×

সারাদেশ

বৃষ্টি হলেই বন্দরনগরীতে হাঁটু থেকে কোমর পানি!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২২, ০৯:২৫ এএম

বৃষ্টি হলেই বন্দরনগরীতে হাঁটু থেকে কোমর পানি!

শনিবার সকালে মাত্র ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতাসহ নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী, স্কুল-কলেজ ও অফিসগামী মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন। ছবি: ভোরের কাগজ

অল্প বৃষ্টিতেই বন্দরনগরীর বিভিন্ন এলাকা হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে গেছে। গতকাল শনিবার সকালে মাত্র ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। বিশেষ করে নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী, স্কুল-কলেজ ও অফিসগামী মানুষ সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন।

নগরীর ছোট-বড় নালাগুলোর আবর্জনা অপসারণ না করায় সামান্য বৃষ্টিতে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ নগরবাসীর। নালা পরিষ্কার না করার জন্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে (চসিক) দায়ী করছেন তারা। তবে চসিক কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন খালে ও ড্রেনে দেয়া বাঁধের কারণে বৃষ্টিতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে জমে যায়। তবে বৃষ্টি থেমে যাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পানি সরে যায়।

গতকাল শনিবার ভোর থেকেই চট্টগ্রামের আকাশ ছিল মেঘলা। সকাল ৬টার পর থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হলেও সকাল সাড়ে ৮টার দিকে দমকা হাওয়াসহ ভারী বৃষ্টি শুরু হয়। এই বৃষ্টিপাত স্থায়ী ছিল ১ ঘণ্টারও কম সময়। এরপর গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হয়। দুপুর ১২টার পর রোদের দেখা মেলে। এই অল্প বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল, সড়কের পাশাপাশি বাসা-দোকানেও পানি ঢুকে পড়ে। নালা আটকে থাকায় বিভিন্ন উঁচু এলাকার সড়কেও পানি জমতে দেখা গেছে।

কর্মস্থলে যেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে। শিক্ষার্থী-অভিভাবককে বাড়তি ভাড়া গুনতে হয়েছে। এদিকে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ায় বৃষ্টিতে পানি জমেছিল আখতারুজ্জামান চৌধুরী ফ্লাইওভারের ওপরেও। তবে সকাল ১০টার পরে বৃষ্টি কমে যাওয়ায় পানি নামতে শুরু করে।

বৃষ্টিতে হাঁটু থেকে কোমর পানিতে তলিয়ে যায় নগরের প্রবর্তক মোড় এলাকা। দুই নম্বর গেট থেকে মুরাদপুরের দিকে সড়কের দুই পাশ এবং জিইসি মোড়ের দিকে সড়কের বড় অংশ পানিতে তলিয়ে যায়। এছাড়া শুলকবহর, কাতালগঞ্জ, বহদ্দারহাট, বাদুরতলা, চকবাজার, ওয়্যারলেস গেট এলাকায়ও নালা উপচে হাঁটু পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। এছাড়া কাপাসগোলা, পশ্চিম বাকলিয়া এলাকায় জলাবদ্ধতার পাশাপাশি জামালখান, বাগমনিরাম, শুলকবহর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায়ও জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে।

অল্প বৃষ্টিতে জলজটে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। চকবাজার এলাকার বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, নগরীর বেশির ভাগ নালা-ড্রেন অপরিষ্কার থাকায় অল্প বৃষ্টিতেও হাঁটু পানি জমে যাচ্ছে। বর্ষার আগে পরিষ্কার করা না হলে চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হবে।

চসিকের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মোবারক আলী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের জন্য খালগুলোয় বাঁধ দেয়া হয়েছে। সেজন্য পানি যেতে পারেনি। বাস্তবায়নকারীরা বলেছেন, বর্ষার আগে বাঁধ খুলে দেয়া হবে। আশা করি তখন এই পরিস্থিতি থাকবে না।

পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, প্রি মুনসুনের কারণেই এই বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। পরে সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। অর্থাৎ সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। ভারী বৃষ্টির আগে ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যায়। আজও এমন বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App