×

শিক্ষা

ঢাবির হলগুলোতে বাড়ছে চুরি, উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীরা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২২, ০৭:২১ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) হলগুলোতে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে চুরির সংখ্যা। কিছু দিন পরপর হলগুলোতে ঘটছে এসব চুরির ঘটনা। শিক্ষার্থীদের কাপড়, মানিব্যাগ, সাইকেল ও মোবাইলসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক কিছুই চুরি হচ্ছে। গত ৭ দিনে প্রায় ১০টির মতো মোবাইল চুরি হয়েছে। এছাড়াও গত দুমাসে প্রায় পাঁচটির মতো সাইকেল চুরি হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে উদ্বিগ্নতা দেখা গেছে।

সম্প্রতি গত ২৪ জুন(শুক্রবার) ভোর রাতে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের এক্সটেনশন ভবনের ৩০০৭ নং রুম থেকে একসাথে তিনটি মোবাইল চুরি হয়ে যায়। একই দিনে স্যার এ এফ রহমান হলের ১১৫ নং কক্ষ থেকেও তিনটি মোবাইল চুরি হয়। এর আগে ১৬ জুন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের রিডিং রুম থেকে আরেকটি মোবাইল চুরি হয়। এছাড়াও, ২০ মার্চ জহুরুল হক হলের ২৬৯ নং কক্ষ থেকেও আরেকটি মোবাইল চুরি হয়।

এদিকে এপ্রিল মাসে স্যার এ এফ রহমান হল ও জহুরুল হক হল থেকে দুটি সাইকেল চুরি হয়। পরবর্তী সময়ে সিসিটিভির ফুটেজে চোরদের শনাক্ত করা সম্ভব হলেও তাদের ধরা যায়নি। এর বাইরেও কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে ও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থান থেকে সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। হলে চুরির ঘটনাগুলো সাধারণত ভোর রাত বা সকালের দিকে ঘটছে। এছাড়াও বিশেষত পলিটিক্যাল রুম, গণরুম বা যেসব রুমে অনেক শিক্ষার্থী থাকেন সেখানেই চুরির ঘটনাগুলো বারবার ঘটছে। এর বাইরেও হলগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়া ও পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকার বিষয়কে দায়ী করছেন শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ৩০০৭ নং কক্ষের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমাম হোসেন শিহাব বলেন, সাধারণত পলিটিক্যাল রুম, গণরুম থেকে মোবাইলগুলো চুরি হচ্ছে। কারণ এসব রুমে অনেকেরই প্রবেশাধিকার থাকে। কে কোন সময়ে আসছে বা বের হচ্ছে সেটা কেউ সেভাবে খেয়াল করেনা। এটার সুযোগ নেয় চোর। এছাড়াও ভোর রাত বা শুক্রবারে চুরির ঘটনাগুলো ঘটে। কারণ শুক্রবারে অনেকেই লম্বা ঘুম দেয়।

মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের শিক্ষার্থী রাজু শেখ বলেন, হলগুলোতে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা না থাকা বা হল গেইটে বহিরাগতদের নিবন্ধন না করে প্রবেশাধিকার দেওয়া চুরি বাড়ার অন্যতম কারণ। প্রশাসনকে এ বিষয়ে আরো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।

চুরির বিষয়ে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুর রহিম বলেন, চুরির ঘটনা বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের একটি বিষয়। আমরা হলের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে জোর তাগিদ দিচ্ছি। চোর শনাক্ত হলে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিজেদেরও সচেতন হতে হবে। দামি মোবাইল ও মানিব্যাগ নিজ দায়িত্বে রাখার আহ্বানও জানান তিনি।

হলগুলোতে চুরি বাড়লেও হল প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটি থেকে চুরি ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির বলেন, আমাদের কাছে এরকম কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত আসেনি। যদি কোনো প্রাধ্যক্ষ হলের বিষয়ে নিরাপত্তাহীনতা মনে করেন তাহলে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটিতে জানাবেন এবং আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব। মূলত এই ধরনের বিষয়গুলো হলের প্রাধ্যক্ষই দেখভাল করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক নিরাপত্তা ও চুরির বিষয়ে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যসচিব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড এ কে এম গোলাম রব্বানী বলেন, আমাদের ক্যাম্পাস যেহেতু উন্মক্ত ফলে এখানে নানাধরনের দুষ্টু লোক বা চক্রের আনাগোনাকে অস্বীকার করা যাবেনা। ইদানীং চুরির ঘটনাগুলো বেশি ঘটছে। গত দুদিনে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ও ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ হল থেকে দুজন মোবাইল চোরকে ধরা হয়েছে। হলের সমস্ত বিষয় হল প্রাধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রণাধীন। তবে এ বিষয়ে কোনো সাহায্য লাগলে আমরা প্রস্তুত আছি।

চুরি বন্ধে তিনি শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত সচেতনতা বৃদ্ধি, অপরিচিত ও সন্দেহজনক কাউকে দেখলে প্রক্টরিয়াল টিম বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অবহিত করার আহ্বান জানান। এতে চুরি কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App