উইম্বলডনে শেষ ষোলোতে হারমনি-জাবেউর
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২ জুলাই ২০২২, ১১:১৬ পিএম
চতুর্থবারের মতো সাফের সভাপতি নির্বাচিত হন কাজী মো. সালাউদ্দিন
হারমনি ট্যান
টেনিস বিশ্বে জনপ্রিয় নাম সেরেনা উইলিয়ামস। সর্বকালের সেরা টেনিসারদের মধ্যে এই আমেরিকান টেনিসার একজন। টেনিসের ডাবলস, একক ও মিশ্র ডাবলস সব বিভাগ মিলিয়ে ৩৯টি গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছেন তিনি। যেখানে এককে ২৩টি গ্রান্ডস্লাম জিতেছেন। যা এখনো পর্যন্ত কোনো পুরুষ টেনিসার পারেনি। সর্বকালের সেরা হওয়ার দৌড়ে ২০টি করে গ্র্যান্ডস্লাম জিতে সমান্তরাল অবস্থানে ছিলেন রজার ফেদার, নোভাক জোকোভিচ ও রাফায়েল নাদাল।
চলতি বছরের শুরুতে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে দুইজনকে ছাড়িয়ে ২১টি গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছে রাফায়েল নাদাল। রেকর্ডের সঙ্গে যার নাম অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িয়ে আছে সেই সেরেনা উইলিয়ামস দীর্ঘ এক বছর পর কোর্টে ফিরে খালি হাতে ফিরেছেন টুর্নামেন্টের শুরুতেই। প্রথম রাউন্ডেই ফরাসি টেনিসার হারমনি ট্যানের বিপক্ষে ৩-১ সেট ব্যবধানে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেছেন। অথচ যার সঙ্গে তিনি হেরেছেন সেই হারমনি ট্যান সেরেনার খেলা দেখতে দেখতেই নিজেকে পরিণত করেছেন। ফ্রান্সের প্যারিসে ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন হারমনি ট্যান। তার জন্মেরও দুই বছর আগে টেনিস কোর্টে অভিষেক হয়েছে সেরেনার। অথচ সেই হারমনি ট্যানের সঙ্গেই প্রায় ৩ ঘণ্টা লড়াই করেও পরবর্তী রাউন্ড নিশ্চিত করতে পারেনি সেরেনা উইলিয়ামস।
এবারই প্রথম উইম্বলডনে খেলতে এসেছেন হারমনি ট্যান। অভিষেক আসরে একের পর এক দাপুটে জয়ের সুবাদে ইতোমধ্যে শেষ ষোলো নিশ্চিত করেছেন। টুর্নামেন্টের নারী এককের তৃতীয় রাউন্ডে শনিবার বিকালে ব্রিটিশ টেনিসার কেটি বোল্টারের বিপক্ষে দাপুটে জয় পেয়েছে হারমনি ট্যান। উইম্বলডনের ঘরের মেয়ে হয়েও ফরাসি টেনিসারের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি কেটি। পরপর দুই সেটেই হারমনি ট্যানের ৬ পয়েন্টের বিপক্ষে মাত্র ১ পয়েন্ট যোগ করার সুযোগ পেয়েছে কেটি। এই জয়ের সুবাদে অভিষেক আসরেই শেষ ষোলোতে পৌঁছে গেছেন হারমনি ট্যান। অপরদিকে, উইম্বলডনে এবার জাবেউরের নৈপুণ্যে সবাই মুগ্ধ। প্রথম তিন রাউন্ডেই প্রতিপক্ষদের উড়িয়ে দিয়েছেন সরাসরি সেটে। প্রথম পর্বে সুইডেনের মিরয়াম বোর্কলান্ড তার সামনে দাঁড়াতেই পারেননি, ৬-৩ এবং ৬-১ সেটে তাকে ধরাশায়ী করেন তিনি। দ্বিতীয় রাউন্ডে পোল্যান্ডের কাতার্জিনা কাওয়াকে ৬-৪ এবং ৬-০ সেটে পরাস্ত করেন জাবের। তৃতীয় রাউন্ডে ফ্রান্সের ১৯ বছর বয়সি দায়ান প্যারিকেও সরাসরি সেটে কাবু করেছেন এই তিউনিশিয়ান তারকা। প্রথম সেট ৬-২ ব্যবধানে জেতেন, দ্বিতীয় সেটে জয় আসে ৬-৩ ব্যবধানে। প্যারিকে হারিয়ে শেষ ষোলোয় পৌঁছে গেছেন গত বছর উইম্বলডনে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা জাবেউর। এবার লক্ষ্য তার ক্যারিয়ারের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম শিরোপা ছুঁয়ে দেখার। শেষ ষোলোতে বেলজিয়ামের এলিস মার্টেনসের মুখোমুখি হবেন তিনি। আসরের তৃতীয় বাছাই জাবের।
উইম্বলডনের প্রতিটি রাউন্ডেই অত্যন্ত দাপটের সঙ্গে নিজেকে প্রমাণ করে যাচ্ছেন নোভাক জোকোভিচ। প্রথম রাউন্ডে জোকোভিচের বিপক্ষে দক্ষিণ কোরিয়ান কিওন সুন-উই যা একটু প্রতিরোধ গড়তে পারলেও পরবর্তী দুই রাউন্ডে অস্ট্রেলিয়ান থানাসি কোকিনাকিস ও স্বদেশী মিওমির কেচমানোভিচকে ম্যাচে দাঁড়াতেই দেননি। দ্বিতীয় রাউন্ডে থানাসি কোকিনাকিসকে তিন সেটে ৬-১, ৬-৪ ও ৬-২ পয়েন্ট ব্যবধানে হারিয়েছেন। এরপর তৃতীয় রাউন্ডে সেন্টার কোর্টে সার্বিয়ান তরুণ কেচনানোভিচকে পাত্তাই দেননি। প্রথম সেটেই বড় ধাক্কা খেয়েছেন মিওমির। স্বদেশী কিংবদন্তির বিপক্ষে কোনো পয়েন্টই পাননি তিনি। এরপরের দুই সেটে কিছুটা হলেও প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন। তবে জোকোভিচ ৩৫ বছরের জোকোভিচের অভিজ্ঞতার কাছে পরাজিত হয়েছেন দুই সেটেই। দ্বিতীয় সেট ৬-৩ এবং তৃতীয় সেট ৬-৪ ব্যবধানে জিতে শেষ ষোলোয় নিজের নাম লিখিয়েছেন নোভাক জোকোভিচ। ২১তম গ্র্যান্ডস্লাম জয়েল পথে শেষ ষোলোতে ডাচ তারকা রিথোভিনের বিপক্ষে মাঠে নামবেন তিনি। পুরুষ একক থেকে দাপুটে জয়ে শেষ ষোল নিশ্চিত করেছেন স্প্যানিশ সেনসেশন কার্লোস আলকারাজ গারফিয়াও।
তৃতীয় রাউন্ডে জার্মানির অস্কার ওট্টেকে ৬-৩, ৬-১ এবং ৬-১ গেমে ধরাশায়ী করেছেন তিনি। উইম্বলডনে এবার প্রথম রাউন্ডেই বেশ পরীক্ষা দিতে হয়েছে কার্লোসকে। জার্মান টেনিসার জ্যান লেনার্ড স্ট্রফের বিপক্ষে ৫ সেট লড়াই করতে হয়েছে। প্রতিটি সেটেই উভয় টেনিসার নিজেদের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছেন। প্রথম সেটে গার্ফিয়া হেরে যায়। স্প্যানিশ এই তরুণ টেনিসারকে ৪ পয়েন্টে রেখেই কাক্সিক্ষত ৬ পয়েন্ট অর্জন করে স্ট্রফ। এরপর দ্বিতীয় সেটেও ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিল স্ট্রফ। কিন্তু গারফিয়া এই সেটে ৭-৫ পয়েন্ট ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করে সমতায় ফিরে। এরপর তৃতীয় সেটে জয় নিশ্চিত করে আবারো লিড পেয়ে যায় স্ট্রফ। এরপর ম্যাচ নির্ধারনী সেট গড়ায় টাইব্রেকারে। এই সেট স্ট্রফ জিতে নিলে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিত গারফিয়া। কিন্তু সেখানে দক্ষতা ও নৈপুন্যের সঙ্গে ৭-৬(৭-৩) পয়েন্ট ব্যবধানে আবারো সমতায় ফিরে। দুই প্রান্তে থাকা দুইজনই ২-২ ব্যবধানে সমতায় অবস্থান করছে। তাই পঞ্চম সেট হয়েছে পূর্ণাঙ্গ সেট নির্ধারণী ম্যাচ। এই সেটকে যে নিজের করে নিতে পারবে সে-ই উইম্বলডনের দ্বিতীয় রাউন্ডের পদার্পণ করার সুযোগ পাবে। এরকম বাঁচামরার সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে স্ট্রফকে ৬-৪ ব্যবধানে হারিয়ে শেষ হাসি হাসেন কার্লোস আলকারাজ গারফিয়া। এরপর দ্বিতীয় রাউন্ডে ট্যালন গ্রিকপুরের বিপক্ষে ৩-০ সেট ব্যবধানে জয় নিয়ে তৃতীয় রাউন্ড নিশ্চিত করেছিলেন গারফিয়া।