×

সারাদেশ

সিলেটে ধীরে নামছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২২, ০৮:৩৬ এএম

সিলেটে ধীরে নামছে পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

জুনের ১৬ তারিখ থেকে শুরু হওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় নাকাল সিলেট ও সুনামগঞ্জবাসী। টানা ভারি বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢলে জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার অধিকাংশ এলাকা। একই সঙ্গে বন্যাকবলিত হয়েছিল সিলেট মহানগরীর অন্তত ১৬টি ওয়ার্ড।

গত ২৮ জুন থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসায় সে পরিস্থিতি অনেকটা উন্নতি হয়েছিল। মানুষজনও আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাত থেকে আবারো বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকায় সিলেটের প্রধান নদনদীগুলোতে পানি বাড়তে থাকে। গত দুদিন বাড়ার পর গতকাল শুক্রবার থেকে আবার কমতে শুরু করেছে সুরমা নদীর পানি। ফলে সিলেটের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বন্যার্তদের দুর্ভোগ।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল, যা আগের দিনের চেয়ে ১১ সেন্টিমিটার কম। একই সময়ে সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে সুরমা, যা আগের দিনের চেয়ে ৭ সেন্টিমিটার কম।

গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত পুর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় সিলেটের অন্যতম প্রধান নদী কুশিয়ারার পানি আমলসিদ, শ্যাওলা ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে যথাক্রমে ৮, ৬, ১ সেন্টিমিটার কমেছে। তবে এখনো এই তিনটি পয়েন্টেই বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে কুশিয়ারা। এছাড়া কোম্পানীগঞ্জের ধলাই, কানাইঘাটের লোভা ও গোয়াইনঘাটের সারি নদীর পানিও কমছে খুবই ধীরগতিতে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির খুব একটা উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

সরজমিন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, দুদিনের পানি বৃদ্ধির ফলে নতুন করে আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন অনেকে। পানি কমতে থাকার পরও ফেরার তাগিদ নেই তাদের। কোম্পানীগঞ্জের ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের শিমুলতলা আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা সাইদুর রহমান বলেন, বন্যায় বাড়িঘর ভেঙে সবকিছু ভেসে গেছে। কয়েকদিন অশ্রয়কেন্দ্রে ছিলাম। পানি নেমে যাওয়ায় পাঁচ দিন আগে বাড়ি ফিরে অনেক কষ্ট করে থাকার ঘরটি কোনো রকমে মেরামত করেছিলাম। তবে আবারো পানি বেড়ে ঘরের মধ্যে ঢুকেছে। পানি বাড়তে থাকায় পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে আবার আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছি। এখন আবার পানি নামতে শুরু করেছে। এ অবস্থায় সম্পূর্ণ অনিশ্চিত অবস্থায় আছি। কী করব বুঝতে পারছি না।

ইছাকলস ইউনিয়নের পুটামারা গ্রামের ইউসুফ মিয়া বলেন, বন্যায় আমাদের দুই ভাইয়ের ঘর ভেঙে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ১৫ দিন অন্যের বাড়িতে ছিলাম। পানি কমে যাওয়ায় বাড়িতে গিয়ে ঘর মেরামতের কাজ শুরু করেছিলাম। তবে আবারো পানি বাড়তে থাকায় আশ্রয়কেন্দ্রে ফিরেছি। এখন পানি যেভাবে কমছে তাতে মনে হয় না, খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরতে পারব।

এদিকে সিলেট মহানগরীর যেসব এলাকা থেকে পানি নেমেছিল, সেসব এলাকায় ফের প্লাবিত হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয়রা। নগরীর তেররতন এলাকার মুদি দোকানদার আরফান আহমদ বলেন, পানি নেমে যাওয়ায় দোকান খুলেছিলাম। সবকিছু গুছিয়ে শুরু করার আগেই ফের পানি উঠে গেল। এখন আজ (গতকাল) থেকে পানি কিছুটা কমছে। তবে এত ধীরগতিতে যে, আবারো বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় দোকান খুলতে পারছি না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App