আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৯ মে ২০২২, ০২:১৫ পিএম
বিশিষ্ট সাংবাদিক, গীতিকার, কলামিস্ট ও সাহিত্যিক আবদুল গাফফার চৌধুরী আর নেই। স্থানীয় সময় বুধবার রাতে ও বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার (১৯ মে) সকাল ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে লন্ডনের একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি। ৮৮ বছর বয়স্ক বর্ষীয়ান লেখক ও সাংবাদিক আব্দুল গাফফার চৌধুরী বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন।
‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ কালজয়ী এ গানের স্রষ্টার মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ।
বরেণ্য এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আবদুল গাফফার চৌধুরী ১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের উলানিয়ার চৌধুরীবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা হাজী ওয়াহিদ রেজা চৌধুরী ও মা জহুরা খাতুন।
১৯৫০ সালে আবদুল গাফফার চৌধুরী পরিপূর্ণভাবে কর্মজীবন শুরু করেন। এ সময়ে তিনি ‘দৈনিক ইনসাফ’ পত্রিকায় সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫১ সালে ‘দৈনিক সংবাদ’ প্রকাশ হলে গাফফার চৌধুরী সেখানে অনুবাদকের কাজ নেন।
তিনি স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পদক, ইউনেস্কো পদক, বঙ্গবন্ধু পুরস্কারসহ জাতীয় আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার লাভ করেন।
বরেণ্য এই সাংবাদিক মাসিক সওগাত, দিলরুবা, মেঘনা, ইত্তেফাক, আজাদ, জেহাদ ও পূর্বদেশসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে সপরিবারে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে আগরতলা হয়ে কলকাতা পৌঁছান। সেখানে মুজিবনগর সরকারের মুখপত্র সাপ্তাহিক জয়বাংলায় লেখালেখি করেন। এ সময় কলকাতায় আনন্দবাজার পত্রিকা ও যুগান্তরে কলামিস্ট হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর দৈনিক জনপদ বের করেন।
১৯৭৩ সালে আবদুল গাফফার চৌধুরী বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলজিয়ার্সে ৭২ জাতি জোট নিরপেক্ষ সম্মেলনে যান। দেশে ফেরার পর তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসার জন্য প্রথমে কলকাতা নিয়ে যান। সেখানে সুস্থ না হওয়ায় তাকে নিয়ে ১৯৭৪ সালের অক্টোবর মাসে লন্ডনে যান।
সাংবাদিকতার পাশাপাশি গল্প, উপন্যাস, স্মৃতিকথা, ছোটদের উপন্যাসও লিখেছেন তিনি। ‘চন্দ্রদ্বীপের উপাখ্যান’, ‘সম্রাটের ছবি’, ‘ধীরে বহে বুড়িগঙ্গা’, ‘বাঙালি না বাংলাদেশী’সহ তার প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা প্রায় ৩০। এছাড়া তিনি কয়েকটি পূর্ণাঙ্গ নাটক লিখেছেন। এর মধ্যে আছে ‘পলাশী থেকে বাংলাদেশ’, ‘একজন তাহমিনা’ ও ‘রক্তাক্ত আগস্ট’।
