×

খেলা

খালিদের জোড়া আঘাতে দিশেহারা উইন্ডিজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২২, ১০:১৪ পিএম

খালিদের জোড়া আঘাতে দিশেহারা উইন্ডিজ

ক্যাম্পবেলকে আউট করে শান্তর সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করছেন পেসার শরিফুল ইসলাম

সেন্ট লুসিয়ায় দ্বিতীয় টেস্টে শুক্রবার প্রথম দিন ভালো যায়নি সাকিব বাহিনীর। ব্যাটিং বিপর্যয়ের কবলে পড়ে দিনের দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সময় ব্যাট করতে পারেনি। ব্যাটিংয়ের দিক থেকে উল্লেখযোগ্য ইনিংস খেলেছেন লিটন দাস। ৭০ বলে ৮ চারের সাহায্যে করেন ৫৩ রান। তামিম ইকবালও ভালো শুরু করেছিলেন। কিন্তু হাফসেঞ্চুরির জন্য ৪ রানের আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হয়েছে তাকে।

টাইগারদের ২৩৪ রানে গুটিয়ে দিয়ে ব্যাট করতে নেমে শনিবার দ্বিতীয় দিনে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রান তুলেছে ক্যারিবিয়ানরা। এখনো ১০১ রানে পিছিয়ে রয়েছে স্বাগতিকরা। প্রথম দিন শুরু থেকে যেখানে ক্যারিবীয় পেসাররা দাপটের সঙ্গে একের পর এক উইকেট তুলে নিয়েছে সেখানে টাইগার পেসাররা প্রথম দিন ১৬ ওভার বল করার সুযোগ পেয়েও পুরোপুরি উইকেটশূন্য ছিল। উল্টো ক্যারিবীয় দুই ব্যাটার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও ক্যাম্পবেল টাইগার পেসারদের ওপর চড়া হয়ে খেলেছেন। দিনের শেষ সেশনের ব্যাট করতে নেমে ১৬ ওভারে বিনা উইকেটে স্কোরবোর্ডে যোগ করেছে ৬৭ রান। ১৬৭ রানে পিছিয়ে থেকে শনিবার দ্বিতীয় দিন ব্যাট হাতে দাপুটে জবাব দেয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছিল স্বাগতিকরা।

স্কোরবোর্ডে আরো ৩৩ রান যোগ করতেই ক্যারিবীয় শিবিরে প্রথম আঘাত হানে তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের ২৬তম ওভারের শেষ বলে শরিফুলের সুইংয়ে পরাস্ত হলে ক্যাম্পবেলের ব্যাটের কানায় লেগে বল চলে যায় উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে। সাজঘরে ফেরার আগে ৬ চারের সাহায্যে ব্যক্তিগত ৪৫ রান করেন জন ক্যাম্পবেল। এর পর হাফ সেঞ্চুরিয়ান ব্র্যাথওয়েটকে সাজঘরের পথ ধরান স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। এর পর ক্যারিবিয়ান শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন পেসার খালিদ আহমেদ। রেমন এবং বোনারকে আউট করে টাইগার শিবিরে স্বস্তি ফিরিয়ে আনেন।

এর আগে সেন্ট লুসিয়ায় টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ১০ ওভার মোটামুটি সেট হয়ে গিয়েছিল দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসান জয়। তবে ১৩তম ওভারে মাহমুদুল হাসান জয় আউট হওয়ার পর নিয়মিত বিরতিতে সাজঘরে ফেরা শুরু করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। প্রথম সেশনে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল হাসানকে হারিয়ে ৭৭ রান তোলে বাংলাদেশ। ১৩তম ওভারের দ্বিতীয় বলেই অভিষিক্ত অ্যান্ডারসন ফিলিপের ক্যারিয়ারের প্রথম উইকেটের শিকার হন মাহমুদুল হাসান জয়। এরপর মধ্যাহ্ন বিরতির ঠিক আগ দিয়ে আলজারি জোসেফের বলে আলগা শটে আউট হওয়ার আগে দাপুটে ব্যাটিং করেন তামিম ইকবাল। ৯ চারের সাহায্যে ৪৬ রান সংগ্রহ করে ৪ রানের আক্ষেপ নিয়ে সাজঘরে ফিরেছেন তিনি। দ্বিতীয় সেশনে বাংলাদেশের ব্যাটিং ফেরে পুরনো চেহারায়। নাজমুল হোসেন ও আট বছর পর টেস্টে ফেরা এনামুল হক দুজনই আস্তে আস্তে থিতু হচ্ছিলেন। তবে দুর্ভাগ্যবশত আম্পায়ার্স কলের কবলে পড়েন দুজনই। ফিলিপের বলে এনামুলের নেয়া রিভিউয়ে ইমপ্যাক্ট ছিল আম্পায়ার্স কল। কাইল মায়ার্সের বলে আউট হওয়া শান্তও আম্পায়ার্স কলের শিকার হন। সাজঘরে ফেরার আগে নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ২৬ রান ও মুমিনুল হকের বদলে আসা এনামুল হক বিজয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ২৩ রান।

মাত্র ৮ বলের ব্যবধানে দলীয় ১০৫ রানে উপর্যুপরি দুই উইকেট পড়ার পর উইকেট ধরে রাখতে পারেননি অধিনায়ক সাকিব আল হাসানও। স্কোরবোর্ডে ২০ রান যোগ হতেই সাজঘরের পথ ধরেন তিনিও। সিলসের অফ স্টাম্পের বাইরের বল স্টাম্পে ডেকে আনেন সাকিব। এরপর নুরুল হাসান সোহানও ফিরেছেন ব্যক্তিগত ৭ রানে। জোসেফের বাউন্সে পরাস্ত হয়ে জশুয়া ডি সিলভার হাতে ক্যাচ তুলে দেন সোহান। ১৩৮ রানে ৬ উইকেট হারানো বাংলাদেশ এরপরও ২৩৪ পর্যন্ত যেতে পারে লিটন দাসের অর্ধশতক ও টেল-এন্ডে শরিফুল ইসলাম ও ইবাদত হোসেনের ব্যাটিংয়ে ভর করে। ৬৬ বলে ক্যারিয়ারের ১৪তম অর্ধশতক পূর্ণ করা লিটন জোসেফের শর্ট লেংথের বল তুলে মারতে গিয়ে মিড-অনে ধরা পড়েন।

ক্যারিবীয়দের এরপর হতাশ করেন শরিফুল ইসলাম ও ইবাদত হোসেন। ১৭ বলে ৫ চারে ক্যারিয়ার সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন শরিফুল। সিলসকে তুলে মারতে গিয়ে শরিফুল ফিরলে ভাঙে দুজনের ৩২ রানের জুটি। এরপর খালেদ আহমেদ অবশ্য খুব বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি ইবাদতকে, সিলসের তৃতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি। ইবাদত অপরাজিত থাকেন ৩৫ বলে ২১ রান করে, মারেন ৩টি চার। শুধু টেস্ট নয়, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি ইবাদতের সর্বোচ্চ স্কোর।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App