×

জাতীয়

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ জুন ২০২২, ০৯:২৩ পিএম

সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে ঢাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ

দেশের বিভিন্নস্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপরে হামলা, মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং জায়গা-জমি দখলের চেষ্টার চিত্র তুলে ধরে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে হামলা ব্যাপক রূপ লাভ করেছে। বিশেষ করে পদ্মাসেতু উদ্বোধনের আগে সাম্প্রদায়িক হামলা বেড়ে যাওয়াকে নতুন ষড়যন্ত্র বলে অভিহিদ করেছেন তারা। এই হামলা ঠেকাতে রাজনৈতিক নেতৃত্ব যেমন এগিয়ে আসেনি, তেমনি প্রশাসনও কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি। এরফলে সাম্প্রদায়িক শক্তি দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। এ অবস্থা চলতে পারে না বলে তারা বক্তব্যে বলেছেন।

সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেছেন, সম্প্রতি বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়নে রামেরকাঠী গ্রামে সাম্প্রদায়িক উস্কানি সৃষ্টি করে মৌলবাদীদের হামলা এবং তা নিরসনের অজুহাতে শচীন বাড়ৈ নামে একজন সংখ্যালঘুকে পুলিশের গ্রেপ্তার, কক্সবাজার জেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নে হিন্দুপাড়ায় হামলা চালিয়ে নয়ন শীলকে গুরুতর আহত, বাগেরহাটের চিতলমারীতে হিন্দুদের বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ, ঠাকুরগাওঁয়ের পীরগঞ্জে ৬ জন পুরুষ ও ২জন মহিলাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত এবং খুলনার দাকোপে স্কুল শিক্ষক মনোজ মাষ্টারকে নারকীয় কায়দায় মৌলবাদীদের হামলাসহ সকল সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠনের উদ্যোগে এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ্মাবতী দেবী ও বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দিপালী চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনিন্দ্র কুমার নাথ বলেন, এ ধরণের অত্যাচার, নির্যাতন চলতে থাকলে মানবতা কোথায় যাবে? ধর্মকে ঢাল করে দিনের পর দিন এমন অত্যাচারের পরেও রাষ্ট্র কোথায় থাকে? প্রেসিডিয়াম সদস্য মিলন কান্তি দত্ত বলেন, পাকিস্তান ঘোষিত মুসলিম দেশ হওয়া সত্ত্বেও মন্দিরে হামলার পর সেখানে বিচার হয়েছে। অথচ আমাদের দেশ অসাম্প্রদায়িক, তবু আমাদের ওপরে নির্যাতনের কোনো বিচার হয়নি। যুগ্ম সম্পাদক এডভোকেট তাপস পাল বলেন, আর কদিন পরে পদ্মাসেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। ওই ইস্যুতে ষড়যন্ত্র করে না পেরে আমাদের হিন্দুদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে। আমরা মনে করি পদ্মাসেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে কলঙ্কিত করতেই ওরা হিন্দুদের ওপর রাজনৈতিক সাম্প্রদায়িক হামলা করছে। তবে যে দলের লোকরাই এসব করুক না কেন, আমরা তাদের ওপর নজর রাখছি।

এখন প্রতিবাদ করছি, কদিন পর থেকে প্রতিরোধ শুরু করব। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি জয়ন্ত কুমার সেন দীপু বলেন, পদ্মা সেতু নিয়ে সকলেই আনন্দিত হলেও আমরা খুব একটা আনন্দিত নই। কারণ সেতু উদ্বোধনের পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে হিন্দুদের জমির ওপর দখলবাজদের নজর পড়বে। তারপর হামলা-নির্যাতন করে সেখানকার হিন্দুদের দামি জমি দখল করতে চাইবে। এতে সেখানকার হিন্দুরা আরেকদফা নির্যাতনের শিকার হবে। বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি অমিতাভ ঘোষাল বলেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আগে হিন্দুদের ওপর এমন নারকীয় হামলা নতুন এক ষড়যন্ত্রের লক্ষণ। শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মৃণাল কান্তি দাস প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের অন্তত একটি বিচার করুন। আইনজীবি ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুনীল বিশ্বাস বলেন, বিচারহীনতার কারণে নির্যাতন বাড়ছে। যদি একটি নির্যাতনেরও বিচার হত তাহলে আমরা অন্তত শান্তিতে থাকতে পারতাম।

বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য বলেন, যে ঘটনাগুলো ঘটছে তার অন্তত তদন্ত করে বিচার করুন। আমরা বাঙ্গালি হিসেবে বাঁচতে চাই, আমরা চাই সহাবস্তান। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম মেম্বার এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক নির্ম্মল চ্যটার্জি, কিশোর মন্ডল, ছাত্র ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব শিপন বাড়াইক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App