাইন ধরে কমলাপুর থেকে উঠতে হবে। সেক্ষেত্রে টিকিটের যাত্রীরা নির্বিঘ্নে যাত্রা করতে পারবেন।

এসব বিষয়ে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, আসলে আমাদের টিকিট দেবার সক্ষমতা কম, তার তুলনায় টিকিটের চাহিদা কয়েকগুণ। সেজন্য সবাই টিকিট পাচ্ছেন না। আবার অনলাইনে বা এ্যাপস খোলার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। আর ঈদের আগে পরে সিডিউল বিপর্য়য় এড়াতে রেলওয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, যাতে এবারে সিডিউল ঠিক থাকবে এবং সময়মত ট্রেন ছাড়বে বলে জানান মন্ত্রী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App