দেশে নিরাপদ পানি পায় মাত্র ৫৯ শতাংশ মানুষ। এর মধ্যে ৩৯ শতাংশের বসতবাড়িতে নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবস্থা আছে।

সোমবার (৩০ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘এডিপি বরাদ্দে আঞ্চলিক বৈষম্য: এসডিজি-৬ অর্জনে একটি বাধা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। ‘২০২২-২৩ জাতীয় বাজেটে নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন (ওয়াশ) খাতে বরাদ্দ’ শিরোনামে বাজেটপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর রহমান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এমডিজির পরবর্তীতে এসডিজির যুগে আমরা। এসডিজির লক্ষ্যমাত্রার ধরনে কিছু মানগত পার্থক্য রয়েছে। এমডিজিতে শুধু পানি পাওয়ার লক্ষ্য ছিল। এসডিজির লক্ষ্য নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা। পানি পেলেই তা নিরাপদ নয়। দেশের ৯৮ শতাংশ পানি পায়। কিন্তু ২০২১ সাল পর্যন্ত গবেষণায় আমরা দেখেছি ৩৯ শতাংশ মানুষ নিরাপদ পানি পায়। নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার জন্য বাড়তি কর্মসূচি নিতে হবে। মানসিকতায়ও নিরাপদ পানির বিষয়টি আনতে হবে।

হোসেন জিল্লুর রহমান আরও বলেন, স্যানিটেশনেও বাংলাদেশ সফলতা দেখিয়েছে। খোলা জায়গায় মলত্যাগ না করায় বাংলাদেশের যে সফলতা, তা অনেকে এখনো অর্জন করতে পারেনি। কিন্তু এটা ছিল এমডিজি যুগের একটা লক্ষ্য। এসডিজি যুগে বাড়তি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে। সেটা হচ্ছে স্যানিটেশনের নিরাপদ ব্যবস্থাপনা। এটা আরও দুরবস্থায় আছে। এ ক্ষেত্রে অগ্রগতি ৩৯ শতাংশ।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, এডিপির মোট বরাদ্দের (দুই লাখ ৬৬ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা) হিসাবে ২০২১-২২ অর্থবছরের বরাদ্দে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ ছিল পাঁচ দশমিক ৪৪ শতাংশ বা ১৪ হাজার ৫১৭ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এসব এলাকায় বরাদ্দ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে পাঁচ বছর আগের তুলনায় কমেছে ৭২ শতাংশ।

ওয়াশ খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে ভৌগোলিক বৈষম্যের বিষয়টি প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে। এ বিষয়ে সেখানে বলা হয়, বিগত বছরগুলোয় প্রত্যন্ত এলাকা, চর, পাহাড়ি ও উপকূলীয় অঞ্চলের তুলনায় শহরাঞ্চলে সর্বোচ্চ শতাংশ তহবিল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। অথচ অনুন্নত এসব এলাকায় বরাদ্দের প্রয়োজন শহরাঞ্চলের চেয়ে বেশি। তাই আসন্ন বাজেটে প্রান্তিক একালাগুলোর প্রয়োজন বিবেচনা করা উচিত বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ওয়াটারএইড বাংলাদেশ, পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি), ইউনসেফ বাংলাদেশ, ফানসা-বিডি, এফএসএম নেটওয়ার্ক, বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), স্যানিটেশন অ্যান্ড ওয়াটার ফর অল, অ্যান্ড ওয়াটার পোভার্টি, এমএইচএম প্ল্যাটফর্ম, ইউনিসেফ এবং ওয়াশ অ্যালায়েন্স ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।