×

আন্তর্জাতিক

সিবিআইয়ের ভয়ে মেয়েকে নিয়ে উধাও পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ মে ২০২২, ০৯:৫৯ পিএম

মৌখিক পরীক্ষা ছাড়া কীভাবে মেয়ে স্কুলে চাকরি পেতে পারে-সিবিআইয়ের সামনে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এরপরেই তিনি জলপাইগুঁড়ি থেকে মেয়েকে নিয়ে কলকাতায় রওনা দেন পরেশ অধিকারী। মঙ্গলবার তিনি মেয়েকে নিয়ে ট্রেনে উঠেছিলেন। কিন্তু ভোররাতে ট্রেনটি বর্ধমান আসার পর মন্ত্রীকে আর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে, সিবিআই সূত্রের দাবি, মন্ত্রীর সঙ্গে ফোনেও যোগাযোগ করতে পারেননি তারা। এর আগে, একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে রাজ্যের মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে। মেয়ের নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে মন্ত্রীকে সিবিআই-এর সামনে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জে নিজের বাড়ি থেকে মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে পৌঁছে পদাতিক এক্সপ্রেসে চড়েন মন্ত্রী। পদাতিক এক্সপ্রেস বুধবার সকাল ৬:৪৫ মিনিটে ১৩ নম্বর প্ল্যাটফর্মে শিয়ালদহ স্টেশনে পৌঁছায়। ট্রেন অ্যাটেনডেন্টের মতে, পরেশ অধিকারী এবং তার মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী ওই ট্রেনের ১ নম্বর সি কুপেতে ছিলেন। তবে ট্রেন অ্যাটেনডেন্ট দাবী করেছেন যে তারা মাঝপথে ট্রেন থেকে নেমে গেছে। কিন্তু নামলেন কোথায়? কলকাতার এক সংবাদ মাধ্যম একটি ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছে, সূত্র মারফত জানা গেছে, ভোর ৪ টে ৫২ মিনিট নাগাদ বর্ধমান স্টেশনের ৫ নং প্ল্যাটফর্মে এসে থামে পদাতিক এক্সপ্রেস। ৪ টে ৫৬ মিনিট নাগাদ প্ল্যাটফর্মে দেখা যায় মন্ত্রীকে। ৫ টা ৪ মিনিটে বর্ধমান স্টেশন থেকে একটি সাদা রঙের স্করপিও করে বেরিয়ে যান মন্ত্রী। এদিকে, পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীকে বেঅআইনিভাবে নিয়োগ করার মামলায় মঙ্গলবার সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চ। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানির জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন পরেশ অধিকাররী। ডিভিশন বেঞ্চ সেই মামলা শোনেনি। এরফলে সিবিআই হাজিরা না দেয়ায় মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর বিরুদ্ধে এখন আদালত অবমাননার মামলা শুরু হবে। পরেশ অধিকারী ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে ২০১৮ সালে তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর মেয়ের নাম কয়েকদিনের মধ্যে এসএসসির তালিকায় স্থান পেয়েছে বলে জানা গেছে। একই বছরের নভেম্বরে পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা চাকরিতে যোগ দেন। নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যের বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, তিনি সুবিধাবাদী রাজনীতি করতে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। পার্থ চ্যাটার্জির সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছিল। পরেশ অধিকারী বলেছিলেন আমার মেয়েকে চাকরি দেয়া উচিৎ। তার নাম ছিল ওয়েটিং লিস্টে। তালিকায় ছিল না। সবাই অভিযোগ করেছে। আমিও করেছি। জানা গেছে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান শিক্ষক নিয়োগের জন্য স্কুল পরিষেবার মেধা তালিকাকে কেন্দ্র করে বিতর্ক শুরু হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে স্কুল পরিষেবায় নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথমে মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। পিডিএফ ফরম্যাটে মেধা তালিকা প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক। পরে এসএসসির ওয়েবসাইটে দেখা যায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের তফসিলি জাতিদের জন্য সংরক্ষিত আসনের অপেক্ষমাণ তালিকায় ববিতার নাম দ্বিতীয় নম্বরে নেমে গেছে। প্রথম স্থানে রয়েছে পরেশ অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর নাম। উল্লেখ্য, একদিন আগেও তালিকায় নাম ছিল না। একই সঙ্গে অপেক্ষমাণ তালিকায় ২০ নম্বরে থাকা ববিতার ২১ নম্বরে উঠেছেন। সবার চাকরি পাওয়ার কথা জানালেও চাকরি পাননি ববিতা। এরপর শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App