×

জাতীয়

অবৈধ স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযান ইতিবাচক: টিআইবি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ জুন ২০২২, ০৭:২৯ পিএম

সারাদেশে অবৈধ বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চলমান অভিযান ইতিবাচক। তবে দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বেড়াজাল ছিন্ন করে খাতটির সার্বিক সুশাসন নিশ্চিতে যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সমাধানের লক্ষে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগ-নির্ণয় কেন্দ্রগুলোর সেবার মান পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও সর্বোপরি সুশাসন নিশ্চিতের জন্য একটি নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠনের দাবি জানাচ্ছে সংস্থাটি।

বুধবার (১ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানায় সংস্থাটি। বিবৃতিতে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা খাতে সুসাশনের চ্যালেঞ্জ বিষয়ে টিআইবির সাম্প্রতিক গবেষণার উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অভিযান শুরুর মাত্র একদিনের মাথায় বিপুল সংখ্যক নতুন লাইসেন্স ও নবায়নের আবেদন জমা পড়ায় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে যে যথাযথ তদারকির প্রকটতর অভাব ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছে।

এমন অবস্থায় চলমান অভিযান বেহাল ও অরাজকতাপূর্ণ খাতটিতে সুশাসন নিশ্চিতে কতোটা কার্যকর হবে সেটি প্রশ্ন সাপেক্ষ। দীর্ঘমেয়াদে সুফল পেতে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষীত খসড়া আইনটি চূড়ান্ত করে দ্রুততার সঙ্গে আইন হিসেবে প্রণয়ন করতে হবে ও তার কার্যকর বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের মান পরিবীক্ষণ এবং সুশাসন নিশ্চিতে একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠন জরুরি।

নিয়মিতভাবে এ জাতীয় অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি জমাকৃত আবেদনসমূহ যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই ও আইনানুগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে যোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে লাইসেন্স প্রদান ও নবায়ন করা হয়, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করছে টিআইবি। এক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রভাব, ভয়-ভীতি ও করোনার ঊর্ধ্বে থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যাতে নির্মোহভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারে, তা নিশ্চিতেরও আহ্বান জানায় সংস্থাটি।

কোভিডকালীন রিজেন্ট হাসপাতাল কাণ্ডের উদহারণ দিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিনা লাইসেন্স ও মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সসহ স্বাস্থ্যসেবার নিয়ম-নীতি ভঙ্গ করে যেসব প্রতিষ্ঠান এতোদিন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, সেই সব প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির সম্মুখীন করতে হবে। একই সঙ্গে নিয়ম-বিরুদ্ধ এসব কর্মকাণ্ডকে এতোদিন যারা বিভিন্নভাবে সুরক্ষা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন তাদেরকেও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় সর্ষের ভেতরে থাকা ভূত তাড়ানো সম্ভব হবে না!

টিআইবি ‘বেসরকারি চিকিৎসাসেবা : সুসাশনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শিরোনামে ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে , যেখানে একদিকে বাণিজ্যিকীকরণের প্রবণতা, মুনাফা-কেন্দ্রিক সেবা ব্যবস্থা, ও অন্যদিকে সরকারের মনোযোগ, পরিদর্শন ও তদারকির ঘাটতির কারণে সাধারণ সেবাগ্রহীতারা যে জিম্মি হয়ে পড়েছেন, তা বিশদভাবে তুলে ধরা হয়েছিল।

স্বাস্থ্য সেবার ন্যায় একটি মৌলিক বিষয়, যেখানে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্ন জড়িত সেখানে মুনাফা-বিভোর ও অমানবিকভাবে দুর্নীতি পরায়নদের হাতে জিম্মিদশা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সকলের অপরিহার্য দায়িত্ব বলে মনে করছে টিআইবি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App