×

অর্থনীতি

পণ্যের মান ও পরিমাপ নিশ্চিতে বিএসটিআইকে আপসহীন হতে হবে: শিল্পমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২২, ০৫:০৬ পিএম

পণ্যের মান ও পরিমাপ নিশ্চিতে বিএসটিআইকে আপসহীন হতে হবে: শিল্পমন্ত্রী

রবিবার বিএসটিআইয়ের বিশ্ব মেট্রোলজি দিবসের অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনসহ অন্যরা। ছবি: ভোরের কাগজ

শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, পণ্যের মান, ওজন এবং পরিমাপ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-কে আপসহীন হতে হবে। এ ব্যাপারে তিনি বিএসটিআই’র সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সততা এবং নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান। মন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, মেট্রোলজি দিবসের গৃহীত কর্মসূচি ক্রেতা-ভোক্তা, উৎপাদক, আমদানিকরক, গবেষক ও বিএসটিআই’র কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আরও সক্রিয় হতে উৎসাহ যোগাবে।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর উদ্যোগে ‘বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস’ উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ ২২ মে ঢাকার তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই প্রাঙ্গণে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। গত ২০ মে ছিলো বিশ্ব মেট্রোলজি দিবস।

পণ্যের মান, ওজন এবং পরিমাপ নিশ্চিত করার জন্য বিএসটিআইকে বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হচ্ছে জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএসটিআই সক্ষমতার দিক থেকে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। বিএসটিআই পণ্যের মান প্রণয়ন, পরীক্ষণ, মান সনদ প্রদান, সঠিক ওজন ও পরিমাপের নিশ্চয়তা বিধান, ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস সনদ প্রদানের পাশাপাশি দেশিয় পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য ইতোমধ্যে হালাল সার্টিফিকেট প্রদান শুরু করেছে। এ কার্যক্রম রপ্তানি বাণিজ্যে বিশাল ভূমিকা রাখবে। পণ্য পরীক্ষণ এবং ওজন ও পরিমাপের ক্ষেত্রে বিশ্বমানের সেবা নিশ্চিত করতে বিএসটিআইতে আরও অত্যাধুনিক ৮৯টি ল্যাবরেটরি স্থাপনের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে তিনি জানান।

বিএসটিআই’র মহাপরিচালক (গ্রেড-১) ড. মো. নজরুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এবং এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু। অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন পরিচালক (মেট্রোলজি) মো. সাজ্জাদুল বারী। এছাড়াও অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিএসটিআই’র কাউন্সিলের সদস্য, মান প্রণয়ন বিশেষজ্ঞ, শিল্প প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, স্টেকহোল্ডার ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকেই বিএসটিআইকে একটি শক্তিশালী ও আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে উন্নীত করার উপর গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। পণ্য উৎপাদনে পরিমাপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হয় সেজন্য লেনদেনের ক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত মান ও সঠিক পরিমাপের পণ্য নিশ্চিত করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, পণ্যের মান প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিম্নমানের পণ্য উৎপাদন-সরবরাহ এবং ওজনে কারচুপি রোধকল্পে বিএসটিআই নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ও সার্ভিল্যান্স কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে লাইসেন্সবিহীন, নকল পণ্য উৎপাদনকারি ও পরিমাপে কারচূপিকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া বিএসটিআই’র ল্যাবরেটরিতে রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস শিল্প, ঔষধ শিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত ওজন ও পরিমাপক যন্ত্র ক্যালিব্রেশন সেবা প্রদান করা হচ্ছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ও ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে বিএসটিআই’র কার্যক্রমকে অটোমেশনের আওতায় আনার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিএসটিআই’র মানচিহ্ন ও লাইসেন্সের অনৈতিক ব্যবহার রোধকল্পে ওয়েববেইজড কিউআর কোড সম্বলিত সফটওয়্যার প্রবর্তন করতে যাচ্ছে। এছাড়া এ সফটওয়্যার ব্যবহার করে গ্রাহকরা ওজন ও পরিমাপ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম যথা: মোড়কজাত পণ্যের নিবন্ধন, ক্যালিব্রেশন সনদ ও ভেরিফিকেশন সনদের তথ্য সহজে যাচাই করতে পারবেন।

প্রতিটি স্থল বন্দরে বিএসটিআই’র অফিস স্থাপনের প্রস্তাব করে এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু বলেন, ভারতের সাথে বাংলাদেশের যেসকল স্থল বন্দর রয়েছে তার প্রতিটি স্থল বন্দরে বিএসটিআই’র ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হলে আমদানি-রপ্তানি অনেক গতিশীল হবে। তাছাড়া বাংলাদেশের পণ্য ভারতে রপ্তানির জন্য বিএসটিআই’র সার্টিফিকেট ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যেন গ্রহণ করে সেজন্য উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাব করেন।

মানসম্পন্ন পণ্য এবং সঠিক ওজন ও পরিমাপ নিশ্চিতকরণে মাঠ পর্যায়ে বিএসটিআই’র সেবা সম্প্রসারণের জন্য ১০টি আঞ্চলিক কার্যালয়সহ স্থাপনসহ প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, নতুন নতুন ল্যাবরেটরি স্থাপন ও বিদ্যামান ল্যবরেটরিসমূহের সম্প্রসারণ, মানচিহ্ন নকল প্রতিরোধে অনলাইন কিউআর কোড সম্বলিত লাইসেন্স/সার্টিফিকেট প্রদান, স্বর্ণের বিশুদ্ধতা যাচাইপূর্বক সনদ প্রদানসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক তথ্য তুলে ধরেন বিএসটিআই’র মহাপরিচালক।

তিনি বলেন, শিল্প কারখানা বৃদ্ধি ও বর্তমান চাহিদা বিবেচনায় পদার্থ, রসায়ন ও মেট্রোলজি ল্যাব আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিএসটিআই’র সেবাকে পূর্ণাঙ্গ অটোমেশনের আওতায় আনার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। রপ্তানি সম্প্রসারণের জন্য পণ্যের হালাল সনদ দেয়া শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App