×

খেলা

মাইলফলকের অপেক্ষায় তামিম, ছন্দের খোঁজে মুমিনুল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২২, ০৯:২০ পিএম

মাইলফলকের অপেক্ষায় তামিম, ছন্দের খোঁজে মুমিনুল

হোম অব ক্রিকেট মিরপুরে রবিবার অনুশীলনে পাশে দাড়িয়ে থেকে তামিম ইকবালকে দিকনির্দেশন দেন অ্যালান ডোনাল্ড

মাইলফলকের অপেক্ষায় তামিম, ছন্দের খোঁজে মুমিনুল

রবিবার অনুশীলনে টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো

দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মিরপুরে সোমবার (২৩ মে) মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা। সিরিজের প্রথম টেস্টে চট্টগ্রামে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল টাইগাররা। ১১২২ রানের টেস্টে অনেকাংশেই এগিয়ে ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। মিরপুরেও সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাইবে মুমিনুল বাহিনী। চট্টগ্রাম টেস্টে টাইগারদের মধ্যে প্রথমে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন নাঈম হাসান। এরপর ব্যাট হাতে মুশফিক পা রেখেছেন স্বপ্নের মাইলফলকে। কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের সুবাদে ৮১ ম্যাচে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলকে পৌঁছেছেন। ৮১ ম্যাচে ১৪৯ ইনিংসের সুবাদে বর্তমানে ৫০৩৭ রানের মালিক তিনি। যেখানে ২৫টি হাফসেঞ্চুরি ও ৮টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি রয়েছে ৩টি ডাবল সেঞ্চুরি। সবার আগে ৫ হাজার রানের মাইলফলকেই নয় প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরির রেকর্ডও তার দখলে। চট্টগ্রামে দীর্ঘদিন পর সাদা পোশাকে মিডল অর্ডারের ব্যাটার লিটন দাসও ছন্দে ফিরেছেন। বল হাতে বরাবরের মতো আলো ছড়িয়েছেন দুই বাঁহাতি স্পিনার সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম।

[caption id="attachment_350439" align="aligncenter" width="1280"] রবিবার অনুশীলনে টাইগার অধিনায়ক মুমিনুল হককে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো[/caption]

পয়েন্ট ভাগাভাগির মাধ্যমে চট্টগ্রাম টেস্ট শেষ হয়েছে। আজ থেকে শুরু হবে মিরপুর টেস্ট। এই টেস্টেও অনেক হিসাব-নিকাশের খাতা খোলার সম্ভাবনা আছে। দেশীয় ক্রিকেটারদের আরেকটি রেকর্ডের অপেক্ষায় থাকবে মিরপুর। মুশফিকের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলকে পা রাখার দৃঢ় অপেক্ষায় আছেন টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। ঘরের ছেলের ঘরেই মাইলফলক ছোঁয়ার সম্ভাবনা ছিল। দুর্ভাগ্যবশত তা আর হয়নি। এমনকি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৫ হাজার রানের মাইলফলকেও তামিম রেকর্ডে তার নাম অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ পেয়েছিল। চট্টগ্রামে প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন। তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়ের সঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ বছর পর করেছেন শতরানের পার্টনারশিপ। এরপর অত্যন্ত দৃঢ়তার সঙ্গে নিজের ক্যারিয়ারের দশম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। এরপরই সবার আগে ভোরের সূর্যের মতো ৫ হাজার রানের মাইলফলকে তার পৌঁছানোর সম্ভাবনা জেগেছিল। ব্যক্তিগত ১৩৩ রানে তৃতীয় দিন চা বিরতিতে গিয়েছিলেন তামিম। মাইলফলকে জন্য প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৯ রান। তার সঙ্গে মুশফিক ব্যাট করছিল ব্যক্তিগত ২৪ রান নিয়ে। মাইলফলকে জন্য মুশফিকের প্রয়োজন ছিল আরো ৪৪ রান। সে সুবাদে মুশফিকের আগেই তামিম ৫ হাজার রান করতে যাচ্ছেন তা অনেকেই ভেবেছে। তবে চা বিরতির পর ব্যাট হাতে আর মাঠে নামেননি তামিম। প্রচণ্ড গরমে পানিশূন্যতায় কারণে হাতের পেশিতে ব্যথা অনুভব করার ফলে তিনি আর ঝুঁকি নেননি। পরের দিন লিটন দাস আউট হওয়ার পর আবার মাঠে নেমেছিলেন। তবে সে যাত্রায় আর কোনো রানই যোগ করতে পারেননি তিনি। রাজিথার বলে সরাসরি বোল্ড হয়ে ফিরেছেন সাজঘরে। বর্তমানে ৬৬ ম্যাচে ১২৬ ইনিংসে ৪৯৮১ রানের মালিক তামিম। যেখানে ৩১টি হাফসেঞ্চুরি, ১০টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি একটি ডাবল সেঞ্চুরিও আছে। তবে চট্টগ্রামে নিজের ঘরের মাঠে ১৯ রানের আক্ষেপ তার কাছে ভুলে যাওয়ার মতো নয়। মিরপুর টেস্টে নামের পাশে সেই ১৯ রান যোগ করার সঙ্গে সঙ্গেই হয়তো উদযাপনে মেতে উঠবেন। তবে চট্টগ্রামে হলে সেই উদযাপনের মাত্রা একটু বেশি থাকাটাই স্বাভাবিক। যা তার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকত।

অন্যদিকে সাদা পোশাকে টাইগারদের অধিনায়ক মুমিনুলের অফ ফর্মের ধারাবাহিকতা চলছেই। সর্বশেষ তার ব্যাটে রান এসেছে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচ জয়ের দিন। বছর পরিবর্তনের সময়কালে কিউইদের বিপক্ষে ৮৮ রানের এক অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। এরপর থেকেই মুমিনুলকে সাদা পোশাকে আর স্বরূপে দেখা যায়নি। প্রথম ম্যাচে ৮৮ করলেও দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথম ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি। এরপর ফলোঅনে পরে দ্বিতীয় ম্যাচে করেছেন ৩৩ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও ব্যাট হাসেনি তার। যার জন্য প্রোটিয়া সফরের সমালোচনার শীর্ষে ছিল তারই নাম। অধিনায়ক হিসেবে ক্যারিয়ারে বাজে ম্যাচ খেলেছেন এই সিরিজে। প্রথম টেস্টে করেছেন ২ রান এবং দ্বিতীয় টেস্টে কোনোভাবে ১১ রান সংগ্রহ করতে পেরেছেন। দুই টেস্ট মিলিয়ে করেছেন মাত্র ১৩ রান। যেখানে প্রোটিয়া অধিনায়কের ছিল ২২৭ রান। আজ থেকে শুরু হওয়া মিরপুর টেস্টে জ¦লে ওঠার অপেক্ষায় থাকবেন তিনি নিজেও। ৫ ম্যাচের গ্লানি মুছে দিয়ে প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে দলকে অসাধারণ জয়ও উপহার দিলেও তা কোনোভাবেই অস্বাভাবিক হবে না।

কক্সবাজারের সাগরপাড়ের এই ক্রিকেটারের টেস্ট ফরম্যাটে ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক হয়েছে। এখনো পর্যন্ত জাতীয় দলের সাদা পোশাকে ৫১ ম্যাচে করেছেন ৩৫১৪ রান, দেশীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। যার মধ্যে রয়েছে ১১টি সেঞ্চুরি ও ১৫টি হাফ সেঞ্চুরি। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম যেন তার জন্য এক অনন্য আশীর্বাদ। কেননা তার ক্যারিয়ারের ১১ টেস্ট সেঞ্চুরির ৭টিই করেছেন এ স্টেডিয়ামে। যা ক্রিকেটের কিংবদন্তিদের সঙ্গে তার নাম লেখাতে সাহায্য করেছে। নির্দিষ্ট ভেন্যুতে সেঞ্চুরিতে কিংবদন্তিদের পরই মুমিনুলের অবস্থান। মাহেলা জয়াবর্ধনে কলম্বোতে সবচেয়ে বেশি ১১ সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। ডন ব্র্যাডম্যান মেলবোর্নে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৯টি। এছাড়া জ্যাক ক্যালিস কেপটাউনে ৯টি, কুমার সাঙ্গাকারা কলম্বোতে ৮টি, মাইকেল ক্লার্কের অ্যাডিলেডে ৭ সেঞ্চুরি রয়েছে। জয়াবর্ধনে ও সাঙ্গাকারার ৭টি করে শতক আছে গল ক্রিকেট স্টেডিয়ামেও। সবাইকে ছাপিয়ে শীর্ষস্থান দখল করতে চট্টগ্রামে আর মাত্র চারটি সেঞ্চুরি লাগবে বাংলাদেশি এই লিটল ম্যানের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App