×

মুক্তচিন্তা

আর কোন উপায়ে রক্ষা পাবে পরিবেশ

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২২ মে ২০২২, ১২:৫৯ এএম

পৃথিবী আজ দূষণের ভারে ক্রমশ জর্জরিত। পরিবেশ আমাদের উজাড় করে দিয়েছে বায়ু, বিশুদ্ধ জল ও উর্বর ভূমি। কোলাহলমুক্ত পরিবেশ, বিশুদ্ধ বাতাস, স্বচ্ছ জল- এসব কিছু আমাদের আকাক্সক্ষা হলেও বর্তমান বাস্তব পরিবেশ অনুযায়ী আজ তা আকাশ-কুসুম গল্পের মতো। কেননা পুরো পৃথিবী আজ দূষণের কবলে। আমাদের আশপাশের পরিবেশ আর সেই সুন্দর ও সজীব নেই বরং পরিচয় দিচ্ছে রুক্ষতার। শুনে ইতস্তত হলেও ২০২১ সালে এক সমীক্ষায় বিশ্বের ৬ হাজার ৪৭৫টি শহরের বায়ুমানের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে; একটি দেশও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রত্যাশিত বায়ুমান বজায় রাখতে পারেনি। আর দুর্ভাগ্যজনক হলেও দূষণের মাত্রা বিচারে সবার উপরে আছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বাতাসে পিএম ২.৫-এর গড় পরিমাণ পাওয়া গেছে ৭৬.৯ মাইক্রোগ্রাম; যা সমীক্ষার ১১৭টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সংস্থার ওয়েবসাইট ‘প্রসেডিং অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্স’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণা অনুযায়ী বিশ্বে মহামারি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যার চেয়ে পরিবেশ দূষণের ফলে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। পরিবেশ দূষণ নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করে। সারা বিশ্বে পরিবেশ দূষণ কেবল বেড়েই চলছে। এর রোধ করার প্রয়োজনীয়তা প্রায় সব নাগরিকের মধ্যে দেখা গেলেও দায়িত্ব প্রকাশে সবাই নীরব। কারণ চোখে তো সবসময় দেখা যাচ্ছে না তাৎক্ষণিক প্রভাব। কিন্তু এটি প্রায় সব দিকেই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। বাংলাদেশে পরিবেশ দূষণের ফলে প্রতি বছর ৬৫০ কোটি ডলার ক্ষতি হচ্ছে, যা দেশের মোট জিডিপির ৩ শতাংশ। সম্প্রতি পরিবেশের এই দূষণের বিরূপ প্রভাব খুব প্রকটভাবে দেখা দিচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ‘দ্য ল্যানসেট কমিশন অন পলিউশন এন্ড হেলথ’-এর রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে এক বছরে ২৩ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে; ভারতের ৯৩ শতাংশ এলাকা দূষণের কবলে। ভারতে দেখা দিচ্ছে অস্বাভাবিক গরম, সৃষ্টি হচ্ছে ধূলিঝড়ের ও দেখা যাচ্ছে তীব্র দাবদাহ। সম্প্রতি ধূলিঝড়ের কবলে পড়েছে ইরাক, বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বাগদাদের বিমানবন্দর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট; শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে অনেকে। দূষণের ফলে পৃথিবীর আবহাওয়ায় দেখা যাচ্ছে অনেক পরিবর্তন, ক্ষতি হচ্ছে নদ-নদীর, মানুষের মাঝে দেখা যাচ্ছে নানারকম রোগ; আর এসব পরিবেশ দূষণেরই ফলাফল। কিন্তু এতসব কিছু আমাদের সামনে ঘটে গেলেও মানুষের মাঝে নেই কোনো সচেতনতা। কিছুক্ষণের জন্য সচেতনতার উদ্ভব হলেও দিনশেষে পরিবেশের প্রতি আবারো সেই নির্মমতা। একজনের পক্ষে কখনো এটি রোধ করা সম্ভব নয়, এর জন্য প্রয়োজন প্রতিটি নাগরিকের সচেতনতার, সরকারি হস্তক্ষেপ ও আইনের ব্যবহার। প্রতিটি মানুষ তাদের নিজস্ব স্থান হতে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে এবং পরিবেশের প্রতি সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে পরিবেশ দূষণ অনেকাংশেই রোধ করা সম্ভব। আর এর ব্যাঘাত ঘটলে ক্রমেই বিশ্বে সৃষ্টি হবে নানারকম দুর্যোগ, ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের বসবাসের স্থান এই পৃথিবী এবং বিলীন হয়ে যাবে গোটা মানব সভ্যতা। সাফা আক্তার নোলক শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। [email protected]

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App