×

খেলা

রুটের রেকর্ডে ইংল্যান্ডের লর্ডস টেস্ট জয়

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ জুন ২০২২, ১০:৫৭ পিএম

রুটের রেকর্ডে ইংল্যান্ডের লর্ডস টেস্ট জয়

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডসে রবিবার সিরিজের প্রথম ম্যাচে জয় নিশ্চিত করে উদযাপনে মেতে উঠেন দুই ইংলিশ ব্যাটার জো রুট ও ফোকস।

লর্ডস টেস্টে ইংল্যান্ডের নতুন যুগের সূচনাটা স্মরণীয় করে রাখলেন সদ্য সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক জো রুট। ইংল্যান্ডের লাল বলের ক্রিকেটে ম্যাককালাম-স্টেকস যুগের সূচনাটা হয়েছে লর্ডস টেস্ট দিয়েই। লাল বলের ক্রিকেটে অধিনায়ক থেকে সরে যাওয়ার পর প্রথম টেস্টে নেমেই ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেছেন জো রুট। রেকর্ড গড়ার এই ম্যাচে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৬তম শতক তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে জয় এনে দিয়েই এই ডানহাতি ইংলিশ ব্যাটার। তার হাত ধরেই লর্ডসে রবিবার নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে স্বাগতিকরা। ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেটের নতুন যুগের শুভসূচনাও হলো রুটের বীরত্বেই। ম্যাচসেরা হয়েছেন জো রুট।

লর্ডস টেস্টের প্রথম ইনিংসে দুদলের ভরাডুবির পর দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের পঞ্চম উইকেটের জুটিতে ড্যারেল মিচেল ও টম ব্লান্ডেলের ১৯৫ রানের জুটির সুবাদে ইংল্যান্ডকে ২৭৭ রানের টার্গেট দেয় কিউইরা। তৃতীয় দিনের শেষে ইংলিশদের জয়ের খুব কাছাকাছিই পৌঁছে দেয় পঞ্চম উইকেটে অধিনায়ক স্টোকস ও সাবেক অধিনায়ক রুটের ৯০ রানের জুটি। এরপর বাকি পথটা সহজেই পার হয় ষষ্ঠ উইকেটে রুট-ফোকসের ১২০ রানের জুটিতে।

চতুর্থ দিন জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ৬১ রান, আর নিউজিল্যান্ডের দরকার ৫ উইকেট। লর্ডসের মেঘাচ্ছন্ন কন্ডিশনে দ্বিতীয় নতুন বল পেতে নিউজিল্যান্ডকে ১৫ ওভার অপেক্ষা করতে হত। কিন্তু রুট ও ফোকসের জুটিতে প্রথম সেশনের ১৩.৫ ওভারেই কোনো উইকেট না হারিয়ে জয় নিয়ে ফিরে ইংলিশরা। তৃতীয় দিনের শেষে ৭৭ রানে অপরাজিত থাকা রুট শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১৭০ বলে ১২ বাউন্ডারিতে ১১৫ রানে এবং ফোকসের অপরাজিত ছিলেন ৯২ বলে ৩২ রানে।

৭৭তম ওভারে রুটের ২৬তম শতক ও দশ হাজার রানের কীর্ত গড়ার পর ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য লাগত মাত্র ১৪ রান। ৭৯তম ওভারে সাউদির ৫ বলের মধ্যে ৩ চার মেরে জয় নিশ্চিত করেছেন রুটই। ওভারের পঞ্চম বলে চার মেরেই ম্যাককালাম-স্টোকস যুগের সূচনাটা রাঙিয়ে রাখলেন সদ্য সাবেক এই অধিনায়ক।

সাবেক এই ইংলিশ অধিনায়ক লর্ডস টেস্ট শুরু করেছিলেন নামের পাশে ৯৮৮৯ রান নিয়ে। তবে প্রথম ইনিংসে সাজঘরে ফিরেছেন মাত্র ১১ রান করেই। ফলে ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করতে দ্বিতীয় ইনিংসে তাকে ক্যারিয়ারের ২৬তম শতক তুলে নিতে হত। পেসারদের দাপটের মুখেও দ্বিতীয় ইনিংসে সেই রেকর্ডটিই ছুঁয়ে ফেলছেন তিনি। ইনিংসের ৭৭তম ওভারের তৃতীয় বলে টিম সাউদির বলে দুই রান নিয়ে এই কীর্তি গড়লেন রুট, যা সময়ের হিসেবে দ্রততম।

ভারতের সুনীল গাভাস্কার ১৯৮৭ সালে আহমেদাবাদে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ১০ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন। গতকাল লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ১০ হাজার রান পূর্ণ করলেন ইংল্যান্ডের ডান হাতি ব্যাটার জো রুট। ১০ হাজার রানের ক্লাবে ঢোকা বকি ১২ জণ হলেন শচিন টেন্ডুলকার (ভারত), রিকি পন্টিং (অস্ট্রেলিয়া), জ্যাক ক্যালিস (দক্ষিণ আফ্রিকা), রাহুল দ্রাবিড় (ভারত), অ্যালিস্টার কুক (ইংল্যান্ড), কুমার সাঙ্গাকারা (শ্রীলঙ্কা), ব্রায়ান লারা (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), শিবনারায়ন চন্দরপল (ওয়েস্ট ইন্ডিজ), মাহেলা জয়াবর্ধনে (শ্রীলঙ্কা), অ্যালান বোর্ডার (অস্ট্রেলিয়া), স্টিভ ওয়াহ (অস্ট্রেলিয়া) ও ইউনিস খান (পাকিস্তান)।

অভিষেকের পর সবচেয়ে কম সময়ে এই কীর্তি গড়তে রুট পেছনে ফেলেছেন আরেক সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টর কুককে। ২০১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর অভিষেকের পর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লর্ডস টেস্ট শুরুর দিন পর্যন্ত সময় ব্যবধান ৯ বছর ১৭১ দিন। যেখানে কুকের সময় লেগেছিল ১০ বছর ৮৭ দিন। তবে কাকতালীয়ভাবে সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে ১০ হাজার রান করেছেন এই দুজন একই বয়সে। এই মাইলফলক ছোঁয়ার সময় দিনে রুটের বয়স ৩১ বছর ১৫৭ দিন। ২০১৬ সালে এ রেকর্ড ছোঁয়ার সময় কুকেরও বয়স ছিল একই, ৩১ বছর ১৫৭ দিন। সে হিসেবে এই কীর্তিতে দুজনই যৌথভাবে সর্বকনিষ্ঠ। তবে ইনিংসের হিসেবে ইনিংসের হিসেবে ব্রায়ান লারা, শচীন টেন্ডুলকার ও কুমার সাঙ্গাকারার থেকে পিছিয়ে আছেন রুট। এই তিনজনেরই ১৯৫ ইনিংস লাগলেও রুটের লেগেছ ২১৮ ইনিংস। লারার লেগেছিল ১১১ ম্যাচ, রুটের ১১৮ ম্যাচ।

টেস্ট ক্রিকেটে ২০০ ম্যাচ খেলে সর্বোচ্চ ১৫৯২১ রান করেছেন ভারতের শচিন টেন্ডুলকার। ১৫ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করা খেলোয়াড় একমাত্র তিনিই। রুটের ফর্ম আর বয়স বিবেচনা করলে ভবিষ্যতে শচিনের সঙ্গে ১৫ হাজার রানের ক্লাবে ঢুকে যাওয়া দ্বিতীয় ক্রিকেটার হতেই পারেন তিনি। লর্ডস টেস্টে তৃতীয় ও চতুর্থ দিনে বেশ চমকই দেখা গেছে। পেসারদের দাপটে প্রথম দুই দিনই ২৪ উইকেট পড়লেও তৃতীয় ও চতুর্থ দিনে ব্যাটাররা কিছুটা হলেও লড়াই করতে পেরছেন। দ্বিতীয় ইনিংসে দুদলের দুইজন ব্যাটার দেখা পেয়েছেন শতরানের। লর্ডস টেস্টের ৩৫ উইকেটের ৩৪টিই পেয়েছেন পেসাররা। এই টেস্টে দিয়ে অভিষেক হওয়া ইংলিশ পেসার ম্যাথিউ পটস দুই ইনিংস মিলে পেয়েছেন ৭ উইকেট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App