×

জাতীয়

ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন পুলিশকে গাড়িচাপা দেয়া চালক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ জুন ২০২২, ০২:০০ পিএম

ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন পুলিশকে গাড়িচাপা দেয়া চালক

রাজধানীর বাংলামোটরে বাসচাপায় এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর ঘটনায় ঘাতক ওয়েলকাম পরিবহনের বাসচালক জাকির হোসেন (৪০) ও বাসের মালিক মো. আলম ওরফে খোকাকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। শুক্রবার (১০ জুন) রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর এলাকা থেকে ঘাতক চালককে ও ঢাকার সাভার এলাকা থেকে বাসের মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‍্যাব জানিয়েছে, ঘাতক বাসটি ছিল ফিটনেসবিহীন। দৈনিক চুক্তিভিত্তিক বাসটি চালিয়ে আসা জাকির হোসেন বেপরোয়া গতিতে বাংলামোটরের দিকে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্যকে চাপা দেন। হেলপারি থেকে লেগুনা চালিয়ে আসা জাকির গত ২০১৯ সাল থেকে নিয়মিত বাস চালানো শুরু করেন। দুর্ঘটনার ২০ দিন আগে চুক্তিতে ওয়েলকাম পরিবহনের বাসটি চালানো শুরু করেন তিনি। ঘটনার পর প্রথমে আত্মগোপনে চট্টগ্রাম যান জাকির। সেখান থেকে সীমান্তবর্তী এলাকা হয়ে পাশের দেশে পালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া যান চালক জাকির। তবে এর আগেই গ্রেপ্তার হন তিনি।

শনিবার (১১ জুন) রাজধানীর কারওয়ানবাজার র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে চালক ও মালিককে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গত ৬ জুন সকালে বাংলামোটর সড়কে মোটরসাইকেলযোগে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে যাওয়ার পথে ওয়েলকাম পরিবহনের বাসচাপায় পুলিশ কনস্টেবল কোরবান আলী মারা যান। এ ঘটনায় মামলা হলে র‍্যাব-২ গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় চালক ও বাস মালিককে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে বাসটির হেলপার এখনও পলাতক রয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, চালক জাকির গত ২০০৫ সালে ঢাকায় টেম্পুর হেলপার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১০ সালের দিকে তিনি লেগুনা চালাতেন। ২০১৫ সালে বাসের হেলপার হিসেবে ঢাকায় চাকরি নেন। ২০১৮ সাল থেকে লাব্বাইক ও ওয়েলকাম ট্রান্সপোর্টে চালক হিসেবে অস্থায়ী ভিত্তিতে বাস চালানো শুরু করেন।

২০১৯ সালে হালকা যানবাহন চালনার লাইসেন্স করে নিয়মিত বাস চালানো শুরু করেন। প্রায় এক মাস আগে বর্তমান গাড়ির মালিক খোকার সঙ্গে জাকিরের পরিচয় হয়। প্রায় ২০ দিন আগে ওয়েলকাম পরিবহনের ওই বাসটি দৈনিক ২ হাজার ৫০০ টাকা চুক্তিতে চালানো শুরু করেন জাকির। এর বাইরে গাড়ির লাইন খরচ ১ হাজার ৩০০ টাকা দিতে হতো। এরপর বাকি টাকা জাকির, হেলপার ও কন্ট্রাক্টর ভাগ করে নিতেন।

র‌্যাবের এ মুখপাত্র বলেন, ঘটনার দিন কারওয়ানবাজার সিগনাল থেকে যাত্রী নিয়ে বেপরোয়াভাবে চালিয়ে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেল আরোহী পুলিশ সদস্যকে চাপা দেন জাকির। বাংলামোটরে গিয়ে বাসটি রেখে পালিয়ে যান তিনি।

পরে বাস কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাকে আত্মগোপনে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। সারাদিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ঘোরাঘুরি করে রাতে চট্টগ্রামে চলে যান। সেখানে এক আত্মীয়ের বাসায় দুদিন থাকার পর আরেক জায়গায় চলে যান। সেখান থেকে শুক্রবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আত্মগোপনে যান। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। জাকিরের পরিকল্পনা ছিল সীমান্ত পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশে অবৈধভাবে পালিয়ে যাওয়া।

কমান্ডার মঈন বলেন, বাসের মালিক আলম ২০১৭ সালে পরিবহন ব্যবসা শুরু করেন। একটি বাসের লাভ দিয়ে ২০২০ সালে এ বাসটি কিনে রুট পারমিট ছাড়াই সড়কে চালানো শুরু করেন। এখনও গাড়িটির রুট পারমিট না পেলেও দুই বছর ধরে গাড়িটি রাস্তায় চলছিল। ঘটনার পর তিনিও সাভারে আত্মগোপনে যান।

এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাবের মুখপাত্র বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে আমাদের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে বাস চালক-মালিক থেকে শুরু করে সব স্টেকহোল্ডারদের গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করতে হবে। এটি শুধুমাত্র আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নেই। সবাই সচেতন না হলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা কঠিন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App