×

জাতীয়

যে সকল রেকর্ড গড়লো পদ্মা সেতু

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২২, ০৬:২০ পিএম

সগৌরবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে পদ্মা সেতু। অথচ এই সেতু নির্মাণে ব্যর্থ হবে সরকার- এমন বক্তব্যও ছড়িয়েছিল। কেবল তাতেও সীমিত ছিলোনা নির্মাণাধীন সময়ে ‘মাথা কাটা’সহ নানা গুজবও চলেছে। প্রশ্নতোলা হয়েছিলো আমাজন নদীর পর দ্বিতীয় খরস্রোতা নদী পদ্মায় সেতু নির্মাণ কতটা চ্যালেঞ্জিং হবে। অবশেষে সফল হলো সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায়।

গোটা বিশ্বের বিস্ময়ের বিষয় এমন খরস্রোতা নদীতে ৬.১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের সেতু কীভাবে নির্মাণে সফল হলো বাংলাদেশ? তাও দাতাদের সহায়তা না নিয়ে দেশটির জনগণের টাকায়! তবে এখানেই সীমাবদ্ধ নয় পদ্মাসেতুর প্রভাব। এর নির্মাণে বেশ কয়েকটি বিশ্বরেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। নদীশাসন, পাইল ও বিয়ারিংয়ের ব্যবহারে পদ্মা সেতু গড়েছে বিশ্বরেকর্ড। সেতু বিভাগ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-

  • পদ্মা সেতু তৈরির আগে নদীশাসনসংক্রান্ত কাজ বিস্ময় ছড়িয়েছে বিশ্বে। এ সেতু স্থাপনে ও রক্ষায় ১৪ কিলোমিটার (১.৬ কিলোমিটার মাওয়া প্রান্তে ও ১২.৪ কিলোমিটার জাজিরা প্রান্তে) এলাকা নদীশাসনের আওতায় আনা হয়েছে। এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকারও বেশি। পদ্মা নদী এমনিতেই খরস্রোতা। এর দুই পাড় অনবরত ভাঙনের শিকার। ভাঙনসহ নানা কারণে পদ্মা সেতু যাতে করে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্যই নদীশাসন করা হয়েছে।
  • পদ্মা সেতু নির্মাণে পিলারের ওপর স্প্যান বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রেন ব্যবহার করা হয়েছে, যা একটি বিশ্বরেকর্ড। ক্রেনটি চীন থেকে আনা হয়। এর ভাড়া গুনতেও রেকর্ড গড়া হয়েছে। প্রতি মাসে এর ভাড়া বাবদ গুনতে হয়েছে ৩০ লাখ টাকা। সাড়ে তিন বছরে মোট খরচ হয়েছে ১২ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বিশ্বে প্রথম কোনো সেতু তৈরিতে এত দীর্ঘ সময় ক্রেনটি ভাড়ায় থেকেছে।
  • খরস্রোতা যে কোনো নদীতে সেতু নির্মাণে পাইলিং গভীর হতে হবে, অন্যথায় সেতু টিকবে না। আর পানি প্রবাহের বিবেচনায় বিশ্বে আমাজন নদীর পরই পদ্মার অবস্থান। সে ক্ষেত্রে এ সেতুর পাইলিং যতটা গভীরে নেওয়া যায়। প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, পদ্মা সেতুতে মাটির ১২০ থেকে ১২৭ মিটার গভীরে গিয়ে পাইল বসানো হয়েছে। পৃথিবীর অন্য কোনো সেতু তৈরিতে এত গভীরে গিয়ে পাইল প্রবেশ করাতে হয়নি। এটি একটি বিশ্বরেকর্ড।
  • রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে টিকে থাকবে পদ্মা সেতু। এর অন্যতম কারণ এই সেতুতে ব্যবহৃত ‘ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং’-এর সক্ষমতা ১০ হাজার টন। এখন পর্যন্ত কোনো সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং লাগানো হয়নি। এটি আরেকটি বিশ্বরেকর্ড।
  • পদ্মা সেতু নির্মাণে কংক্রিট এবং স্টিল উভয়ই ব্যবহার করা হয়েছে। বিশ্বে আর কোনো সেতু নির্মাণে কংক্রিট এবং স্টিল একসঙ্গে ব্যবহার করা হয়নি। অর্থাৎ সেতুগুলো হয় কংক্রিটে নির্মিত, নাহয় স্টিলের।
  • পদ্মা সেতুর আরেকটি বিষয় চমকপ্রদ। তা হচ্ছে মাইক্রো ফাইন সিমেন্টের ব্যবহার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App