×

জাতীয়

গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে গণতন্ত্র বিকশিত হয় না (ভিডিও)

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২২, ০৮:৫৯ পিএম

গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে গণতন্ত্র বিকশিত হয় না (ভিডিও)

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস: ডিজিটাল নজরদারিতে সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় উপস্থিত বক্তারা। ছবি: ভোরের কাগজ

বিদ্যমান ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের কারণে সাংবাদিকতা বিকশিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই আইনে অন্তত ১৪টি ধারায় অজামিনযোগ্য বিধান রাখা হয়েছে। গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করা এ আইন সভ্য সমাজে চলতে পারে না, আর গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে কখনো গণতন্ত্র বিকশিত হয় না। গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে গণতন্ত্র বিকশিত হওয়ার পথ রুদ্ধ করা মুক্তিযুদ্ধদের অবস্থানের পরিপন্থি। এছাড়া এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নও সম্ভব নয়। এ অবস্থায় উদ্বিগ্ন সাংবাদিক সমাজ অবিলম্বে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনসহ মুক্ত গণমাধ্যম চর্চার বিরুদ্ধে সব আইন বাতিল চায়।

শনিবার (১৪ মে) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সম্পাদক পরিষদ আয়োজিত ‘বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস: ডিজিটাল নজরদারিতে সাংবাদিকতা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা।

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি দি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এত আইন কেন? ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের মাধ্যমে সাংবাদিকদের হয়রানি, নির্যাতন করা হচ্ছে। এসব আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের নিয়ন্ত্রণ করার পথ তৈরি করা হয়েছে। আমরা কি এমন করি? যার জন্য আমাদের হাত-পা বেঁধে দিতে হবে। ডিজিটাল আইনের কারণে সাংবাদিকতা বিকশিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই আইনের ১৪টি ধারায় অজামিনযোগ্য বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু আমরা কি এমন অপরাধ করি, আমরা কেন জামিন পাবো না? সরকার বলছে, এই আইনটা দুষ্কৃতিকারীদের নিয়ন্ত্রণের জন্য। তাহলে তারা (সরকার) দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে এই আইন প্রয়োগ করুক। আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এ আইন থেকে সাংবাদিকদের উহ্য রাখতে হবে। গণমাধ্যমের হাত-পা বেঁধে যেমন গণতন্ত্র বিকশিত হবে না তেমনি গণতন্ত্র বিকশিত না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।

সম্পাদক পরিষদের সহ-সভাপতি ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ডিজিটাল নজরদারিতে সাংবাদিকতা হলে সেটাকে কি মুক্ত গণমাধ্যম বলা হবে? আমি যদি সারাক্ষণ নজরদারির মধ্যে থাকি, আমার মাথায় যদি থাকে আমি নজরাদরির মধ্যে আছি, তাহলে কিভাবে মুক্ত সাংবাদিকতা হবে? সাংবাদিকতা বিকশিত হওয়ার পথ রুদ্ধ হয়, এরকম তিনটি আইন এই মুহুর্তে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, শুনতে পাচ্ছি আরো একটি নতুন আইন আসছে। এত আইনের মধ্যে কীভাবে মুক্ত সাংবাদিকতা হবে। দেশে মুক্ত চিন্তা, মুক্ত বুদ্ধি ও মুক্ত সংস্কৃতির চর্চা দরকার। কিন্তু এ মুহুর্তে দেশে সেই অবস্থা আছে কি না? এ অবস্থায় ডিজিটাল অবরোধের যুগে টিকে থাকতে হলে আমাদের একযোগে এক জায়গায় দাঁড়াতে হবে। অন্যথায় এই সঙ্কটের সমাধান হবে না।

সম্পাদক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, সেলফ সেন্সরশিপ যেখানে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়েছে, সেখানে কি আর বলার আছে। এ ধরনের গণমাধ্যম রুদ্ধ আইনগুলো থেকে বাঁচতে সম্মিলিত উদ্যোগ নিতে হবে। এসব আইন নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে বিতর্ক চলছে। এ বিতর্ক আর নয়। এ অবস্থা থেকে মুক্ত হতে হলে সম্মিলিত প্রয়াস দরকার, না হলে আমরা মুক্ত হতে পারবো না।

সংবাদপত্র মালিকদের সংগঠন নোয়াবের সভাপতি সমকাল প্রকাশক এ. কে. আজাদ বলেন, মালিকপক্ষ ও সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধ হলে বিদ্যমান সমস্যা সমাধান ও দাবি আদায় সম্ভব। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন। আমরা সত্তর-আশির দশকে দেখেছি, সাংবাদিকরা মেধা, দক্ষতা ও সাহসিকতা দিয়ে নেতৃত্ব গড়ে তুলেছেন। এখনকার সাংবাদিকদের মধ্যে সেটার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।

সম্পাদক পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে পরিষদের সহ-সভাপতি দি নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজের (একাংশ) সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, বিএফইউজের (একাংশ) সভাপতি এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের (একাংশ) সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, ডিইউজের (একাংশ) সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন, ডিআরইউর সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আজকের পত্রিকার সম্পাদক গোলাম রহমান, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেনসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

https://youtu.be/vCMLoNTBAV4

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App