×

সম্পাদকীয়

চালের বাজার অস্থির : ভাঙুন অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ মে ২০২২, ০৬:২১ এএম

ভরা মৌসুমেও চালের দাম বৃদ্ধি উদ্বেগজনক। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে ৫০ কেজির প্রতি বস্তায় ১৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। চিকন-মোটা সব ধরনের চালের দাম কেজিতে ৩-৬ টাকা এবং ৫০ কেজির বস্তায় ১৫০-৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬৬-৭০ টাকায়, নাজিরশাইল ৭৫-৮৫ টাকায়, ব্রি-২৮ ৫২-৫৫ টাকায় আর পোলাওর চালের দাম পড়ছে ১১০-১১৫ টাকা। সরকারি গুদামে যথেষ্ট পরিমাণ চাল মজুত আছে। বেসরকারি খাতেও চালের সংকট নেই। এরপরও কেন চালের দাম বাড়বে? চালের দাম ঊর্ধ্বমুখীর খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে আসছে। বাজারে অন্যান্য পণ্যের দামও ঊর্ধ্বগতি। চালের দাম বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনই জোরালো উদ্যোগ নিতে হবে সরকারকে। বাজার পরিস্থিতি নিয়ে খুচরা, পাইকারি ও মিলারদের একে অপরকে দোষারোপ করার একটা প্রবণতা আমরা লক্ষ করি। চালের বেলায়ও তা দেখছি। মিল মালিকরা গণমাধ্যমকে বলছেন, এবার বোরো মৌসুমের শুরুতে হাওরে বন্যায় ধান নষ্ট হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় অশনির কারণে বৃষ্টিতে পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি রাশিয়া, ইউক্রেন ও ভারত থেকে বিশ্ববাজারে সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গমের দাম বাড়ছে। যার প্রভাব পড়ছে চালের বাজারেও। এ বিষয়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বলছে, এমন অভিযোগ সত্য কিনা তা অনুসন্ধান করে দেখা হবে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বোরো ধানের ৬২ শতাংশ এরই মধ্যে কাটা হয়ে গেছে। চালও বাজারে আসতে শুরু করেছে। তবে হাওরে আগাম পানি এসে যাওয়া ও অতিবৃষ্টির কারণে ৮০ হাজার টন চাল নষ্ট হয়েছে। কিন্তু এরপরও এবার বোরোতে ২ কোটি ৭ লাখ টনের ওপরে চাল উৎপাদিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু চাল নয়, গত ১ মাসে বাজারে ডাল, আটা, ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অযৌক্তিকভাবে বেড়েছে। এমনকি সরকারের অনুরোধও কানে তুলছেন না ব্যবসায়ীরা। পণ্য যথেষ্ট মজুত থাকলেও সরবরাহ নেই, প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ নানা অজুহাত তারা দাঁড় করাচ্ছেন। এতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েন নিম্নবিত্তের মানুষ এবং যাদের আয় সুনির্দিষ্ট। যাদের নিয়মিত আয়ের ব্যবস্থা নেই এবং যারা নির্দিষ্ট বেতন পান তারাই বেশি নাজুক অবস্থায় পড়েন। জানা যায়, বাংলাদেশে প্রতি বছর চাল, গম ও ভুট্টার উৎপাদন ৩ কোটি ৯০ লাখ টনেরও বেশি। এ পরিমাণ ঘাটতিতে বাজারে তেমন প্রভাব পড়ার কথা নয়। আমাদের দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য চাল; বিপুলসংখ্যক শ্রমজীবী মানুষকে প্রচুর পরিমাণে ভাত খেতে হয় শুধু শর্করার চাহিদা পূরণের জন্য নয়, তাদের আমিষেরও একটা বড় অংশ আসে ভাত থেকে। তাই চালের দাম যেন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্রয়সাধ্যের সীমা অতিক্রম না করে, সরকারকে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হয়। কিন্তু সরকার দক্ষভাবে ব্যবসায়ীদের তদারকি করতে পারছে কিনা সে প্রশ্ন সামনে আসছে। সরকারকে চালের বাজার স্বাভাবিক রাখায় বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করতেই হবে। ভাঙতে হবে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App