এলডিপি নিয়ে শাহাদাত সেলিমের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের অভিযোগ

আগের সংবাদ

ফাল্গুনীকে মারধর: নিশি-শান্তাদের বিচার শুরু

পরের সংবাদ

সীতাকুণ্ডে আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার, নিহত বেড়ে ৪৩

প্রকাশিত: জুন ৭, ২০২২ , ২:৫৪ অপরাহ্ণ আপডেট: জুন ৭, ২০২২ , ২:৫৪ অপরাহ্ণ

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের বিএম কন্টেইনার ডিপোর ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও দুজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। পুলিশ ও দমকল কর্মীরা এ খবর নিশ্চিত করলেও সরকারিভাবে নতুন মরদেহ উদ্ধারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এখনও দেয়া হয়নি।

পুলিশের ধারণা, এদের একজন দমকল কর্মীর মরদেহ। খবর বিবিসির।

দমকল বাহিনীর এক কর্মকর্তা জানান, ভেতরে দুটি পুড়ে যাওয়া দেহাবশেষ পেয়েছেন তারা। তবে অতিমাত্রায় পুড়ে যাওয়ার কারণে ভালো করে বোঝা যাচ্ছে না। এগুলোকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স পাঠানো হয়েছে। তাদের পরিচয় নিশ্চিত হতে ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা হবে।

শনিবার রাতে শুরু হওয়া এ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪১ জন নিহত হবার খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। তাদের মধ্যে নয়জন দমকল বাহিনীর কর্মী রয়েছে। মঙ্গলবার পাওয়া মৃতদেহের মধ্যে দমকল বাহিনীর একজন থাকলে আরও দুজন সদস্য এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।

এদিকে ওই কন্টেইনার ডিপোর আগুন এখন প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে বলে নিশ্চিত করেছেন সেনাবাহিনীর মুখপাত্র। সেখানে আর এখন ভয়ের কিছু নেই বলেও অভিমত দিয়েছেন তিনি। এখন সেখানে তল্লাশি শুরু করেছে দমকল সার্ভিস ও সেনা সদস্যরা। তবে পুরো এলাকাটি এখনও ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নে বিএম ডেপো রাসায়নিক কারখানায় দ্রুত আগুন চারদিকে ছড়িয়ে যায়

এদিকে সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে সেনাবাহিনীর একজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, ডিপোর আগুন প্রায় নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। কিছু কাপড়ের জিনিসপত্র থাকার কারণে ধোঁয়া বের হচ্ছে। কিন্তু এখন আর কোন ঝুঁকি আছে বলে মনে হচ্ছে না।

সেনাবাহিনীর একটি বিশেষজ্ঞ দল এসে পুরো জায়গায় কোনো ধরনের ঝুঁকি আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখবে । সোমবার দুপুরেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার বিষয়টি জানিয়েছিল দমকল বিভাগ। তবে সেই সময় বিভিন্ন স্থান থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছিল।

দমকল বিভাগের সহকারী পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলছেন, আগুন নেভানো হয়েছে। এখন আমরা তল্লাশি শুরু করেছি। আর কোন আগুনের সম্ভাবনা বা ঝুঁকি আছে কিনা, হতাহত আছে কিনা, ক্ষয়ক্ষতি কতটা হয়েছে, ইত্যাদি পরীক্ষা করে দেখা হবে। এরপর এই ডিপো নিরাপদ হয়েছে কিনা, তা বলা যাবে।

শনিবার রাতে সীতাকুণ্ডের ওই কন্টেইনার ডিপোর আগুনে অন্তত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর জানিয়েছে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসন। ওই ঘটনায় দুইশোর বেশি মানুষ আহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৯ জন দমকল কর্মীও রয়েছে।

২৫ একর জায়গার ওপর তৈরি করা বিএম কন্টেইনার ডিপোর এক থেকে দেড়শ কন্টেইনার আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছেন দমকলের কর্মকর্তারা।

সেখানে রাসায়নিকের কিছু কন্টেইনার থাকলেও বাকিগুলোয় নানা ধরনের আমদানি-রপ্তানির পণ্য রয়েছে। ঘটনাস্থলের ছবি ও ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, যেখানে আগুন লেগেছিল, সেখানে ডিপোর শেড উড়ে গেছে। এছাড়া ছড়িয়ে রয়েছে পোড়া কন্টেইনার, গার্মেন্টস পণ্য, রাসায়নিকের জারসহ আরও অনেক কিছু।

সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল কবির বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে। এখনও আমার জায়গাটি ঘিরে রেখেছি। সেনা সদস্যরা ডিপোর ভেতরে কাজ করছে। জায়গা পুরোপুরি নিরাপদ ঘোষণা না করা পর্যন্ত সেখানে কাউকে যেতে দেয়া হবে না।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনী মুখপাত্র

ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ চলমান

আগুনে নিহত ১৭ জনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের পরিচয় বের করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সোমবারের মতো মঙ্গলবারও সকাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুথ স্থাপন করে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছে সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ।

সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ খালেদ বলেছেন, যারা নিখোঁজ রয়েছেন স্বজনরা জানিয়েছেন, সোমবার তাদের মোট ৩৭ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর কেউ যদি নিখোঁজ থাকেন, তাদের স্বজনরা আমাদের এখানে এসে নমুনা দিতে পারবেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করা হবে। প্রতিটি পরিবারের দুইজনের কাছ থেকে নমুনা হিসাবে রক্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে একমাস সময় লাগতে পারে বলে তিনি জানান।

ডি- এইচএ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়