×

শিক্ষা

চার মাস পর ঢাকা ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে নতুন চেয়ারম্যান

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ মে ২০২২, ০৫:৩৮ পিএম

ঢাকা ও চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে সরকার নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে। প্রায় চার মাস পর ফাঁকা এই পদে নিয়োগ দিল সরকার। শিক্ষা প্রশাসনে আরো চারটি শীর্ষ পদ ফাঁকা রয়ে গেছে। পছন্দের লোক না পাওয়ায় পদগুলোতে নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না বলে শিক্ষা প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে। ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চলছে শিক্ষা প্রশাসনের এসব দপ্তর।

সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, শিক্ষা প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ পদ দীর্ঘদিন ধরে ফাঁকা থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোর কাজে স্থবিরতা দেখা গেছে। চলতি দায়িত্ব দিয়ে দায়সারাভাবে চালানো হচ্ছে দৈনন্দিন কাজ। এতে প্রতিষ্ঠানগুলোর শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সোমবার (১৬) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে পৃথক আদেশ জারি করে বলা হয়েছে, ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। তিনি এর আগে ঢাকা বোর্ডের সচিব পদে কর্মরত ছিলেন। সর্বশেষ তিনি বোর্ডাটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছিলেন। অপর আদেশে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের অধ্যাপক মুস্তফা কামরুল আখতারকে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদে পদায়ন করা হয়েছে। আগের চেয়ারম্যান অবসরোত্তর ছুটিতে গেলে পদটি গত কয়েকমাস ধরে শুন্য ছিল।

শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি দায়িত্বে যারা আছেন তারা শুধু দৈনন্দিন কাজেই মনোযোগী হন। কারণ তাদের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা থাকে না। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন সেবাপ্রার্থীরা। একটি প্রতিষ্ঠানের চলতি দায়িত্বে থাকা এক কর্মকর্তা বলেন, চলতি দায়িত্বে থাকলে রুটিন কাজ ছাড়া নীতিনির্ধারণী কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব না। কারণ এর পরে কে আসবে, তিনি এই সিদ্ধান্ত পছন্দ করেন কি না, আর না করলে কোনো ঝামেলায় পড়তে হয় কি না, এসব বিষয় থাকে। ফলে অনেক সিদ্ধান্ত আছে, যা কেবল পূর্ণ নিয়োগ পেলেই গ্রহণ করা সম্ভব। এর ফলে আদতে প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হওয়ার পর গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব ছাড়েন অধ্যাপক নেহাল আহমেদ। তিনি নতুন পদে নিয়োগ পান চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি, কিন্তু তিনি তাতে যোগ দেয়ার আগে দুই সপ্তাহেও নতুন কোনো চেয়ারম্যানকে বেছে নেয়া হয়নি। প্রায় চার মাস ধরে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সচিব তপন কুমার সরকার নিজের দায়িত্বের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে বোর্ড প্রধানের ভূমিকা পালন করছেন। এ প্রতিষ্ঠানটি ঢাকার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ হিসেবে কাজ করে। চার মাস পর সোমবার ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান পদে নিয়োগ দিল সরকার। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ফরহাদুল ইসলাম অবসরে যান গত মার্চে। এর পর থেকে চেয়ারম্যানের রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন এনসিটিবি সদস্য (শিক্ষাক্রম) মো. মশিউজ্জামান। এই সংস্থাটি প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাক্রম প্রণয়ন করে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের বিনা মূল্যের বইও দেয়া হয় এ সংস্থার মাধ্যমে। চেয়ারম্যান পদ ছাড়াও এনসিটিবির আরও দুটি সদস্য পদ খালি এক বছরের বেশি সময় ধরে। সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী এ সংস্থায় চেয়ারম্যান ছাড়াও চারজন সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। তারা অর্থ, পাঠ্যপুস্তক, শিক্ষাক্রম ও প্রাথমিক শিক্ষাক্রম বিভাগের দায়িত্ব পালন করবেন। চার সদস্যের মধ্যে এখন দুজন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। এর মধ্যে একজন মো. মশিউজ্জামান (শিক্ষাক্রম) ও অন্যজন এ কে এম রিয়াজুল হাসান (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম)। অপর দুটি সদস্য পদ শূন্য থাকায় এ দুজন পদগুলোতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। অর্থাৎ চারজনের কাজের ভার এখন পড়েছে দুইজনের কাঁধে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে সনদ প্রদান ও সুপারিশ করে থাকে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ এনটিআরসিএ। সংস্থাটির একটি সদস্য পদও এক বছরের বেশি সময় ধরে ফাঁকা। সাংগঠনিক কাঠামো অনুযায়ী, এ প্রতিষ্ঠানে চেয়ারম্যানসহ তিনটি সদস্য পদ রয়েছে, কিন্তু এখন দুইজন মিলে পালন করছেন তিনজনের দায়িত্ব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App