×

জাতীয়

একাধিক দিনে সংসদ নির্বাচন করার ভাবনা ইসির

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মে ২০২২, ০৮:২২ এএম

একাধিক দিনে সংসদ নির্বাচন করার ভাবনা ইসির

প্রতীকী ছবি

আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে একাধিক দিনে ভোটগ্রহণ করার কথা ভাবছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে সবার সঙ্গে আলোচনা করে সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেবে ইসি। ইতোমধ্যে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন মহলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপ থেকে আসা প্রস্তাবের ভিত্তিতে এমন ভাবছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

লিখিত প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে- নির্বাচন কমিশন স্টেকহোল্ডারদের মতামত ও পরামর্শসমূহ গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন করে দেখেছে। এ পর্যালোচনা ও মূল্যায়ন ধারাবাহিকভাবে অব্যাহত রাখা হবে। সময় ও পরিস্থিতি অনুযায়ী কমিশন যথাযথ করণীয় নির্ধারণ করে ব্যবস্থা নেবে। বিশিষ্টজনদের মতামত ও প্রস্তাবনাসমূহের বিষয়ে কমিশনের যা মনোভাব সেগুলো হলো-

১. অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন আকাক্সক্ষা ও গুরুত্ব নির্বাচন কমিশন সর্বদা অনুধাবন করে থাকে। নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে কমিশন সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাবে। সব রাজনৈতিক দল বিশেষত প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলকে অচিরেই সংলাপে আহ্বান করা হবে।

২. ভোটকেন্দ্রে ও ভোটাধিকার প্রয়োগে অর্থশক্তি ও পেশিশক্তির প্রভাব প্রতিরোধ করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেয়া হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবার বিশেষত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসমূহের সহায়তা প্রয়োজন হবে। প্রতিদ্ব›দ্বী রাজনৈতিক দলসমূহ ও প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদেরও এ লক্ষ্যে স্ব স্ব অবস্থান থেকে অতন্দ্রিক ভূমিকা পালন করতে হবে।

৩. নির্বাচনে অর্থশক্তি ও পেশিশক্তির প্রভাব প্রতিরোধ করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি প্রতিদ্ব›দ্বী রাজনৈতিক দলসমূহ ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদেরও সজাগ দৃষ্টি রেখে প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে হবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা, মতৈক্য ও সমঝোতা এহেন সমস্যা নিরসনে প্রভূত ভূমিকা রাখতে পারে।

৪. নির্বাচনে কারচুপির সুযোগ প্রতিরোধ করে অবাধ ও নিরপেক্ষ ফলাফল নিশ্চিত করতে নির্বাচন কমিশন সম্ভব সব ব্যবস্থা নেবে। প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলসমূহ ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদেরও এ বিষয়ে সজাগ থেকে নজরদারিসহ সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে।

৫. প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অপ্রতুলতা হলে নির্বাচন একাধিক দিনে কয়েকটি ভাগে সম্পন্ন করা যেতে পারে মর্মে প্রস্তাবনা বিষয়ে কমিশন সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিষয়টির সম্ভাব্যতা, উপযোগিতা, সুবিধা, অসুবিধা ইত্যাদি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।

৬. ভোটের সময় ভোটকেন্দ্রে ভোট কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য অনুমোদিত সাংবাদিকদের এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের অবাধ সুযোগ নিশ্চিত করতে কমিশন আন্তরিকভাবে চেষ্টা করবে।

৭. স্বচ্ছতার জন্য ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা প্রতিস্থাপন করে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে ভাগের দৃশ্য বাহির থেকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ সৃষ্টি করার বিষয়টি কমিশন সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করবে।

৮. ইভিএমের শুদ্ধতা ও অপপ্রয়োগ রোধ নিশ্চিত করতে কমিশন ইতোমধ্যে কয়েকটি সভা করেছে। পরীক্ষা ও পর্যালোচনা অব্যাহত রয়েছে। অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার নিমিত্ত আগামীতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ বিশিষ্টজনদের অংশগ্রহণে আরো পর্যালোচনা সভার আয়োজন করা হবে। অতঃপর কমিশন আগামী জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনে ইভিএমের ব্যবহার বা ব্যবহারের পরিধি ও বিস্তৃৃতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

গত ১৩ মার্চ, ২২ মার্চ, ৬ এপ্রিল ও ১৮ এপ্রিল যথাক্রমে দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী, নাগরিক সমাজ, প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক / সিনিয়র সাংবাদিক এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধান নির্বাহী / প্রধান বার্তা সম্পাদক / সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপ করে নির্বাচন কমিশন। এতে এক ডজনের বেশি সুপারিশ আসে বাস্তবায়নের জন্য। সেই সুপারিশগুলো নিয়ে নির্বাচন কমিশন তার ভাবনা আনুষ্ঠানিকভাবে লিখিত আকারে প্রকাশ করল।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে আগের ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাক-নির্বাচন প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই সংলাপের আয়োজন করে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিশন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App