×

সম্পাদকীয়

মাঙ্কিপক্স আতঙ্ক নয় সচেতন হোন

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২২, ০২:০৩ এএম

বিশ্বজুড়ে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করেছে আরেক সংক্রামক রোগ মাঙ্কিপক্স। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ছে অতি সংক্রামক রোগটি। এখন পর্যন্ত ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইসরায়েল, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের ৩০টিরও বেশি দেশে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ শনাক্ত করা হয়েছে। যেভাবে এ রোগ ছড়াচ্ছে বিষয়টি উদ্বেগের। এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০ জন এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবর। তবে এশিয়ার কোনো দেশে এখনো আক্রান্তের খবর নেই। বাংলাদেশে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের প্রতিটি স্থল, নৌ এবং বিমানবন্দরে করোনার পাশাপাশি বাড়তি সতর্কতা নেয়ার জন্য নির্দেশিকা জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার দুপুরে বিদেশ থেকে আসা এক ব্যক্তিকে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত সন্দেহে ঢাকার মহাখালীর সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে নেয়া হয়। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়তে থাকে। তবে সন্দেহভাজন এই ব্যক্তির মধ্যে মাঙ্কিপক্সের কোনো উপসর্গ নেই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে চর্মরোগে ভুগছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নমুনা পরীক্ষায় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ওই বিদেশি নাগরিক আইসোলেশনে থাকবেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রাদুর্ভাবটি করোনা ভাইরাসের মতো মহামারিতে পরিণত হবে না। কারণ ভাইরাসটি কোভিড ১৯-এর মতো সহজে ছড়িয়ে পড়ে না। তবে সতর্কতার বিকল্প নেই। মাঙ্কিপক্স এমন এক সংক্রামক রোগ, যার উপসর্গ সাধারণত মৃদু। পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকায় এ রোগের উৎপত্তি। জানা যায়, এ ভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় একটি আবদ্ধ বানরের শরীরে। ১৯৭০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন সময় আফ্রিকার ১০টি দেশে বিক্ষিপ্তভাবে এর সংক্রমণ ঘটতে দেখা গেছে। আফ্রিকার বাইরে প্রথম ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে এ ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। সে সময় রোগীরা ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়েছিলেন কিছু কুকুরের নিবিড় সংস্পর্শে। আর এসব কুকুরের শরীরে এ ভাইরাস ঢুকেছিল ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মাধ্যমে। এটি গুটিবসন্তের জন্য দায়ী ভাইরাসের পরিবারভুক্ত। তবে গুটিবসন্তের চেয়ে লক্ষণ মৃদু। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হলে সাধারণভাবে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় না। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হলে উচ্চমাত্রায় জ্বর, ব্যথা এবং ছোট ছোট ফুসকুড়ি পরে ফোসকায় রূপান্তরিত হয়। যদিও সাধারণত এসব হালকাই থাকে এবং দুই-চার সপ্তাহের মধ্যে মিলিয়ে যায়। কিন্তু সংখ্যাগত দিক থেকে কম হলেও মাঙ্কিপক্স প্রাণঘাতী হতে পারে। মাঙ্কিপক্স যেহেতু শারীরিক সংস্পর্শে আসার কারণে ছড়ায়, তাই স্বেচ্ছা আইসোলেশন কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানার মাধ্যমে এটির বিস্তার সহজে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ২১ দিন আইসোলেশনে থাকার পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাজ্যের হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি (ইউকেএইচএসএ)। আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা তীব্র ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। তাছাড়া রোগটি নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। তাদের আশঙ্কা বিশ্বজুড়ে মাঙ্কিপক্সের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। মাঙ্কিপক্স নিয়ে বৈশ্বিক উদ্বেগ শুরু হওয়ায় রোগটি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। মাঙ্কিপক্সের যেহেতু কোনো চিকিৎসা নেই, তাই সংক্রমণ প্রতিরোধের মাধ্যমে এই ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এখন থেকে সতর্ক থাকলে করোনা ভাইরাসের চেয়েও সহজে রোগটি মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App