×

জাতীয়

নারায়ণগঞ্জে অভিযানে গিয়ে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ, আহত ৩০

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ জুন ২০২২, ১২:৫৮ পিএম

নারায়ণগঞ্জে অভিযানে গিয়ে পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ, আহত ৩০

সোমবার সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে পুলিশ ও বিহারী জনতার সংঘর্ষ হয়। ছবি: সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজীতে অভিযানে গিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিহারী জনতার ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে বিহারীদের ওপর লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও শটগানের গুলি করে ছত্রভঙ্গের চেষ্টা করে করে পুলিশ। এতে অন্তত ২৫-৩০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সোমবার (১৩ জুন) ভোরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয়ের সামনে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত বিহারী ক্যাম্পের পকেট গেট এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ হয়েছে।

সকালে বিহারী ক্যাম্পের কয়েকশ’ নারী-পুরুষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে। শুক্রবার জুমার নামাজে আদমজী জামে মসজিদের ভেতর পুলিশ কর্মকর্তার ওপর হামলার ঘটনায় রবিবার দিবাগত রাত একটা থেকে সোমবার ভোররাত চারটা পর্যন্ত বিহারী ক্যাম্পের ভেতর অভিযান চালায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ। অভিযানে ৩৫-৪০ জনকে গ্রেপ্তার, অনেক নারী-পুরুষকে লাঞ্ছিত এবং ঘরের দরজা জানালা ভাঙচুরের অভিযোগ এনেছে বিহারী ক্যাম্পের বাসিন্দারা। এর প্রতিবাদে তারা থানা কার্যালয় ঘেরাও করে। এতে নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাং রোড সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এতে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে আদমজী ইপিজেডে প্রবেশ করতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ে শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা। পরে পুলিশ ও র‌্যাব যৌথভাবে অ্যাকশনে গিয়ে লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও শটগানের গুলি ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সোমবার ভোর ছয়টা থেকে বিহারীরা থানা কার্যালয়ের আশপাশে অবস্থান নেয় এবং আদমজী ইপিজেডের তিনটি প্রবেশ পথে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। শ্রমিকদের ভেতরে ঢুকতে দিলেও কোনো গাড়ি ঢুকতে বাধা দিচ্ছিল তারা। সকাল আটটার দিকে বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কার্যালয় ঘেরাও করে প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। তারা সড়কের উপর কাঠের টেবিল, চকি ফেলে যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় অভিযানে যদি কোন নিরপরাধ মানুষ আটক হয়ে থাকে আলোচনার মাধ্যমে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা বলে সবাইকে ছেড়ে দিতে হবে। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ায় তারা। এক পর্যায়ে সকাল ৯টার দিকে অ্যাকশনে যায় পুলিশ ও র‌্যাব। এসময় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বিহারীরা। উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে বিহারীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। পুলিশ লাঠিচার্জ, টিয়ার শেল ও শটগানের গুলি ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সোয়া ৯টার দিকে সড়কে যানবাহন চলাচল শুরু করে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান ফোন না ধরায় তার বক্তব্য নেয়া যায়নি। তবে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শওকত জামিল জানান, রাতে ৩৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পুলিশ মোতায়েন রয়েছে কয়েকটি পয়েন্টে।

শুক্রবার জুমার নামাজের সময় খুতবার আগে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হক মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছ থেকে মাইক নিয়ে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে মাদক ব্যবসায়ী, কিশোরগ্যাং, ইভটিজিং বিষয়ের পর ভারতে মহানবীকে নিয়ে কটূক্তির বিষয়ে কথা বলেন। এ সময় ‘ভারতের বিষয় ভারতে থাক। ভারতের বিষয়ে এখানে আমরা না আনি। প্রতিবাদ করবো, কিন্তু যেন বিশৃঙ্খলা করবো না’ এমন মন্তব্যের পর তার ওপর দফায় দফায় হামলা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ১২০-১২৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App