×

জাতীয়

হেফাজতিদের সহায়তায় পুলিশ ও জেলা প্রশাসন!

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২২, ০৮:৪১ এএম

হেফাজতিদের সহায়তায় পুলিশ ও জেলা প্রশাসন!

দুদক কার্যালয়ে গত বুধবার শ্বেতপত্র হস্তান্তর করেন গণতদন্ত কমিশনের নেতারা -ফাইল ছবি

২০২১ সালের ২৬ মার্চ ছিল শুক্রবার। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া কর্মসূচি শেষ হয় জুমার আগেই। জুমার নামাজের সমাবেশের সুযোগ নিয়ে ‘হাইয়া আলাল জিহাদ’ স্লোগানে রাষ্ট্রদ্রোহী তাণ্ডব চালায় হেফাজতিরা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন উপলক্ষে হেফাজতে ইসলামের ডাকা প্রতিরোধ সভা এবং হরতালের জের ধরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া। তিন দিনব্যাপী বিএনপি-জামায়াত-শিবির-হেফাজত এবং সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর হামলা, অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাণ হারান ১২ জন। পুলিশসহ আহত হন ২০০।

হেফাজতের এই তাণ্ডব এবং সাম্প্রদায়িক সংঘাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম এবং সুনামগঞ্জে পুলিশ প্রশাসনের দিকে আঙুল উঠেছে। ভুক্তভোগীদের মতে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সতর্ক থাকলে এবং যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে এ ধরনের ঘটনা এড়ানো যেত। ঘটনার নির্মমতা কম হতো। ‘বাংলাদেশে মৌলবাদী-সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের ২০০০ দিন’ শিরোনামে গণতদন্ত কমিশনের শ্বেতপত্রে এই চিত্র উঠে এসেছে।

থানা থেকে বাইরে যেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধ আছে : গত বছরের ১৭ অক্টোবর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সার্কিট হাউসে গণকমিশনের তদন্ত ও গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৩৩ জন ভুক্তভোগী সাক্ষ্য দেন। সাক্ষ্যে মৌলবাদীদের তাণ্ডবের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরবতার দিকে আঙুল তুলেছেন সংসদ সদস্য র আ উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ অনেকেই।

পুলিশের সহায়তা চেয়ে পাননি বলে তদন্ত কমিটির কাছে অভিযোগ করেছেন কেউ কেউ। লিখিত সাক্ষ্যে র আ উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অসহায় দর্শকের মতো শুধুই দেখে গেছে। কোথাও প্রতিহত করার চেষ্টা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তিনি বলেন, ২৮ মার্চ রবিবার সত্যিই এক নারকীয় দিন। দুষ্কৃতিকারীরা পৌরসভায় আগুন দিল, জেলা ক্রীড়া সংস্থায় আগুন দিল, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেল। কেউ সহায়তার জন্য আসেনি। অদূরেই ফায়ার সার্ভিস, একফোঁটা পানিও ছিটায়নি। সাহায্য চাওয়া সত্ত্বেও তারা সাহায্য করতে অপারগতা জানায়। পুড়িয়ে দেয়া হলো উন্নয়ন মেলা, শিল্পকলা একাডেমি, আওয়ামী লীগ নেতা আল মামুন সরকারের বাড়ি। ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ভাষা চত্বর, ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সংগীতাঙ্গন, উপজেলা ভূমি অফিস, সরকারি গ্রন্থাগার, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্যালয়, মেয়রের বাসভবন, কালীবাড়ী, আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। যাদের বাড়িঘরে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে, তারা সাহায্য চেয়েও পায়নি। আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে নিয়োজিত কেউ সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এই সময়ে পুলিশের ভূমিকা কী ছিল তা খতিয়ে দেখা দরকার বলেও উল্লেখ করেন এই সংসদ সদস্য।

শিক্ষক মনির হোসেন বলেন, আমার সন্তান ৯৯৯ নম্বরে বারবার ফোন দিয়েও সাড়া পায়নি।

একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. শাহিন শিকদার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২৬ মার্চের আগে থেকেই তারা গোপনে গোপনে সংগঠিত হতে থাকে। এ বিষয়ে পুলিশ ও বিভিন্ন এজেন্সির দায়িত্বপ্রাপ্তদের অবহিত করলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। ২৮ মার্চ আশুগঞ্জ বাজারের কাচারি বীথিকায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালটি লোহার রড দিয়ে যখন ভাঙছিল, আমি আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে ফোন করলে তিনি সেখানে যেতে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং থানা থেকে পুলিশকে বাইরে যেতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিষেধ আছে বলে জানান।

ওয়ার্কার্স পার্টির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি এডভোকেট কাজী মাসুদ আহমেদ বলেন, ২৮ মার্চও শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল। নারকীয় তাণ্ডব শুরু হওয়ার ঠিক পূর্ব মুহূর্তে তাদের প্রত্যাহার করা হয়। কোথাও কোনো সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তি রক্ষার জন্য এগিয়ে আসেনি তারা। কোনো কোনো জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আক্রান্ত হয়েছে, তাদের সাহায্য করার জন্যও পুলিশ মুভ করেনি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক এডভোকেট আবদুর নূর বলেন, ওই সময় জেলা প্রশাসনের কর্মতৎপরতাও শহরবাসীর দৃষ্টিগোচর হয়নি। ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ সংগীতাঙ্গনের সাধারণ সম্পাদক ও চ্যানেল আইর জেলা প্রতিনিধি মনজুরুল আলম বলেন, পোড়া গন্ধ আসে পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে ও ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁ সংগীতাঙ্গন থেকে। তিন দিন আগুন জ¦লছিল এখানে কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের কোনো কর্মী আগুন নেভাতে আসেনি। বারবার ফোন করেও কোনো সহযোগিতা পাইনি।

হিন্দু-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সভাপতি দিলিপ কুমার নাগ বলেন, ২৬ মার্চ আমার বাড়িতে ইটপাটকেল ছুড়ে। ইউএনওকে ফোন করি, তিনি বলেন, আমরা বিপদে আছি। আপনারা নিজেরা নিজেকে রক্ষা করুন। চেয়ারম্যানকে নিয়ে আমরা জনপ্রতিরোধ করি। আমি বাইরে এসে দেখি পুলিশ নিষ্ক্রিয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জনগণের জানমাল রক্ষার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। সাবেক কাউন্সিলর মকবুল হোসেন বলেন, ২৬ মার্চ আনুমানিক ৩টার দিকে বিএনপি-জামায়াত-হেফাজত দেশীয় অস্ত্র, চায়নিজ কুড়াল নিয়ে সরকারি স্থাপনায় হামলা করে। শুনেছি বিভিন্ন স্থাপনায় তাদের আগুন দেয়ার পরিকল্পনা ছিল। আমি বাধা দিতে গেলে পুলিশ আমাকে গ্রেপ্তার করে। নিরাপরাধ অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন পুলিশের হাতে। আইনজীবী শামীম হোসেন বলেন, ওই সময় প্রশাসনের ভূমিকা ছিল রহস্যময়। পুলিশের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। তাণ্ডবকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনো ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ আত্মরক্ষায় বেশি ব্যস্ত ছিল।

শাল্লার ঘটনায় পুলিশের ‘দায় ছিল শতভাগ’ : ২০২১ সালের ১৮ অক্টোবর গণতদন্ত কমিশনের প্রতিনিধি দল সরজমিন পরিদর্শন করে সুনামগঞ্জের শাল্লায়। এরপর ২৫ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলা অডিটোরিয়ামে দিনব্যাপী গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিখিতভাবে ৬৩ জন এবং মৌখিকভাবে আরো ১২ জন অংশ নেন। শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের বাসিন্দা আশিস চক্রবর্তী বলেন, পুলিশ যদি জোরালো পদক্ষেপ নিত তাহলে আমাদের এত ক্ষয়ক্ষতি হতো না। একই গ্রামের বাসিন্দা রঞ্জনা রানী দাস বলেন, এদেশে কি আইন-আদালত নেই? কোনো বিচার কি নেই? এসব অন্যায়ের বিচার কি আমরা পাব? শাল্লার নোয়াগাঁওয়ের বাসিন্দা হরিপদ দাস বলেন, এটা কেমন দেশে বসবাস করি যেখানে ক্ষতিগ্রস্ত লোকজন বিচার পায় না? পুলিশের কাছে গেলে মামলা না নিয়ে টালবাহানা করে? হামলাকারীরা আক্রমণ করে নিরাপদে এলাকা ত্যাগ করে পালিয়ে যেতে কোনো সমস্যা হয় না কেন? লোকেশ দাস বলেন, হেফাজত অনুসারীদের সভা-সমাবেশের খবর আমরা মুঠোফোনে ও মৌখিকভাবে পুলিশকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু নিরাপত্তা দেয়া তো দূরের কথা হামলার আগে তারা একবারের জন্য গ্রামে আসেনি। ঘটনার পর তাদের তৎপরতা বাড়ে। গ্রামে র‌্যাব এবং পুলিশের টহল জোরদার করা হয়। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা আন্তরিক হলে এ ঘটনা প্রতিহত করা যেত। পুলিশের নির্দেশনা অনুযায়ী ঝুমন দাশকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে ছিলাম আমরা। এরপর পুলিশ থেকে বলা হয়েছিল হেফাজতকর্মীরা গ্রামে আক্রমণ করবে না। এর বাইরে উত্তেজনা প্রশমনে তারা কিছুই করেনি। নিতাই বাবু বলেন, সংখ্যালঘুদের ওপর যে তাণ্ডব চালিয়েছে তার জন্য পুলিশের অবহেলা ছিল শতভাগ। অনিল চক্রবর্তী বলেন, হামলা হতে পারে জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ; অথচ তাদের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল হামলা হবে না গ্রামে। শাল্লা উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের অপসারণ করে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বিশ্বরূপ দাস।

যোগেন্দ্র দাস বলেন, স্থানীয় পুলিশ যথেষ্ট সময় পেলেও যথাসময়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেয়নি। দীপক দাস বলেন, হামলার পরে পুলিশ গ্রামে এসে আমাদের আশ্বস্ত করেছে কিন্তু প্রশাসনের এমন আশ্বাসের আস্থা রাখতে পারছি না আমি। কারণ অতীতে সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িতদের বেশির ভাগেরই বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

চট্টগ্রামেও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন : ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক সংখ্যালঘুদের মন্দির ও ঘরবাড়িতে আক্রমণ এবং ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব পরিস্থিতিতে পুলিশের ব্যর্থতায় হতাহতের ঘটনাসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। হামলায় দেশ-বিদেশে ইন্ধন জুগিয়েছে তা নিয়ে বক্তব্য উঠে এসেছে তদন্ত কমিশনের শ্বেতপত্রে। মূলত, ওই সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার শুরুটা হয়েছিল কুমিল্লা শহরের নানুয়া দীঘির পাড়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষে অস্থায়ীভাবে করা একটি পূজামণ্ডপ থেকে। ১৩ অক্টোবর সকালে পূজামণ্ডপে কুরআন অবমাননার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রথমে কুমিল্লা শহরে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা দেখা দেয়। সে সময় চারটি মন্দির-পূজামণ্ডপে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয়। ঘটনার জের ছড়িয়ে পড়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন উপজেলায়। ১৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের চট্টগ্রাম শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে অংশ নেন ১৩ জন।

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি প্রফেসর রঞ্জিত কুমার দে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের নজরে রাখা দরকার ছিল। তাদের এই উদাসীনতার কারণে এই নাটকীয় কাণ্ডের কোনো সুরাহা হয়নি। কালের কণ্ঠের বাঁশখালী উপজেলা প্রতিনিধি উজ্জ্বল বিশ্বাস বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের একান্ত সচিব ইফতিখার উদ্দিন আরাফাতের ভাই জিয়াউদ্দিন ফাহাদ একজন ভয়ংকর জঙ্গি। তার হাত দিয়েই চট্টগ্রাম বিভাগের প্রতিটি উপজেলায় ইউএনওর তালিকা হয়। সেই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছে। এই জঙ্গি এখন কাতারের দোহায় পলাতক।

এছাড়া বাঁশখালীতে ২০১৩ সালের নাশকতার ঘটনায় ওএসডি হওয়া ইউএন শাব্বির ইকবাল চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। তার চার ভাই চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের বড় নেতা। তাদের শেল্টার দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। বিষয়টি তদন্ত করলে নাশকতার পুরো রহস্য বের হবে। পেকুয়া সুশীল পাড়া পূজা পরিষদের সভাপতি কুমার কাঞ্চন মনি বলেন, আমাদের ওপর হামলা শুরু করলে ডিউটি অফিসার, ওসি এদের ফোন করলে কোনো সাড়া পাইনি। ইউএনও, এসপি, এডিসি সবাইকে ফোন করি। সবাই দেখছি বলে কিন্তু কোনো সহযোগিতা করেননি।

তদন্ত কমিশনের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ ভোরের কাগজকে বলেন, আমরা চট্টগ্রাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া এবং সুনামগঞ্জের গণশুনানিতে পুলিশের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকার কথা শুনেছি। তারা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন করেননি- এমনটাই সাক্ষ্যে উঠে এসেছে। আমরা ভুক্তভোগীদের বক্তব্য তুলে ধরেছি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App