×

স্বাস্থ্য

দেশে কী করোনা সংক্রমণের নতুন ঢেউ আসছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২২, ১১:০০ পিএম

সংক্রমণের হার দীর্ঘ সময় ধরে এক শতাংশের নিচে থাকার পর হঠাৎ করে তা কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়া উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নিয়মিত করোনা বিষয়ক বুলেটিনে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে ৪৩৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে শুধু রাজধানীতেই ৩৯৩ জনের শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ছয় দশমিক ২৭ শতাংশ। মাত্র চারদিন আগে এই হার ছিল দুই শতাংশের নিচে।

প্রতিবেশী দেশ ভারতেও গত তিনমাসের মধ্যে শুক্রবার সবচেয়ে বেশি শনাক্ত হয়েছে। এখন দেশটিতে শনাক্তের হার দুই দশমিক পাঁচ শতাংশ। খবর বিবিসির।

আরও পড়ুন : দেশে হু হু করে বাড়ছে করোনা, শনাক্তের হার ৬.২৭

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের সাংহাই, উত্তর কোরিয়া ও ভারতে যে ধরন রয়েছে, সেই ওমিক্রনের একটি উপ-ধরন বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।

সরকারি সংস্থা আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন একে একটি নতুন ঢেউ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, দেশেও সেই নতুন করে একটা সংক্রমণের ঢেউ শুরু হতে শুরু করেছে। তবে এটা এখনও গুচ্ছ সংক্রমণ পর্যায়ে আছে।

তিনি এ সময় আশঙ্কা করেন যে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই সংক্রমণ আরও অনেক বাড়বে। তিনি বলেন, আমরা জানি না যে এটা নতুন কোনো ধরন কিনা, তবে মনে হচ্ছে যে এটা ওমিক্রন ধরন একটা উপ-ধরন বিএ-৪, বিএ-৫ দ্বারা হচ্ছে।

তবে করোনাভাইরাস মোকাবেলা বা সংক্রমণ কমানোর অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের রয়েছে উল্লেখ করে মুশতাক হোসেন বলেন, এই সংক্রমণের ফলে অতিরিক্ত ভয়ের কোন কারণ নেই। যে উপ-ধরনের কথা বলা হচ্ছে সেটি ওমিক্রন ধরন সংক্রমণের গতির তুলনায় বেশি গতিসম্পন্ন। কারণ অতি দ্রুত এটি অনেক মানুষকে আক্রান্ত করতে পারে।

ছয়টি বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ

করোনার নতুন ঢেউ স্বাস্থ্যের ওপর কতখানি প্রভাব ফেলতে পারে সে ক্ষেত্রে এখনো খুব একটা পার্থক্য দেখা যাচ্ছে না। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় গত মঙ্গলবার (১৪ জুন) করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সরকারের জাতীয় কারিগরি কমিটি বৈঠক করে সরকারকে ছয়টি বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন।

এর মধ্যে রয়েছে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলো এবং জনসমাগম বর্জন করা। কমিটির প্রধান মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ বলেন, অতি অল্প সময়ে সংক্রমণের হার ছয় শতাংশ ছাড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি অবশ্যই উদ্বেগের।

তিনি মনে করেন, নতুনভাবে সাবধানতা অবলম্বনের এখনই সময়।

মোহাম্মদ সহিদুল্লাহ বলেন, তিনটি জিনিস যদি আমরা অবলম্বন করি তাহলে এক ধরনের ফলাফল পাবো। তিনটি জিনিস অবলম্বন না করলে আরেক ধরনের ফলাফল পাবো। একটি হলো আবারও স্বাস্থ্যবিধি মানা, যারা করোনা টিকা নিয়েছেন তাদের বুস্টার ডোজ নেয়া এবং যারা বুস্টার ডোজ নিয়েছে তাদের সতর্ক থাকা।

তবে করোনাভাইরাস সংক্রান্ত দুটি গবেষণাও জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি। এর মধ্যে একটি হচ্ছে মানুষ নতুন কোনা উপ-ধরনে আক্রান্ত হচ্ছে কিনা তা খতিয়ে দেখা এবং আরেকটি হচ্ছে, মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেছে বলে আমরা যে ধারণা করছি তা কতটুকু বাস্তবসম্মত। এই কাজগুলো সুচারুভাবে সম্পন্ন করা গেলে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সব খোলা রাখা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি।

‘এখনও মৃত্যু দেখা যায়নি এটাই স্বস্তির জায়গা’

করোনা শনাক্তের সংখ্যা বাড়লেও এই রোগে বাংলাদেশে গত এক সপ্তাহে কেউ মারা যায়নি। আর গত একমাসে মারা গেছে চারজন। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট বা আইইডিসিআরের পরিচালক ডা. তাহমিনা শিরিন বলেন, এটাই তাদেরকে কিছুটা স্বস্তি রাখছে।

তিনি বলেন, কোন নতুন ধারা এল কিনা সেটা বোঝার ব্যাপার আছে। তার সংক্রমণ কেমন হবে সেটা বোঝারও ব্যাপার আছে। এটা এখনই বলে দেয়া যাবে না তবে এখনো পর্যন্ত মৃত্যু দেখা যায়নি, এটা একটা স্বস্তির জায়গা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App