×

সারাদেশ

ঘরে চাল-ডাল নেই, নেই বিশুদ্ধ পানি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২২, ০৪:১৭ পিএম

ঘরে চাল-ডাল নেই, নেই বিশুদ্ধ পানি

ছাতকে বিদ্যমান বন্যায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটের পাশাপাশি বিরাজ করছে তীব্র গো-খাদ্যের সংকট। ছবি: ভোরের কাগজ

ছাতকে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও বেড়েছে জন দুর্ভোগ। উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী রয়েছে। বন্যাকবলিত এলাকায় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে তীব্র হচ্ছে গো-খাদ্যের সংকট। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়নের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হলেও তা অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

বন্যার পানিতে গ্রামাঞ্চলের টিউবওয়েলগুলো তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানি কাদাযুক্ত হওয়ায় ফুটিয়েও পান করা যাচ্ছে না। ভেঙ্গে পড়েছে স্যানিটারি ব্যাবস্থা। রয়েছে বৈদ্যুতিক সমস্যা। গ্রামীণ কাঁচা রাস্তাঘাট পানির নিচ থেকে ভেসে উঠলেও কাঁদা মাটিতে পরিণত হওয়ায় এসব রাস্তা দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাচল করা যাচ্ছে না। রাস্তায় ধরেছে ফাটল। এছাড়াও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বন্যার পানি নামলেও শিক্ষা কার্যক্রম এখন স্বাভাবিক হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এদিকে ছাতক পৌর সভার মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে শুকনা খাবার, ভুনা খিচুড়িসহ খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেছেন।

দিনমজুর দুদু মিয়া জানান, কাম কাজ নাই। "নুন আনতে পান্তা ফুরায়" ঘরেই বন্দি। ৮ সদস্য পরিবার মানুষ আমরা। সরকারি ত্রাণ পাইনা। চাল-ডাল-খাবার পানি নাই, চলবো কিভাবে? কোথায় যাবো বৌ বাচ্চা নিয়ে।

ঢলের পানির প্রবল স্রোতে আতঙ্কে রয়েছে সুরমা নদীর তীরবর্তী পাঁচ শতাধিক পরিবার। উপজেলার ছৈলা, ইসলামপুর, নোয়ারাই, কালারুকা, ভাতগাঁও, সিংচাপইড় ইউনিয়নসহ অধিকাংশ এলাকা বন্যার পানিতে থই থই। এসব এলাকার ছোট-বড় প্রায় ৫০টি মাছের খামার ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে।

উপজেলার প্রায় সবকটি গ্রামীণ সড়কে যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। অনেক কৃষকের মাড়াই করা ধান রোদে শুকাতে না পারায় ঘরেই পঁচে যাচ্ছে। অনেকের কাটা ধান বন্যায় ভেসে গেছে। হাস, মুরগী, গরু, ছাগল নিয়ে পড়েছেন চরম বিপদে।

উপজেলার কৃষক বশির আহমদ জানান, জমির কাটা ধান বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ঘরে ও রাস্তায় পানি থাকায় ধান শুকানোর জায়গা নেই। গরু ছাগল অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছি। গো-খাদ্যে বন্যার পানিতে পঁচন ধরেছে। চরম সংকটে পড়েছি। কিভাবে কি করবো বুঝে উঠতে পারছি না।

ব্যবসায়ী গোবিন্দ তারন জানান, বন্যায় ব্যাবসা বাণিজ্য হচ্ছে না প্রচুর টাকা লোন নিয়েছি। ব্যাংক এনজিও কর্মকর্তারা কিস্তি পরিশোধের জন্য চাপ দিচ্ছেন। ব্যাবসা না হলে কিভাবে লোন পরিশোধ করবো। উপজেলার সীমান্তবর্তী ইউনিয়নগুলো দূর্গম ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এসব এলাকার অনেক মানুষ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি ত্রাণ সহায়তার বাইরে।

এদিকে ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুনুর রহমান গত শনিবার দুপুরে সিংচাপইর ইউনিয়নে মটরসাইকেল যোগে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে গিয়ে এক্সিডেন্ট করলেও বন্যা পরিস্থিতিতে অসহায় মানু্ষের কথা বিবেচনা করে ইসলামপুর ইউনিয়ের ধনীটিলায় সরকারি ত্রাণ সহায়তা পৌঁছে দেন বানভাসি মানুষের মধ্যে। তিনি জানান, বন্যায় অনাহারে অর্ধাহারে কাটানো মানুষের চাইতে আমার এই এক্সিডেন্টের আঘাত কিছুই নয়। সরকারি ত্রাণ সহায়তা অব্যহত রয়েছে। আমি ভালো আছি। আপনারা দোয়া করবেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App