×

শিক্ষা

ঢাবির গবেষণা খাতে বরাদ্দ সম্মানের নয়: অধ্যাপক শফিউল আলম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২২, ১১:১৮ এএম

ঢাবির গবেষণা খাতে বরাদ্দ সম্মানের নয়: অধ্যাপক শফিউল আলম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেটের বার্ষিক অধিবেশন ২০২২-এর চলাকালীন সময়ের একটি মুহূর্ত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গবেষণা খাতে ১৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখে বাজেট ঘোষণা করাকে ‘সম্মানের নয়’ বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সদস্য অধ্যাপক ড. এজেএম শফিউল আলম ভুইয়া।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) সিনেটের বার্ষিক অধিবেশনে সিনেট সভাপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমদের বক্তব্যের উপরে আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

২০২২-২৩ অর্থবছরে গবেষণা খাতে ১৫ কোটি পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ রেখে বাজেট ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট বাজেট ৯২২ কোটি ৪৮ লাখ টাকার এক দশমিক ৬৩ শতাংশ।

গবেষণা খাতে এমন বরাদ্দকে ‘সম্মানের নয়’ বলে উল্লেখ করে শফিউল আলম ভুইয়া বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় বরাদ্দ ১ দশমিক ৬৩ শতাংশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক হিসেবে এবং প্রাক্তন গ্রাজুয়েট হিসেবে আমার জন্য খুব বেশি সম্মানের হয় না। এদিকে আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করা দরকার। কারণ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যদি গবেষণা না করেন, তাহলে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে কাঙ্খিক্ষত মানে নিতে পারবো না।

এসময় বিশ্ববিদালয়ের গবেষণা ক্ষেত্রে উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু প্রস্তাবনাও তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরে দু’টি সিমেস্টার পরিচালিত হওয়ায় শিক্ষকদের সারা বছর ক্লাস নেওয়া, পরীক্ষার খাতা দেখাসহ নানান কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। ফলে তারা গবেষণা করতে পারেন না। এর প্রেক্ষিতে বছরে তিনটি সিমেস্টার চালুর প্রস্তাবনা দেন তিনি। ইউরোপ এবং আমেরিকার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, সেখানে চার মাস করে তিন সিমেস্টারে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হয়। একজন শিক্ষক সর্বোচ্চ দুই সিমেস্টার ক্লাস নেন, বাকি সময় গবেষণা, লেখালেখি, ফিল্ড-ওয়ার্কে ব্যয় করেন। নর্থ আমেরিকায় খাতা দেখার কাজ টিচার এ্যাসিস্ট্যান্টরা করে গবেষণার সময় বাড়িয়ে দেন।

সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত এ ডিন বলেন, শিক্ষকেরা যাতে প্রতিবছর আন্তর্জাতিক মানের রির্সাচ সেমিনারে অংশ নিয়ে তাদের প্রবন্ধ উপস্থাপন করতে পারেন, এর সম্পূর্ণ খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করতে পারে। এছাড়াও এমফিল ও পিএইচডি তত্ত্বাবধানের জন্য শিক্ষকদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধির প্রস্তাব দেন তিনি। গবেষণার জন্য ১০০ কোটি টাকার তহবিল তৈরির উদ্যোগ জোরদার করার কথাও বলেন এ অধ্যাপক।

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয় বৃদ্ধির চেয়ে সরকারের কাছ থেকে তহবিল আনার ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার যাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে এর জন্য বিশেষ বরাদ্দ রাখে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সরকারকে এ ব্যাপারে প্রস্তাব দেওয়া যেতে পারে।

অধ্যাপক শফিউল আলম ভুইয়া বলেন, হলগুলোতে বিশৃঙ্খলার অন্যতম বড় কারণ হচ্ছে শিক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত আসন না থাকা। অনেক শিক্ষার্থী হলে থাকতে পারে না। সেক্ষেত্রে পূর্বাচলে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মিতব্য দ্বিতীয় ক্যাম্পাস) আরও কয়েকটি হল নির্মাণ করা যেতে পারে।

আগামী বছর থেকে চার ইউনিটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার যে সিদ্ধান্ত তার সমালোচনা করেন অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভুইয়া। তিনি বলেন, এতে কলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক ধরনের বৈষম্যের শিকার হবে। এক্ষেত্রে অন্যান্য বিভাগের শিক্ষার্থী দুটি পরীক্ষা দিতে পারলেও কলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা পারবে একবার।

এছাড়াও শিক্ষকদের পদোন্নতির জন্য পিএইচডি বাধ্যতামূলক-নিয়মটির কার্যকর হওয়ার সময় বর্ধিত করা এবং বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারের সুবিধা বৃদ্ধির কথা বলেন অধ্যাপক ড. শফিউল আলম ভুইয়া।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App