×

জাতীয়

মেট্রোরেলের নিচের রাস্তার সঠিক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব মেয়র আতিকের

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ জুন ২০২২, ০৪:৪৭ পিএম

মেট্রোরেলের নিচের রাস্তার সঠিক ব্যবস্থাপনায় গুরুত্ব মেয়র আতিকের

রাজধানীর আগারগাঁওস্থিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এমআরটি লাইন-৬ এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা সংক্রান্ত সেমিনারে বুধবার বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। ছবি: ভোরের কাগজ

আগামী একশো বছরের জন্য মেট্রোরেলের এর সুফল পেতে হলে সংশ্লিষ্ট বিভাগের সমন্বয়ের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কপোরেশনের (ডিএনসিসির) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

বুধবার (১৫ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এমআরটি লাইন-৬ এর অগ্রগতি ও সম্ভাবনা সংক্রান্ত সেমিনার এবং এমআরটি লাইন-১ এর নিকট লাইসেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।

মেয়র বলেন, মেট্রোরেল চালু হলে এর নিচের রাস্তা, ড্রেন, শাখা রোড, রাস্তার লাইট, পরিবেশ সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করতে হবে। ফুটপাতটা যথেষ্ট প্রশস্ত হতে হবে। তা না হলে সেখানে যাত্রীরা ব্যাগ বা জিনিসপত্র নিয়ে সাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারবে না।

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এবং সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান।

মেয়র আতিক আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কল্যাণে আর মাত্র ১০দিন পরেই স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হবে, ১৮০ দিন পরেই চালু হবে মেট্রোরেল, এবং ৬৯৩৫ দিন পরে উন্নত দেশ হয়ে উঠবে বাংলাদেশ। মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবীক পরিবর্তন আসবে। আমাদের মনে রাখতে হবে মেট্রোরেলকেন্দ্রীক যে জীবনব্যবস্থা ঘরে উঠবে তার সঙ্গে খাপ খাইয়ে আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। স্টেশনকেন্দ্রীক যে অর্থনৈতিক বলয় গড়ে উঠবে তার সঠিক পরিকল্পনা করে জনসাধারণের কাজে লাগাতে হবে।

ডিএনসিসি মেট্রোরেলের সর্বোচ্চ সুফল পেতে পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, মিরপুর ১২ থেকে ফার্মগেট হয়ে বাংলামোটর পর্যন্ত এমআরটি-৬ এর নিচ দিয়ে সাড়ে ১০ কিলোমিটার রাস্তায় বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ডিএনসিসি ইন্টিগ্রেটেড করিডোর ম্যানেজমেন্ট (আইসিএম) প্রকল্প গ্রহণ করতে যাচ্ছে। ২০২৩ সাল থেকে ২০২৬ সালে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। আইসিএম প্রকল্পে রয়েছে: গণপরিবহন অবকাঠামো নির্মাণ, ফুটপাত নির্মাণ, ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা, রোকেয়া সরণিতে বাসের অগ্রাধিকার সুবিধা, বাস-বে, যাত্রী ছাওনি, আধুনিক টিকেট কাউন্টার, এমআরটির সঙ্গে সংযোগ সড়কের উন্নয়ন, ইলেকক্ট্রিক বাস চালু, সাইকেল লেইন, ট্র্যাফিক ফ্লো ব্যবস্থাপনা, ডিজিটাল ট্রাফিক সিগনাল, সেন্ট্রাল ট্র্যাফিক কন্ট্রোল সেন্টার, পার্কিং সুবিধা, জনগণকে রোড ব্যবহারে শিক্ষা প্রদান কার্যক্রম।

ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, তিন সির (কোভিড, জলবায়ু পরিবর্তন, সংঘর্ষ) জন্য পুরো পৃথিবী আজ বিপন্ন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ঢাকা শহরে বিপুল সংখ্যক মানুষ চলে আসছে। যত বেশি কানেকশন আমরা করতে পারবো ততই কিন্তু মানুষ ঢাকা শহরে কাজ সেরে আবার নিজেদের বাড়িতে চলে যাবে।

ঢাকায় নৌযান চলাচলে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, আমাদের ন্যাচারবেসড সলিউশন (প্রাকৃতিক সমাধান) করতে হবে। ঢাকার চারপাশে নদী আছে, শহরের ভিতরে আছে খাল। এগুলোর মাধ্যমে নৌযান চলাচলের ব্যবস্থা করলে যানজট নিরসন হবে।

এমআরটি লাইন-১ বাস্তবায়ন সম্পর্কে ঢাকা উত্তরের মেয়র বলেন, এমআরটি লাইন-৬ এর অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে এমআরটি লাইন-১ নির্মাণের পূর্বে যে বিষয়সমূহ বিবেচনায় রাখা জরুরী সেগুলো হলো: ফুটপাতে পথচারীদের অবাধ চলাচল নিশ্চিত কল্পে ফুটপাতের উপরে কোন অবস্থাতেই এমআরটি লাইন এর ল্যান্ডিং নির্মাণ করা যাবে না, মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করতে হনে এবং ফুটপাতের প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করতে হবে, মেট্রোরেল লাইন নির্মাণ কার্যক্রম শুরু করার পূর্বেই উক্ত এলাকার পানি নিস্কাশনের বিকল্প ব্যবস্থা চালু করতে হবে, ইন্টিগ্রেটেড করিডোর ব্যবস্থাপনা (আইসিএম) এর সংস্থান রাখতে হবে, সকল শাখা সেকেন্ডারী ও টারসিয়ারি সড়ক হতে এমআরটি স্টেশনের একটি কার্যকরী সংযোগ নিশ্চিত করতে হবে, আলোচ্য প্রকল্পের সাথে শুরুতেই ট্র্যানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্টের (টিওডি) সংস্থান রাখতে হবে, এমআরটি প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে সড়কে চলাচলকারী যানবাহন ও পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, জনসাধারণের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করার নিমিত্তে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময়ে সড়ক বাতি সমূহ অবশ্যই সচল রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস বলেন, রাজধানীবাসীর জন্য এমআরটি প্রধানমন্ত্রীর উপহার। এই এমআরটি চালু হলে যানজট অনেকাংশেই কমে যাবে তবে পুরোপুরি কমবে না। ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট করেই আমদের এই যানজট নিরসন করতে হবে। পরিকল্পনা প্রণয়নের সময়েই অংশীজনদের সমন্বয় হলে আরো বেশি সুফল পাওয়া যাবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নান বলেন, আশা করি মেট্রোরেল চালু হলে ঢাকা শহরের যানজট অনেকটা কমে যাবে, দেশবাসীর এর সুফল ভোগ করবে। ঢাকায় ক্রমাগত জনসংখ্যা বেড়েই চলেছে। এর ফলে রাজধানীতে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। ঢাকার দুই মেয়রকে যানজট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানাই। জলাবদ্ধতা সমস্যা সমাধানেও দুই মেয়র কাজ করে যাচ্ছে। আশা করি ঢাকায় জলাবদ্ধতার সমস্যা আর থাকবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App