×

অর্থনীতি

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই প্রস্তাবিত বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ: ঢাকা চেম্বার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২২, ০৯:২৬ পিএম

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণই প্রস্তাবিত বাজেটের মূল চ্যালেঞ্জ: ঢাকা চেম্বার

বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানায় ঢাকা চেম্বার। ছবি: ভোরের কাগজ

প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রাজস্ব ঘাটতি ও অর্থায়নসহ অন্যান্য বিষয়গুলো অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। প্রাক্কলিত লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে করজাল পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করা, কর কাঠমোর অটোমেশন, যৌক্তিক রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ও সরকারি ব্যয়ে সামঞ্জস্যতা নিশ্চিত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ঢাকা চেম্বারের ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট পর্যালোচনা ও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এসব জানানো হয়। পর্যালোচনায় আরও বলা হয়, বাজেটে আয় ও ব্যয়ের ভারসাম্য রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রস্তাবিত বাজেটে আয়-ব্যয়ের ঘাটতি স্থানীয় ব্যাংকিং ও অন্যান্য বৈদেশিক খাত হতে অর্থ সংস্থানের নির্ভরতা তৈরি করতে পারে। ঢাকা চেম্বার মনে করে, বাজেটের আকার বাড়ানোর চাইতে পরিকল্পিত, সময়োপযোগী, ব্যয় কার্যক্রমে দক্ষাতা অর্জন এবং বাস্তবায়ন যোগ্য বাজেট প্রণয়ন একান্ত অপরিহার্য।

ঢাকা চেম্বার মনে করছে, কর্পোরেট কর হ্রাসের ক্ষেত্রে, তালিকাভুক্ত কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১০ শতাংশের বেশি আইপিওর মাধ্যমে বাজারে ছাড়া এবং লিস্টেড ও নন-লিস্টেড কোম্পানির ক্ষেত্রে বার্ষিক সর্বমোট ১২ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ ব্যয় ও বিনিয়োগ ছাড়া সব ধরনের লেনদেন ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে সম্পন্ন না করলে লিস্টেড কোম্পানীর ২৫ শতাংশের হারে কর আরোপের প্রস্তাব পুনঃবিবেচনা করা প্রয়োজন। স্থানীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও বেশি হারে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য পর্যায়ক্রমে বিদ্যমান কর্পোরেট কর হ্রাস করা প্রয়োজন।

বেসরকারি বিনিয়োগের ধারা অব্যাহত রাখতে বিদ্যমান করদাতাদের ওপর নতুন করে করের বোঝা আরও না বাড়িয়ে, করজাল বৃদ্ধির জন্য ঢাকা ও চট্টগ্রামের বাইরে অন্যান্য জেলাসমূহে আয়করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধির ওপর জোরারোপ করা প্রয়োজন। ব্যক্তি শ্রেণীর আয়করে ন্যূনতম সীমা অপরিবর্তিত না রেখে তা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।

পণ্য জব্দ করার ক্ষমতা ধারা ৮৩, ৮৪ ও ১০০ ধারাগুলো সংষ্কার করা প্রয়োজন, যাতে হয়রানিমুক্ত ভ্যাট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা যায়।

প্রস্তাবিত বাজেটে পণ্য উৎপাদনের কাঁচামাল যোগানের উৎসে কর চার শতাংশে নামিয়ে আনার উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়, তবে উৎসে করের হার সব রপ্তানিকারদের জন্য সমানভাবে নির্ধারণ করা একান্ত আবশ্যক, এর ফলে তৈরি পোষাক খাতের সঙ্গে সম্ভাবনাময় অন্যান্য খাতের বৈষম্য হ্রাস পাবে।

প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ও পরিচালন ব্যয় দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে, এ পরিস্থিতিতে রাজস্ব সংগ্রহ কাঙ্ক্ষিত হারে বৃদ্ধি না পেলে সরকারের ব্যাংক নির্ভরতা আর্থিক খাতকে বেশ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি করবে। এমন বাস্তবতায় আর্থিক খাতের শৃঙ্খলা বজায়ে রাখার জন্য ব্যাংক ঋণ ও অন্যান্য খাতে যেমন সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ গ্রহণের পরিমাণ এবং সুদের হারের মধ্যে ভারসাম্য রাখার আহ্বান জানাচ্ছে ডিসিসিআই।

বাজেটে বেসরকারি খাত হতে ২৪ দশমিক ৯ শতাংশ বিনিয়োগ প্রাপ্তির প্রাক্কলন করা হয়েছে, যা বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ নিশ্চিতকরা প্রয়োজন। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়নের গতি আশাব্যঞ্জক নয়, উল্লেখ্য মে ২০২২ পর্যন্ত এডিপি বাস্তবায়নের হার ৫৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ। এছাড়াও বৃহৎ প্রকল্পগুলো স্বল্প সময় ও খরচের দ্রুত বাস্তবায়ন এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় প্রকল্প বাস্তবায়ন ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের অন্যান্য উৎপাদনশীল খাতে বাধা তৈরির পাশাপাশি বৈদেশিক ঋণ নির্ভরতা আরো বাড়বে।

চলতি অর্থবছরে ৪৭ দশমিক ১৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানির বিপরীতে আমদানির পরিমাণ ৬৮ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। এতে মোট বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ২১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বৈচিত্র্যকরণ ও রেমিট্যান্স আহরণের প্রতি গুরুত্বারোপ করে, বাজেটে বিশেষ নির্দেশনা থাকা প্রয়োজন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App