×

জাতীয়

'নাশকতার ষড়যন্ত্রে’ চট্টগ্রামে জামায়াতের ৪৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ মে ২০২২, ০৬:১৬ পিএম

'নাশকতার ষড়যন্ত্রে’ চট্টগ্রামে জামায়াতের ৪৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

সোমবার রাতে চট্টগ্রামে জামায়াতে ইসলামীর ৪৯ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছবি: ভোরের কাগজ

চট্টগ্রাম নগরীতে একটি রেস্তোঁরায় অভিযান চালিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ৪৯ নেতা-কর্মী-সমর্থক ও অর্থ যোগানদাতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত সোমবার (১৬ মে) রাতে নগরীর টেরিবাজার এলাকার একটি হোটেল থেকে তাদেরকে আটক করা হলেও মঙ্গলবার ১৭ মে গণমাধ্যমের কাছে তা প্রকাশ করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, গ্রেপ্তার হওয়া ৪৯ জনের মধ্যে ৯ জন জামায়াত ইসলামীর বিভিন্ন পদে থাকা সক্রিয় নেতা। এরা গত কয়েক বছর ধরে আড়ালে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করলেও সাম্প্রতিক সময়ে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও ১১৬ জন আলেমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করাকে পুঁজি করে চট্টগ্রাম জুড়ে নাশকতার মাধ্যমে তারা প্রকাশ্যে আসার পরিকল্পনা করছিলেন।

সেই পরিকল্পনা প্রণয়নে সোমবার রাতে নগরীর কোতোয়ালী থানার টেরিবাজারে ‘আল বয়ান’ নামে একটি ভাতের হোটেলে তারা বৈঠকে বসেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। টেরিবাজার ও বক্সিরহাট এলাকার বেশ কিছু ব্যবসায়ী ও স্থানীয় অধিবাসীরা জানিয়েছেন, নগরীর অন্যতম ব্যবসায়িক কেন্দ্র এই এলাকাটিতে গত কয়েক বছর ধরে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মী ও ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত কৌশলে তাদের ঘাঁটি গাড়তে সক্ষম হয়েছে। জামায়াতের যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সারাদেশে সবার কাছে চিহ্নিত ছিল সেগুলো বর্তমানে নানা নজরদারিতে থাকায় কৌশলে চট্টগ্রামের টেরিবাজার ও বক্সিরহাট এলাকায় তারা তাদের আস্তানা গেড়েছে। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীদেরকে নানাভাবে আর্থিক সহায়তাসহ আরো অন্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গ্রেফতার হওয়া ৯ নেতাকর্মী ছাড়াও ৪০ জনের মধ্যে অর্থ যোগানদাতা এবং সক্রিয় কর্মী-সমর্থক আছেন।

নগর পুলিশের কোতোয়ালী জোনের সহকারী কমিশনার মুজাহিদুল ইসলাম জানান, গোপন সূত্রে বৈঠক চলাকালে একটি ভিডিও ফুটেজ চলে আসে পুলিশের কাছে। সেই ভিডিও ফুটেজ দেখে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই হোটেল ঘিরে ফেলে। এসময় ৪৯ জনকে আটক করা হয়। পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় আরও ১৫ জন।

গ্রেফতার জামায়াতের পদবিধারী ৯ নেতা হলেন- কোতোয়ালী থানা শাখার আমীর ফরিদুল আলম (৪৭), একই থানার দক্ষিণ শাখার প্রধান সমন্বয়কারী ফরিদ উদ্দিন (৪৪), বায়তুল মাল সম্পাদক নুরুল কবির (৬৫), দফতর সম্পাদক এমদাদ উল্ল্যাহ (৩৪), নগরীর বক্সিরহাট শাখার সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন খালেদ (৩৫), টেরিবাজার শাখার সভাপতি হুমায়ুন কবির (৫০), কাটাপাহাড় শাখার সভাপতি রাশেদুল করিম (৩৪) ও সহ সভাপতি তাজুল ইসলাম (৩৮) এবং ইমাম ম্যানশন শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ইসরাফিল (৫০)।

এছাড়া টেরিবাজারের কাপড় ব্যবসায়ী জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা আবুল মনছুর (৫০) ও ৩৯ জন কর্মী-সমর্থককে বৈঠক থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল কবীর।

তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জঙ্গি অর্থায়ন ও সাম্প্রদায়িকতা বিনষ্টের অভিযোগে ১১৬ জন আলেমের বিরুদ্ধে দুদকে সম্প্রতি যে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে, সেটাকে ইস্যু বানিয়ে মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্নস্থানে ঝটিকা মিছিল ও নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েছিল জামায়াত। কোতোয়ালী থানা এলাকায় নাশকতা সংঘটনের বিষয়ে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে তারা বৈঠকে বসেছিলেন। গত কয়েক বছর ধরে চট্টগ্রামে জামায়াত আড়ালে থেকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। প্রকাশ্যে এসে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালানোর উদ্যোগ নেয়ার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি।’

গ্রেফতার হওয়া ৪৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে জানিয়ে ওসি জাহিদুল কবীর বলেন, তাদেরকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা গেলে আরো অনেক তথ্য জানা যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App