×

অর্থনীতি

চলমান ও নতুন অর্ধশত মেগা প্রকল্পে বরাদ্দ ৮১ হাজার কোটি টাকা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২২, ০৯:০৪ পিএম

সড়ক ও যোগাযোগ খাতে ২০২২-২৩ অর্থ বছরে তেমন কোন মেগা প্রকল্প গ্রহণ না করা হলেও চলমান মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের ওপর জোর দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল বৃহষ্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থ বছরের বাজেট বক্তৃতায় এসব বিষয় উপস্থাপন করেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ৮১ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থ বছরে এখাতে বরাদ্দ ছিল ৭২ হাজার ২৯ কোটি টাকা।

বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, সড়ক নিরাপত্তা জোরদার, যানজট নিরসন ও সাশ্রয়ী গণপরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে বর্তমানে সড়কে ২৬টি মেগা প্রকল্প চলমান রয়েছে, যেগুলোর কয়েকটি শেষের পথে আবার কয়েকটি শুরু করা হচ্ছে। এসব মেগা প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম ঢাকা শহরে বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ‘বিআরটি’ ও মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ‘এমআরটি’ চলমান প্রকল্পের বাকি অংশ অর্থাৎ এমআরটি-৬ এর মতিঝিল হতে কমলাপুর অংশের কাজ, এমআরটি-১ ও এমআরটি-৫ এর বাকি অংশের কাজ করার জন্য এবারের বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া এলেঙ্গা-হাটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার সহ সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের আওতায় ২৬টি বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে বলে জানান।

তিনি আরও বলেন, কর্ণফূলি নদীর তলদেশে তিন দশমিক ৩২ কিমি দীর্ঘ বঙ্গবন্ধু সেতুর কাজ চলমান, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবদিয়ার কাজ চলমান রয়েছে, গাজীপুর হতে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর পর্যন্ত ‘বিআরটি’র কাজ চলছে, আবার শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে আশুলিয়া হতে সাভার ইপিজেড পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল কাজ ছাড়াও ভুলতা- আড়াইহাজার-বাঞ্ছারামপুর সড়কে মেঘনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ, বরিশাল-ভোলা সড়কে কালাবদর ও তেঁতুলিয়া সেতু নির্মাণ, মিঠা মইন সেনানিবাস হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার মরিচখালী পর্যন্ত দ্বিতল সড়ক নির্মানের সমীক্ষাসহ চলমান সেতু নির্মাণ, চলমান সেতু, উড়াল সড়ক ও টানেলসমূহ অন্তর্ভুক্ত করে আরও নতুন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও বৃহৎ সেতু নির্মাণের জন্য পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এখাতে চার হাজার ৪১৩ কোটি এক লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ বাড়ানো হবে।

রেলের মেগা প্রকল্পের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী সংসদে উপস্থাপন করেন, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ ও স্বল্প খরচে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনে বাংলাদেশ রেলওয়ের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার এ খাতের সমন্বিত ও সুষম উন্নয়নে নানাবিধ কার্যক্রম নিয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩০ বছর মেয়াদি (২০১৬-২০৪৫) সংশোধিত মহাপরিকল্পনা অনুসারে রাজধানী ঢাকার সাথে কক্সবাজার, মোংলা বন্দর, টুঙ্গীপাড়া, বরিশাল, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য এলাকা রেল নেটওয়ার্কের আওতায় আনা, সমগ্র সিঙ্গেল লাইন রেলপথকে ডাবল লাইন রেলপথ নির্মান, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ে, উন্নত কমিউটার ট্রেন সার্ভিস চালু, ঢাকা শহরের চার পাশে বৃত্তাকার রেল প্রকল্পসহ পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বাড়ানোর লক্ষে এ মহাপরিকল্পনার আওতায় ছয় ধাপে ৫ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি আরও বলেন, যার মধ্যে রয়েছে- যমুনা নদীল ওপর দ্বিতীয় বঙ্গবন্ধু সেতুসহ নয়টি গুরুত্বপূর্ণ রেল সেতু নির্মাণ, অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ, অত্যাধুনিক ওয়ার্কশপ নির্মাণ ও আধুনিকায়ন, ১৬০টি লোকোমোটিভ, এক হাজার ৭০৪টি যাত্রীবাহী কোচ, ২২২টি নতুন স্টেশন নির্মাণ, পদ্মা বহুমুখী সেতুর রেল লিংক প্রকল্প সমাপ্ত করা, দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হতে মায়ানমার সীমান্তের নিকটবর্তী ঘুনধুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েল গেজ ট্র্যাক নির্মাণ শেষ করা, খুলনা- মোংলা রেললাইন প্রকল্প শেষ করা, রূপসা রেল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ করা এবং পায়রা বন্দরকে পদ্মা রেললিংকের সাথে সংযুক্ত করতে ফরিদপুরের ভাঙা হতে বরিশাল ও পটুয়াখালী হয়ে পায়রা বন্দর পর্যন্ত রেল লাইন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া করেছে। এবারে রেল খাতে এক হাজার ৩৮০ কোটি ১৮ লাখ ৩৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, সেই সাথে রয়েছে বৈদেশিক ঋণ সহায়তা চলমান রয়েছে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরকে সম্প্রসারণ ও বিশ্বমানের করার জন্য পতেঙ্গা-হালিশহর বেটার্মিনাল স্থাপনের কাজ, মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের কাজ, মংলা ও পায়রা বন্দরকে বিশ্বমানের সমুদ্রবন্দর হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ড্রেজিংয়ের কাজ করাতে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বেসামরিক বিমান ও বিমানবন্দরকে আধুনিকায়নের কাজ করা হবে। সব মিলিয়ে এবারের বাজেটে ৮১ হাজার ৫১৮ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App