×

মুক্তচিন্তা

প্রবৃদ্ধি টেকসইকরণে নীতি সহায়তার সমন্বয় হোক

Icon

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১৩ মে ২০২২, ০১:০৮ এএম

বাংলাদেশের অর্থনীতি কৃষি প্রধান। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের ২৯ শতাংশ আসে কৃষি ও তদসংশ্লিষ্ট খাত থেকে। সমতল ভূমির মোট জমির ৯২ শতাংশ ব্যবহার হয় কৃষিকাজে আর কৃষিকে অবলম্বন করে জীবিকা নির্বাহ করে ৬৪ শতাংশ মানুষ। কৃষি খাতে দেশের সিংহভাগ ভূমি ব্যবহৃত এবং এ খাতেই কর্মসংস্থানের অন্যতম উৎস। খাদ্য ঘাটতির দেশে দানাদার খাদ্যে এসেছে স্বয়ংসম্পূর্ণতা। কৃষিপণ্যের রপ্তানি ছুঁয়েছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক। তবে এ সাফল্য কৃষি খাতের প্রারম্ভিক সাফল্য। এ প্রেক্ষিতে কৃষি ব্যবস্থাকে আধুনিকীকরণ, উচ্চ ফলনশীল শস্যের উৎপাদনে সহায়তাকারী বীজ, উপকরণ, সার ইত্যাদি সরবরাহ, কৃষককে সহজ শর্তে মূলধন জোগান এবং তার উৎপাদিত পণ্য ন্যায্য মূল্যে বিপণন ব্যবস্থা তদারকি করে কৃষি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং কৃষি গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কার্যক্রম জোরদার করণের মাধ্যমে কৃষিকেই দেশের জিডিপির অন্যতম জোগানদাতা হিসেবে পাওয়া গিয়েছে। একই সঙ্গে কৃষিনির্ভর শিল্প প্রতিষ্ঠা এবং কৃষির উন্নয়নকামী পদক্ষেপ; নদীমাতৃক দেশে পানিসম্পদের সদ্ব্যবহার এবং নদীশাসন ও নৌযোগাযোগ; অকাল বন্যা কিংবা জলোচ্ছ¡াস প্লাবন থেকে কৃষি ভূমি তথা ফল-ফসলকে রক্ষার স্থায়ী সুরক্ষা, জনবহুল জনপদের জনশক্তিকে সম্পদে রূপান্তর এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দেশীয় কাঁচামালের উপযুক্ত ব্যবহার নিশ্চিত করে দেশজ সম্পদের সমাহার ঘটিয়ে উন্নয়ন উদ্যোগ গ্রহণে স্থানীয় সঞ্চয়ের বৃদ্ধি ও বিনিয়োগ, ব্যক্তি তথা বেসরকারি খাতের বিকাশ, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সম্ভাবনার বিকাশ ছিল বাংলাদেশের অর্থনীতি উন্নয়নের অন্যতম, বাঞ্ছিত ও কাক্সিক্ষত উপায়। স্বয়ম্ভর স্বদেশ এবং এর অর্থনীতির ভিত গড়তে সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণের যৌক্তিকতা অবশ্যই রয়েছে। কৃষিতে অর্থায়ন, ভৌত অবকাঠামো ও প্রযুক্তি বাড়াতে হবে। সরকারের নীতি-সহায়তা বৃদ্ধি ও কিছু প্রতিবন্ধকতা দূর করা গেলে কৃষি খাত আরো এগিয়ে যাবে। বিশ্ব কৃষির বাজারে প্রথম সারির দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি ৫০০ কোটি টাকার স্ট্যার্টঅ্যাপ বিজনেস ফান্ডের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেসরকারি ব্যাংক এতে সমপরিমাণ অর্থ নিয়ে ১ শতাংশ সুদে সহায়তা দেবে। সে ক্ষেত্রে কৃষি উদ্যোক্তাদের এ ঋণের বড় অংশের ব্যবস্থা করা দরকার। এখন বড় চ্যালেঞ্জ উৎপাদিত কৃষিপণ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা। সেজন্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে আরো এগিয়ে নেয়ার বিকল্প নেই। দেশে কৃষিশিল্প গড়তে ১-২ শতাংশ সুদে ঋণের ব্যবস্থা করা দরকার। পাশাপাশি শিল্পায়নের জন্য প্রয়োজনীয় আরো কিছু বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্পকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আগামীতে কাজ করতে হবে। দেশে-বিদেশে কৃষিপণ্য ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের মার্কেট বড় না হলে কোনোভাবে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। অতএব কৃষিকে রূপান্তর করতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে কিছু আইন-কানুন বদলাতে হতে পারে। রপ্তানিমুখী অর্থনীতি তৈরির জন্য কৃষি খাতকে এগিয়ে নেয়ার বিকল্প নেই। শিল্পনীতি, কৃষিনীতিতে নানা সুযোগ-সুবিধা কীভাবে বাড়ানোর প্রস্তাবে সহায়তা আবশ্যক হবে। এটা উপলব্ধিতে আসতে হবে যে কৃষির উন্নয়ন ছাড়া স্থিতিশীল উন্নয়ন সম্ভব নয়। কৃষি খাতে বিশেষ করে প্রান্তিক মানুষের প্রয়োজনে যেসব সুবিধা যেমন- স্বল্প সুদে ঋণ এবং দরিদ্র ও অতিদরিদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণ এবং প্রণোদনা সহায়তা বাড়ানো। ক্ষুদ্র ও অতিক্ষুদ্রদের ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর আগ্রহ কম। তারা তাদের নির্ধারিত ঋণের বড় অংশ বড় খাতগুলোকে দিচ্ছে। কৃষিতে কম দিচ্ছে। কৃষি খাতকে এগিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় সবাইকে তারা সহায়তা করুক। সে তাগিদ আগেও ছিল এখনো থাকবে। বাংলাদেশের কৃষক, ভালো কৃষক। তারা উৎপাদনশীলতায় নেদারল্যান্ডসের মতো উন্নত কৃষি উৎপাদনকারীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কৃষি রপ্তানিতে ১০০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। এ সাফল্য শেষ নয়, শুরু। সরকারের নীতি-সহায়তা বৃদ্ধি ও কিছু প্রতিবন্ধকতা দূর করা গেলে এ কৃষি খাত আরো এগিয়ে যাবে। বিশ্ব কৃষির বাজারে প্রথম সারির দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে পারবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কৃষির উন্নতি করতে হচ্ছে বা হবে। এজন্য কৃষিতে সরকারি বিনিয়োগের জায়গাটাতে আগ্রহ বাড়াতে হবে। প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহায়তা দিতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না। আন্তর্জাতিক বাজারের অবস্থান উন্নত করতে হবে। বিশ্বব্যাপী খাদ্যেরও একটি প্রচণ্ড শক্তিশালী জায়গা রয়েছে। সেখানে বাংলাদেশকে পৌঁছাতে হবে। বলা বাহুল্য বাংলাদেশের কৃষক ভারত-পাকিস্তানের তুলনায় অনেক ভালো রয়েছে। দেশের ৬০ শতাংশ অর্থনীতি তাদের ওপর নির্ভর করছে। কৃষকের মেয়ে গার্মেন্টসে কাজ করছে, আর ছেলে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছে। কৃষি খাতে ব্যক্তি উদ্যোগ অস্বীকার করার কোনো অবকাশ নেই। যারা বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠান গড়েছেন, কৃষিকে প্রক্রিয়াজাত শিল্পে রূপ দিয়েছেন, তাদের সহায়তা দিতে হবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ন্ত্রণ এবং অনিষ্টকারী প্রভাব ও আক্রমণ থেকে রক্ষা করে কৃষিব্যবস্থাকে সম্ভবত নিরাপদ সাফল্যের দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সমন্বিত ও কার্যকর উদ্যোগ আশানুরূপ হওয়াতেই বাংলাদেশের সমৃদ্ধি সাধনে অনিশ্চিয়তা ও ভবিতব্যের হাতে বন্দিত্বের অবসান ঘটেছে। ঘটবে। তবে গবেষণার মাধ্যমে উচ্চ ফলনশীল শস্যের উৎপাদনে প্রযুক্তির বিবর্তন ঘটাতে হবে, শুধু রাসায়নিক সার ব্যবহার করে সাময়িকভাবে উৎপাদন বাড়ানোর ফলে জমির উর্বরা শক্তির অবক্ষয় ঘটতে থাকলে আখেরে চরম বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। খাদ্যশস্যের বর্তমান চাহিদা মেটাতে গিয়ে বিশেষ করে কৃষি এবং সার্বিকভাবে পরিবেশের ভবিষ্যৎ যাতে বিপন্ন না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা বাঞ্ছনীয়। বাংলাদেশের নদী শাসনের উদ্যোগকে কার্যকর তথা পানি প্রবাহ যথাযথ রেখে নদীর নাব্য বজায় রাখা আবশ্যক হবে। পানি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ না নেয়া হলে কৃষি কাজ তো বটেই, সুপেয় পানির অভাবসহ পরিবেশ বিপন্নতায় প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারাতে পারে বাংলাদেশ। অপরিকল্পিতভাবে চিংড়ি চাষের মাধ্যমে কৃষি জমির যথেচ্ছ ব্যবহার দুঃসহ পরিস্থিতি ডেকে আনতে পারে। নৌপথে যোগাযোগের যে নেটওয়ার্ক নদীমাতৃক বাংলাদেশের, তা অত্যন্ত স্বল্প ব্যয়ের হওয়া সত্ত্বেও, উপযুক্ত পরিকল্পনা ও বিনিয়োগের অভাবে সেটিও ক্রমশ হাতছাড়া যাতে না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি দেয়ার ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। দ্রুত এবং সহজ যোগাযোগের উপায় হিসেবে সড়ক নেটওয়ার্কের তুলনামূলক উপযোগিতার বিষয়টি বিবেচনায় আসার অর্থ এই হতে পারে না যে, নৌপথ বিলুপ্তির মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হতে হবে। নৌপথের ন্যায্যবিকাশ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ছাড়াও মৌসুমি বলয়ে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ভারসাম্যের জন্যও অতি জরুরি। মাছ-ভাতের বাঙালির প্রধান দুই উপজীব্যের অস্তিত্ব ও বিকাশও তো দেশের অগণিত খাল-বিলের নাব্যতার ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশে প্রকৃত বিনিয়োগ ক্ষেত্রে হলো কৃষি। এই কৃষি থেকে খাদ্য (ভাত, মাছ, সবজি ও শর্করা), বস্ত্র, বাসস্থানের সব ব্যবস্থা হয়। কৃষি খাতকে টেকসই করে তোলার মাধ্যমে অপরাপর সংশ্লিষ্ট খাতগুলোর উন্নয়ন উদ্যোগ গ্রহণ ও স্বভাবিক হতে পারে। বাংলাদেশের স্বয়ম্ভর উন্নয়ন ভাবনা এই চিন্তাচেতনাকে অবলম্বন করে হওয়ার আবশ্যকতা অনস্বীকার্য। কৃষির পরে জিডিপিতে বড় অবদান শিল্প খাতের। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ট্রেডিং নির্ভরতা থেকে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উন্নয়নের পথে নিয়ে যাওয়াতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ উদীয়মান অর্থনীতি হতে পেরেছে। দেশীয় শিল্প সম্ভাবনাকে উপযুক্ত প্রযতœ প্রদানের মাধ্যমে স্বয়ম্ভর শিল্প ভিত্তি ওঠার ওপরে বাংলাদেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ঊর্ধ্বগামী হয়েছে। দেশজ কাঁচামাল ব্যবহার দ্বারা প্রয়োজনীয় ফিনিশড প্রডাক্ট তৈরিতে দেশের শিল্প খাতকে সক্ষম করে তোলা এবং এর ফলে বিদেশি পণ্যের ওপর আমদানি নির্ভরতা তথ্য মহার্ঘ্য বৈদেশিক মুদ্রায় আমদানি ব্যয় হ্রাস, শিল্প-ব্যবসা-বাণিজ্যে বিনিয়োগে আর বৈদেশিক সাহায্যের ব্যবহারে অর্থ সামাজিক প্রেক্ষাপটে প্রত্যাশিত অগ্রগতির হিসাব সংক্রান্ত তুলনামূলক সারনিগুলোর সঙ্গে বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অবস্থান ও সম্পর্কের শুমার ও বিশ্লেষণ করলে বাংলাদেশ অর্থনীতির অগ্রগতি-গতিধারা শনাক্তকরণে অসুবিধা হয় না। দেখা যায় আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণ জিডিপির অংশ হিসেবে ক্রমশ বৃদ্ধি পেলেও রপ্তানির মিশ্র প্রবৃদ্ধি ঘটেছে। যদিও অস্থিতিশীল ও ভিন্ন মাত্রিক ট্যারিফ স্ট্রাকচারের প্রভাব পড়েছে বহির্বাণিজ্যে ভিন্ন অনুপাতে। এতে বোঝা যায় বিশ্ব বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশের বহির্বাণিজ্য সাধারণ সূত্র অনুসরণ করতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই এগিয়েছে। উৎপাদন না বাড়লেও সরবরাহ বাড়ার প্রবণতায় মূল্যস্থিতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে অভ্যন্তরীণ বাজারে। আবার ইনফরমাল বর্ডার ট্রেডের ফলে দেশজ উৎপাদনের বিপত্তি ঘটেছে। ইনফরমাল ট্রেড বাংলাদেশের বহির্বাণিজ্যের ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অদৃশ্য এক অন্ধগলি ও কালো গর্ত হিসেবে কাজ করেছে। বাংলাদেশের আমদানিকৃত সামগ্রী অন্য দেশে পাচার হয়েছে আবার কোনো কোনো বিদেশি পণ্যের অবৈধ প্রবেশ ঠেকাতে গিয়ে আরোপিত ট্যারিফে দেশি সামগ্রী উৎপাদন ব্যবস্থার স্বার্থের সঙ্গে সংঘাত হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় এবং বিনিয়োগের জন্য পুঁজির অপ্রতুলতা থাকায়, বিপুল শ্রমিক শক্তির জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, দেশীয় কাঁচামালের কার্যকর ব্যবহারকল্পে উপযুক্ত প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি আমদানির দ্বারা উৎপাদন কৌশল জানা, আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে রপ্তানিমুখী শিল্প উদ্যোগ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণ ও রূপান্তরে বাংলাদেশ বিদেশি পুঁজি প্রত্যাশী। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের প্রত্যাশা ও সম্ভাবনা সেই সত্তরের দশক থেকে। সত্তরের দশকের প্রথমার্ধে যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠন ও পুনর্বাসনকালে প্রাইভেট সেক্টরের ওপর পাবলিক সেক্টরের প্রাধান্য ও নিয়ন্ত্রণ বলবত ছিল, দ্বিতীয়ার্ধে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও স্থিতিশীল পরিস্থিতি প্রেক্ষাপটে শিল্প উদ্যোগে পাবলিক সেক্টরের নিয়ন্ত্রণ শিথিল এবং আধিপত্য হ্রাস পেতে থাকে। ১৯৮০-৮১ সালে সরকার প্রাইভেট সেক্টরের উন্নয়ন লক্ষ্যে নয়া শিল্পনীতিতে কিছু মৌল পরিবর্তন আনে। উল্লেখ্য, এ সময় ১৯৮০ সালেই ‘ফরেন ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন এন্ড প্রটেকশন অ্যাক্ট’ জারি হয়। বাংলাদেশ এক্সপোর্ট প্রসেসিং জোনস অথরিটি (বেপজা) অ্যাক্টও পাস হয় এ সময়। এতদসত্ত্বেও আশির দশকে বিদেশি বিনিয়োগ তেমন আসেনি বাংলাদেশে। পুরো দশকে ইপিজেডের বাইরে বিদেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব নিবন্ধিত হয় মাত্র ৪০৪ মি. মা. ডলার। সত্তর ও আশির দশকে অর্থনৈতিক সাহায্য হিসেবে বাংলাদেশে বিদেশি ঋণ ও অনুদান এসেছিল মূলত পাবলিক সেক্টরের জন্য। এখনো পাবলিক সেক্টরেই যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও শক্তি, প্রযুক্তি ও পরিবহন খাতে বড়সড় অবকাঠামো গড়ে তুলতে কঠিন শর্তের বিদেশি ঋণ ও দেশি সম্পদ ভর্তুকি হিসেবে দিতে গিয়ে প্রাইভেট সেক্টরের পুঁজির প্রয়োজনীয়তা ও তার চাহিদার প্রতি নজর ফিকে হয়ে যাতে না যায় সেদিকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সহনশীল ও বর্ধনশীল খাতগুলোকে টেকসই করতে নীতি সহায়তার সমন্বয়ই হবে মুখ্য দায়িত্ব।

ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ : সরকারের সাবেক সচিব এবং এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App