×

সারাদেশ

গোয়াইনঘাটে আকষ্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে ফসল ও রাস্তাঘাট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২২, ০২:৪৯ পিএম

গোয়াইনঘাটে আকষ্মিক বন্যায় তলিয়ে গেছে ফসল ও রাস্তাঘাট

সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকা। ছবি: ভোরের কাগজ

গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ভেসে গেছে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি। ফলে উপজেলা জুড়ে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, টানা পাহাড়ি ঢলে ইতিমধ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলার সঙ্গে সিলেট জেলা শহরের যোগাযোগের অন্যতম প্রধান মাধ্যম সারি-গোয়াইনঘাট রাস্তার বিভিন্ন অংশ পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে সিলেটের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন গোয়াইনঘাটবাসী। বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে গোয়াইনঘাট- রাধানগর রাস্তাও।

এদিকে পিরিজপুর সোনার হাট রাস্তার নির্মাণাধীন সেতুর বিকল্প চলাচলের রাস্তাটি তলিয়ে যাওয়ায় গোয়াইনঘাট সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন গোয়াইনঘাট সদর ও পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের মানুষ। মূল সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় বেশ কয়েকদিন থেকেই একটি অস্থায়ী বেইলী ব্রিজের দাবি ছিল এলকাবাসীর।

উপজেলার ৪নং লেঙ্গুরা ইউনিয়নের বেশ কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এক মাসের ব্যবধানে দুইটি বন্যায় তাদের বেশিরভাগ বোরো ফসল তলিয়ে গেছে। তাদের সারা বছরের চলার একমাত্র অবলম্বন এই বোরো ফসল তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপাক খাদ্য সংকটে রয়েছেন তারা।

ইউনিয়নের প্রায় ৩০ শতাংশ পাকা ধান তলিয়ে গেছে, তলিয়ে গেছে অনেক বসত বাড়িও। যার ফলে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। বোরো মৌসুমের শুরুতে এক দফা আকস্মিক বন্যায় ফসল তলিয়ে যাবার পরও অবশিষ্ট ধান নিয়ে আশায় বুক বেঁধে ছিলেন কৃষকরা। এবারের বন্যায় সেই আশাটুকুও তলিয়ে গেছে।

বন্যার ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার রায়হান পারভেজ রনি জানান, কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হলেও আমাদের নিম্নাঞ্চলের বোরো ধান ইতিমধ্যে উঠে গেছে। চলতি বন্যায় কিছু এলাকার পাকা ধানের পাশাপাশি আউশ ধানের বীজতলা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। পানি এভাবে বাড়তে থাকলে বীজতলা ডুবে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

এদিকে দশটি ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যস্থা একরকম স্থবির হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন প্রায় হাজার দশেক মানুষ। খাদ্য সংকটের পাশাপাশি নিরাপদ পানীয় জলের জন্য সমস্যার সম্মূখীন হচ্ছেন এলাকার নিম্ন আয়ের লোকজন।

তবে ত্রাণ বিতরণ করার সবরকমের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান। ভোরের কাগজের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, আমাদের এই এলাকাটি মূলত ফ্লাশ ফ্লাড (আকস্মিক বন্যা) কবলিত এলাকা। এখানে হঠাৎ করে কয়েক ঘন্টায় দ্রুত পানি বেড়ে যায়। আবার কয়েক ঘন্টা বৃষ্টি না হলে পানি নেমেও যায়।

এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকটি এলাকার সড়ক তলিয়ে গিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় রয়েছে। আমরা ত্রাণ বিতরণের সব রকমের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। হয়তো বিকেল থেকে ত্রাণ বিতরণ শুরু হবে।

এছাড়া সার্বক্ষণিক পরিস্থিতিতে নজর রাখছেন বলে জানান তিনি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App