×

সারাদেশ

সাপের ভয়ে সব কাজ বন্ধ, আতঙ্কে ৬ হাজার গ্রামবাসী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ মে ২০২২, ১১:৫৮ পিএম

সাপের ভয়ে সব কাজ বন্ধ, আতঙ্কে ৬ হাজার গ্রামবাসী

ফাইল ফটো

মেহেরপুর সদর উপজেলার উজলপুর গ্রামে বিরাজ করছে সাপ আতঙ্ক। দুই সপ্তার ব্যবধানে ওই গ্রামের অন্তত ৩৫ জনকে সাপে কেটেছে বলে দাবি গ্রামবাসীর। এর মধ্যে ১০ বছরের এক শিশুর মৃত্যুও হয়েছে সাপের কামড়ে। আতঙ্কে সব ধরনের কাজ বন্ধ করে ঘরে বসে সময় পার করছে প্রায় ৬ হাজার গ্রামবাসী। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

ঘটনার শুরু গত ১২ মে মুরশেলিন নামের ১০ বছরের এক শিশুর সাপে কেটে মৃত্যু হওয়ার পর। স্থানীয়রা জানান, গত ১২ মে শেষ রাত্রে কামাল হোসেনের শিশু পুনত্র মুরসেলিন কে সাপে কামড়ায়। এর বেশ কিছুক্ষণ পর মুরশেলিন বিষয়টি তার বাবা মাকে জানায়। তার বাবা মা তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসে হাসপাতালে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে।

এর ১ দিন পর মাঠে কাজ করার সময় হেলাল উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে সাপে কাটে। তাকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়। কয়েকদিন চিকৎসা নিয়ে সে সুস্থ হয়। তার একপর সকাল ১১ টার দিকে উজুলপুর কুঠিপাড়ার চাঁদনি বেগমের হাতে সাপে কামড় দেয়। বিকালের দিকে তার জ্বালাপোড়া শুর করে হয়। এরপর পাশ্ববর্তি শোলমারি গ্রামের হাসেম আলী ও রতন ওঝার ঝাড় ফুকে সে ভালো হয় বলে তার দাবি। ভাবে সুলতানা, টিপু, মনিসহ ৩৫ জনকে সাপে কেটেছে বলে গ্রামবাসীর দাবি। তবে সাপের কামড় খাওয়া বেশির ভাগ মানুষই সাপকে দেখেনি বলে জানান।

তবে নামপ্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন জানান, স্থানীয় ওঝার কারসাজিতে এই ধরনের সাপ আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে। শুধু মাত্র কামাল হোসেনের পুত্র সাপের কামড়ে মারা গেছে। বাকি গুলো সবই গুজব। ওঝারা টাকা ইনকাম করার জন্য এই সাপ আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

উজলপুর গ্রামের নুর আলী বলেন, আমাকেও সাপে কেটেছে। বুকে সাপে কাটার দাগ এখনো আছে। হাসেম আলী নামের এক ওঝার কাছে ঝাড়ফুকের পর সুস্থ হয়েছি। সন্তান পরিবার নিয়ে নিরাপদে থাকতে ওঝার কাছ থেকে তাবিজ পড়া নিয়েছি। তিনি আরো বলেন সাপের কামড়ে যদি বিষ থাকে তাহলে ওঝাকে ৫শ টাকা আর বিষ না থাকলে ৩শ টাকা দিতে হচ্ছে।

শরিফ হোসেন নামের আরও একজন বলেন, গত সোমবার সকালে আমার স্ত্রীকে কোন কিছুতে কামড়িয়েছিল। তবে সাপে কামড়িয়েছে আতংকে কবিরাজের কাছে নিয়ে গিয়েছিলাম।

কুতুবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যেন সেলিম রোজা বলেন সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যু এর পর পরই আরো একজনকে সাপে কামড়ানোর পর থেকে গ্রামে সাপে কামড়ানোর গুজব শুরু হয়। আমরা ইতিমধ্যে সাপে কামড়ানোর গুজবের বিরুদ্ধে প্রচার প্রচারনা শুর করেছি। গ্রামবাসিকে সচেতন করে তুলতে চেষ্টা করছি।

মেহেরপুর সিভল সার্জেন ( ভারপ্রাপ্ত) ডা. অলোক কুমার দাস বলেন, ইতি মধ্যে আমি সহ উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের একটি দল গ্রামটি পরিদর্শন করেছি। শোলমারি গ্রামের হাসেম আলী ও রতন সহ বেশ কয়েক জনের একটি চক্র গ্রামে আতংক ছড়িয়ে ফয়দা লুটছে।

আমরা তাদের প্রাথমিক ভাবে শতর্ক করেছি। এ কাজ বন্ধ না করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের আটক করা হবে। এ ছাড়া একটি মেডিকিল টিমও উজলপুর গ্রামে মানুষের মনবল ধরে রাখতে সর্বক্সনিক কাজ করছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App