×

জাতীয়

টিপু-প্রীতি হত্যাকাণ্ড: বুধবার মুসাকে দেশে ফেরানো হচ্ছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২২, ০৫:০৬ পিএম

টিপু-প্রীতি হত্যাকাণ্ড:  বুধবার মুসাকে দেশে ফেরানো হচ্ছে

নিহত টিপু ও গ্রেপ্তারকৃত মুসা। ফাইল ফটো

রাজধানীর চাঞ্চল্যকর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতি হত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন সুমন শিকদার মুসাকে ওমান থেকে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। এজন্য ইন্টারপোলে যোগাযোগ করেছে পুলিশ। মুসাকে দেশে ফেরাতে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম রবিবার (৫ জুন) সকালে যাচ্ছে ওমান।

ডিবির মতিঝিল বিভাগের দুইজন এডিসি এবং ইন্টারপোল ডেস্কের একজন সদস্য থাকছে এই টিমে। বুধবার (৮ জুন) মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। ওমানে তাকে গ্রেপ্তার করেছে স্থানীয় পুলিশ। দেশে ফেরাতে সহায়তা করছে ইন্টারপোল। টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এনসিবি ডেস্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদ্য অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তা মহিউল ইসলাম শুক্রবার বিকেলে ভোরের কাগজকে বলেন, গত সপ্তাহের প্রথমদিকে ইন্টারপোল মুসাকে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছে। ওমানের সঙ্গে বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকলেও আলোচনার মাধ্যমে স্কট পাঠিয়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে তদন্তের মুখোমুখি করার কাজ চলছে।

এজন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে চিঠি চালাচালি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ৩-৪ দিন আগে মুসা ওমানে গ্রেপ্তারের খবর জানায় ইন্টারপোল। এরপর তাকে ফিরিয়ে আনতে যোগাযোগ শুরু হয়েছে। রবিবার তদন্ত সংশ্লিস্টরা ওমান যাচ্ছেন। টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার তদন্তে মুসার নাম আসার পর তাকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছিল বাংলাদেশের পুলিশ। অবশ্য গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশানার রিফাত রহমান শামীম এ ব্যাপারে কিছু বলতে রাজি হননি।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমাদের একটা প্রক্রিয়া চলছে। পুলিশ সদর দপ্তরের মাধ্যমে এই প্রক্রিয়ায় তাকে দেশে আনা গেলে তা আমাদের অন্যতম সাফল্য হবে।

মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, মুসাকে আটক করতে না পারায় খুনে ব্যবহ্যত অস্ত্র এবং মোটর সাইকেলের হদিস মিলছে না। এ পর্যন্ত ধৃতরা রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে সদুত্তর দিতে পারেনি। মুসাকে ৮ জুন দেশে ফেরানো যেতে পারে। টিপু হত্যাকাণ্ডের ১২ দিন আগেই মুসা দুবাই চলে যান। হত্যা পরিকল্পনা এবং যাবতীয় নির্দেশনা সেখান থেকে দেয়া হয়। হত্যাকাণ্ডের পর দুবাইতে বার্তা যায় ‘কাজ শেষ’। এরপর মুসা দুবাই থেকে ওমানে যান। দেশে এনে তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়া কিলার শামীম নামে আরো একজনকে আটকের চেষ্টা চলছে। তিনি লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত পেরিয়ে ভারত হয়ে এখন ভুটানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে পুলিশের কাছে খবর রয়েছে।

প্রসঙ্গত, মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক টিপু সড়কে গাড়িতে থাকা অবস্থায় গত ২৪ মার্চ রাতে খিলগাঁও রেলগেইটের কাছে আক্রান্ত হন। মোটর সাইকেলে আসা এক ব্যক্তি যানজটে আটকে পড়া টিপুর গাড়ির কাছে এসে তাকে গুলি করে। সে সময় গাড়ির পাশে রিক্সার আরোহী কলেজছাত্রী প্রীতি গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নিলে দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। হত্যাকাণ্ডের পর টিপুর স্ত্রী স্থানীয় নারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি যে মামলা করেছেন, তাতে আসামির তালিকায় কারও নাম উল্লেখ করা ছিল না।

পরে ২৬ মার্চ রাতে বগুড়া থেকে মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশ নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই ব্যক্তিই টিপুকে গুলি করেছিলেন। পরে আরফান উল্লাহ দামাল নামে আরো একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয় কমলাপুর থেকে। এরপর ২ এপ্রিল মুসার ভাই সালেহ শিকদার ওরফে শুটার সালেহ, মতিঝিল থানার ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকসহ চার জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App