×

জাতীয়

গণবিচ্ছিন্ন লুটেরা বাজেট: বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২২, ০৮:১১ পিএম

জাতীয় র্অথবছর ২০২২-২০২৩ এর অনুমোদতি বাজটেকে গণবিচ্ছিন্ন ও দুর্বৃত্তদের লুটেরা বাজট আখ্যা দিয়েছে বিএনপি। প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলটির নেতারা জানান, এটি নিতান্তই একটি সাধারণ বাজেট হয়েছে। যেখানে বর্তমান সরকারের কাছ থেকে এর বেশি কিছু আশা করে লাভও নেই। কারণ, জনগণের কাছে তাদের কোনো জবাবদিহি নেই।

কোভিডের অভিঘাত পেরিয়ে উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় প্রত্যাবর্তন’ স্লোগান নিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাজেট বিএনপির কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয় বলে মন্তব্য করে বিএপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, লুটেরারা যাতে আরো লুট করে নিজেদের সম্পদের পাহাড় গড়তে পারে এমন বাজেট। তিনি বলেছেন, যারা এই বাজেই দিয়েছে তারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব নয়। তাদের বাজেট দেয়ার কোনো অধিকারই নেই।

দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির বাজারে সবদিক থেকে জনগণ বিশাল চাপের মুখে পড়বে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তার দাবি প্রস্তাবিত বাজেটে লুটপাটের সুযোগ দেয়া হয়েছে, যার বলি হবে জনগণ।

খসরু বলেন, এই যে এত বড় একটা বাজেট দিয়েছে। এটা বাস্তবায়ন করতে গেলে দিন শেষে টাকা তো জনগণের পকেট থেকেই যাবে। বিভিন্নভাবে যে ট্যাক্সের কথা বলা হচ্ছে এগুলো সাধারণ মানুষের পকেট থেকে যাচ্ছে, লুটপাটের জন্য যে টাকাটা ব্যয় হচ্ছে, সেই টাকাটা তো জনগণের পকেট থেকে যাচ্ছে। অন্যদিকে জনগণকে সহযোগিতা করার জন্য যে টাকা সরকারের তহবিলে থাকার কথা, সেই টাকা আজকে নাই বলে চাপটা আরও বেড়ে যাবে।

বাজেটের আকার নিয়ে প্রশ্ন না তুলে খসরু বলেন, বাজেট জনগণ এবং দেশের জন্য কতটা ব্যয় হচ্ছে সেটাই মূখ্য। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে প্রায় ৭ লাখ কোটি টাকার বাজেটের কত অংশ আমাদের দেশ ও জনগণের জন্য খরচ হচ্ছে। ১০ হাজার কোটি টাকার পদ্মা সেতুতে ৩০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। যে ধরনের দুর্নীতির মধ্য দিয়ে বিদেশে টাকা পাচার করা হচ্ছে, যে ধরণের লুটপাট চলছে, বাজেটের বড় অংশ তো লুটপাটের মধ্য দিয়ে বিদেশে চলে যাচ্ছে। বিদেশে যে টাকা পাচার হয়েছে, সেই টাকা লুটপাটের জন্য যারা সহযোগিতা করেছে, সেই টাকা এনে লুটপাটের জন্য সুযোগ দেয়া হয়েছে এই বাজেটে।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, এই বাজেট বাস্তবসম্মত নয়। এটি ভোটের বাজেট। জনগণকে ধোঁকা দিয়ে, প্রত্যাশা দিয়ে একটি বড় বাজেট করেছে। সরকার গত বছরের বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারেনি। ব্যাপক কাটছাঁট করেছে। গত বছরের সংশোধিত বাজেটে যে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা হয়েছিল, সেই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এবার পারবে না।

তিনি বলেন, প্রতিবছরই বাজেট নিয়ে আমরা কথা বলি, কিন্তু কোনো লাভ হয় না। সরকার কোনো বছরই গণমুখী বাজেট করে না। দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সবার আগে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। করোনা পরবর্তী এই সময়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত ছিলো হবে কর্মসংস্থানের ওপর; অথচ বাজেটে এই বিষয়টি সম্পূর্ণ উপেক্ষা করো হয়েছে। সাধারণ মানুষের সামনে। সামস্টিক অর্থনীতিকে স্পষ্ট করে তুলে ধরতে পারেনি তারা। প্রস্তাবিত বাজেট বর্তমান কঠিন সময়ের প্রেক্ষিতে সম্পূর্ণ বাস্তবতা বর্জিত বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে জন প্রতিনিধিত্বহীন এই সরকার এমন একটি বাজেট উপস্থাপন করেছে যা দেশের মুষ্ঠিমেয় ধনী শ্রেণীর স্বার্থরক্ষা হয়েছে। এতে লাভবান হবে সরকার সংশ্লিষ্ট একটি বিশেষ গোষ্ঠী। অন্যদিকে নতুন বাজেটের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে অরো চরম প্রতিকূলতার মধ্যে পড়বে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠী।

প্রস্তাবিত লুটপাটবান্ধব বাজেট’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ। জাতীয় সংসদের গেটে সাংবাদিকদের কাছে বাজেটের প্রাথমিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, বাজেটে বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখানো হয়েছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি মানে রেন্টাল, কুইক রেন্টাল দিয়ে লুটপাট করা হবে। এই বাজেট লুটপাটবান্ধব বাজেট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App