×

জাতীয়

পদ্মা সেতু দেশের জন্য গর্ব ও অহংকারের: ড. মসিউর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২২, ১২:৪৪ এএম

পদ্মা সেতু দেশের জন্য গর্ব ও অহংকারের: ড. মসিউর

ড. মসিউর রহমান

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টি না থাকলে পদ্মা সেতু সম্ভব হতো না। পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জন্য গর্ব ও অহংকারের বিষয়। শেখ হাসিনার দূরদর্শী দৃষ্টির কারণেই আজ জাতি ইতিহাস সৃষ্টির দ্বারপ্রান্তে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন আমাদের জন্য আনন্দের এবং অহংকারের বিষয়। পদ্মা সেতু পদ্মাপারের মানুষের মাঝে উন্নয়নের স্পৃহা তৈরি করেছে। আর এই স্পৃহার উৎস প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিন ঠিক হয়ে যাওয়ার পর গত শুক্রবার রাতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে এক দশক আগের বিশ্বব্যাংকের তোলা ‘দুর্নীতির ঘটনা’ প্রকাশ্যে আনেন এই উপদেষ্টা।

বিশ্বব্যাংক, এডিবি, আইডিবি ও জাইকার অর্থায়নে ২০১২ সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। এরপরই প্রকল্পটিতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলে বিশ্বব্যাংক। তখন বিশ্ব ব্যাংকের চাপে তৎকালীন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে পদত্যাগ করতে হয়। আর ছুটিতে যেতে হয় সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসাইনকে। এ নিয়ে মামলাও হয় কানাডার টরন্টোর একটি আদালতে। পরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের উপযুক্ত প্রমাণ পায়নি কানাডার টরন্টোর ওই আদালত। রায় ঘোষণার মধ্যদিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পে যে দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনেছিল বিশ্বব্যাংক, তা থেকে বাংলাদেশকে দায়মুক্তি দেয় টরন্টোর আদালত।২০১৭ সালের জানুয়ারিতে দেওয়া রায়ে কানাডার অন্টারিও সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ইয়ান নরডেইমার বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক যেসব তথ্য দিয়েছে সেগুলো অনুমানভিত্তিক, গালগল্প ও গুজবের বেশি কিছু নয়।’

তবে বিশ্বব্যাংক যখন অভিযোগ তুলেছিল, তখন পদ্মা সেতু প্রকল্পের ইন্টিগ্রিটি অ্যাডভাইজার ড. মসিউর রহমানের পদত্যাগের শর্ত দিয়েছিল বলে এতদিন পর জানা গেছে। মসিউর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি এও জানান, বিশ্বব্যাংকের ওই লোভনীয় প্রস্তাবে তিনি রাজি হননি।

যদিও বিশ্বব্যাংক আর এই প্রকল্পে ফেরেনি। তবে বাংলাদেশ তার নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পের কাজ শেষ করে আগামী ২৫ জুন উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঠিক করে দৃঢ়ভাবে সক্ষমতার জানান দিয়েছে ইতোমধ্যে।

এদিকে শুক্রবার রাতে ভার্চুয়াল ওই অনুষ্ঠানে ওই সময়ে নিজের সঙ্গে ঘটা ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর। তিনি বলেন, ‘আমার ওপরে যে চাপ ছিল যেমন, এখানে ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক ছাড়া অন্য যারা এতে অর্থায়ন করছে- বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা- এরা একদিন সকালে আগে সময় ঠিক করে আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইল। প্রথমে তারা বলল যে, জাপানের অ্যাম্বাসির অফিসে।’

মসিউর বলেন, আমি বললাম, দেখো জাপান অ্যাম্বাসির অফিসে আমি যাব না। আমার নিজের কাছে যুক্তি ছিল যে, জাপানি অ্যাম্বাসির কাছে যদি আমি যাই, তাহলে যেটা মানুষের ধারণা হবে এবং প্রচার হবে- সেটা হলো, আমি বোধহয় তাদের কাছে নতজানু হয়ে কোনো একটা সুবিধা চাচ্ছি। জাপানি অ্যাম্বাসেডরকে বললাম, তুমি তাহলে আমার এখানে আস। জাপানি অ্যাম্বাসেডর বলল- না, তোমার ওখানে গেলে সাংবাদিকদের ফেইস করতে হবে, আমি সাংবাদিকদের ফেইস করতে পারব না। আমি বললাম, সাংবাদিকদের আমি ফেইস করব, তুমি আস।’

উপদেষ্টা বলেন, ওরা এসে আমাকে বলল যে, আমাকে দায়িত্ব ত্যাগ করতে হবে, দেশও ত্যাগ করতে হবে। দেশত্যাগের শর্ত হলো তারা আমাকে বিদেশে বিশ্বব্যাংকে বা এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক বা কোথাও আমাকে একটা কনসালট্যান্সি জোগাড় করে দিবে এবং আমি যে বেতন চাই, সেই বেতনই তারা ব্যবস্থা করে দেবে। অথবা তারা কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার কিছু কাজ ঠিক করে দেবে এবং আমাকে তারা টাকা দেওয়ার বন্দোবস্ত করে দেবে। আমার উত্তর হলো দেখো, আমার যদি টাকা করার ইচ্ছা থাকত, তাহলে তোমরা যে দোষারোপ করছ, সেখানেই তো আমি টাকা করতে পারতাম। ওদের যেটা প্রস্তাব, এটা হলো একটা সামঞ্জস্যহীন প্রস্তাব। যে দোষ করেছে, তাকে আবার তারা পুরস্কৃত করবে।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App