×

জাতীয়

মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনার নিহত ৬৪১, আহত ১৩৬৪

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ জুন ২০২২, ০৪:০২ পিএম

ঢাকায় ২৩ টি দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত

গত মে মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ৬৪১জন নিহত ও ১ হাজার ৩৬৪ জন আহত হয়েছে। ৫২৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। নিহতের মধ্যে নারী ৮৪ জন এবং শিশু ৯৭ জন। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৪৬.৭৮ শতাংশ। ২৪৭ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২৭৯ জন-যা মোট নিহতের ৪৩ দশমিক ৫২ শতাংশ। এই সময়ে ৭টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত এবং ২ জন নিখোঁজ রয়েছে। ১৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকায় ২৩টি দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত হয়েছে।

সোমবার (৬ জুন) সড়ক নিয়ে কাজ করা সংগঠন রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুর্ঘটনায় ১১৯ জন পথচারী নিহত হয়েছে- যা মোট নিহতের ১৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯১ জন, অর্থাৎ ১৪ দশমিক ১৯ শতাংশ।

দুর্ঘটনার ধরন: দুর্ঘটনার ১১১টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১৪টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১২৩টি পথচারীকে চাপা/ধাক্কা দেয়া, ৬১টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৯টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের চিত্র: দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহতের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ২৭৯জন, বাস যাত্রী ৫৭ জন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি- ক্রেনগাড়ি আরোহী ৩৯জন, মাইক্রোবাস-প্রাইভেটকার-অ্যাম্বুলেন্স-পুলিশ জীপ যাত্রী ২৩জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী ৯৪ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী ১৩জন এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-প্যাডেল ভ্যান আরোহী ১৭জন।

দুর্ঘটনা সংঘটিত সড়কের ধরন: রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২১৭টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৯১টি আঞ্চলিক সড়কে, ৭৪টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৪৬টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা: দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৯১৪টি। এরমধ্যে ট্রাক ১৫২টি, বাস ১৪৬টি, কাভার্ডভ্যান ১৯টি, পিকআপ ৩৯টি, ট্রলি ৮টি, লরি ৪টি, ট্রাক্টর ১৪টি, তেলবাহী ট্যাঙ্কার ১টি, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ময়লাবাহী ট্রাক ১টি, মাইক্রোবাস ১৮টি, প্রাইভেটকার ১৩টি, অ্যাম্বুলেন্স ৪টি, জীপ ৬টি, পুলিশ পিকআপ ১টি, মোটরসাইকেল ২৬৭টি, থ্রি-হুইলার ১৪৪টি, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৩৩টি (নসিমন-ভটভটি-আলমসাধু-মাহিন্দ্র-টমটম), বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-প্যাডেল ভ্যান ৩৫টি এবং অন্যান্য ৯টি (পাওয়ারটিলার-ধানমাড়াইয়ের মেশিন গাড়ি-ডাম্পার-ক্রেনগাড়ি-ট্রেন) যানবাহন দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত রয়েছে।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ১২৭টি দুর্ঘটনায় ১৫৯ জন নিহত হয়েছে। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ২২টি দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি ৩২টি দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম ঝালকাঠি জেলায় ৩টি দুর্ঘটনায় ২ জন আহত হয়েছেন, এখানে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানী ঢাকায় ২৩টি দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত হয়েছে।

দুর্ঘটনার কারণ: সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসাবে প্রতিবেদনে বলা হয়, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, বেপরোয়া গতি, চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা, মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাল, দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা, বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি সড়কে দুর্ঘটনার অন্যতম কারন।

দুর্ঘটনায় নিহতদের পেশাগত পরিচয়: গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, নিহতদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ৫ জন, বিমান বাহিনীর সদস্য ১ জন, নৌ-বাহিনীর সদস্য ১ জন, সাবেক সেনা সদস্য ১ জন, সাবেক বিডিআর সদস্য ১ জন, আনসার সদস্য ২ জন, স্কুল-কলেজ-মাদরাসার শিক্ষক ২৩ জন, চিকিৎসক ৪ জন, সাংবাদিক ৬ জন, আইনজীবী ৪ জন, প্রকৌশলী ৩ জন, স্থানীয় পর্যটক ৩ জন, বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ১২ জন, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ১৭ জন, ঔষধ ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী বিক্রয় প্রতিনিধি ২৯ জন, স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ৩৭ জন, পোশাক শ্রমিক ৯ জন, বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মচারী ২ জন, রং মিস্ত্রি ২ জন, ধানকাটা শ্রমিক ১৩ জন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ১৬ জন এবং দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১০৭ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App