×

আন্তর্জাতিক

মমতা পশ্চিমবঙ্গের বাংলা আকাদেমি পুরস্কার পাওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মে ২০২২, ০১:১০ এএম

মমতা পশ্চিমবঙ্গের বাংলা আকাদেমি পুরস্কার পাওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা
মমতা পশ্চিমবঙ্গের বাংলা আকাদেমি পুরস্কার পাওয়ায় ব্যাপক সমালোচনা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল ছবি

পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি পুরস্কার পেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ নিয়ে সমালোচনার ঝড় শুরু হয়েছে ভারতের এই বাংলাভাষী রাজ্যটিতে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে আলোচনা সমালোচনা। পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমির নামাঙ্কিত ‘রিট্রিভার্সিপ’ পুরস্কার দেওয়া চালু হল এই বছর থেকে। প্রথম বছর বাংলার সাহিত্যিকদের সঙ্গে পরামর্শ করে মুখ্যমন্ত্রীকে তাঁর ‘কবিতা বিতান’ কাব্যগ্রন্থের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার

সোমবার (৯ মে) কবিগুরুর স্মরণে ‘কবি প্রণাম’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল রাজ্যের তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে দাঁড়িয়ে শিক্ষামন্ত্রী তথা বাংলা আকাদেমির চেয়ারম্যান ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে কাজের পাশাপাশি যাঁরা নিরলস সাহিত্য সাধনা তথা সারস্বত সাধনা করে চলেছেন, তাঁদের পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলা আকাদেমি। প্রথম বছর বাংলার শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিকের মতামত নিয়ে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর ‘কবিতা বিতান’ কাব্যগ্রন্থকে মাথায় রেখে সার্বিক ভাবে তাঁর সাহিত্য কীর্তির জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।’’

রাজ্য সরকার আয়োজিত ‘কবি প্রণাম’ অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তিনি নিজে ওই পুরস্কার গ্রহণ করেননি। ব্রাত্য মুখ্যমন্ত্রীকে পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করার সময় তাঁকে মাঝ পথে থামিয়ে দেন তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন। ব্রাত্যকে তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর তরফে এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন ব্রাত্য। এর পর ইন্দ্রনীল নিজেই ব্রাত্যের হাতে ওই পুরস্কার তুলে দেন।

এ পুরস্কারের ঘোষণায়ে নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন তীব্র সমালোচনা করে ফেসবুকে নিজের পেজে স্্যোটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘কী? মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বাংলা আকাদেমি সাহিত্য পুরস্কার দেওয়া হয়েছে? ওঁর হাম্বা হাম্বা কবিতাটি ওই বইয়ে আছে তো! ভালো যে আমি কলকাতায় থাকি না আর। যেটুকু শ্রদ্ধা ছিল কবি সাহিত্যিকদের জন্য, যেটুকু মুগ্ধতা ছিল মানুষের সততা আর সাহসের জন্য, যেটুকু পক্ষপাত ছিল ওই শহরটির জন্য, সেসব দিনে দিনে ফুরিয়েছে। চারদিকে চলছে চাটুকারিতা। টাকা, ক্ষমতা, নাম আর পুরস্কারের লোভ মানুষকে এত ক্ষুদ্র বানিয়ে ফেলেছে যে কারও মুখ আর দেখতে পাওয়া যায় না।’

লেখিকা তসলিমা নাসরিন এখানে তার স্ট্যাটাসটি শেষ করেননি। তিনি এ প্রসঙ্গে আরও লিখেছেন, ‘খুনী ডাকাত চোর বদমাশ নির্লজ্জ হলে মানায়। যখন শিল্প -সাহিত্যের জগতের লোকেরা নির্লজ্জ হয়, তখন সেই সমাজ নিয়ে সামান্যও আশা করার কিছু থাকে না। ভালো যে ওই শহরে আমি আর বাস করি না৷ বাস করলে হতাশার অতল গহবরে আমাকে তলিয়ে যেতে হতো।’

এই স্ট্যাটাসের নিচে তসলিমাকে সর্মথনের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রূপ ও হাস্যরসাত্মক বহু মন্তব্য পড়েছে।

তপন বসু নামে একজন হতাশা প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন, ‘আমার বলার ভাষা নেই। শিল্প অথবা সাহিত্য নিয়ে যারা চর্চা করেন তাদের কিন্তু দিন রাত ও নিয়েই চিন্তা ভাবনা, কিন্ত এখন এই সমস্ত প্রেস্টিজিয়াস অ্যাওয়ার্ড গুলো শুধু মাত্র মাসেল পাওয়ার এবং মানি পাওয়ার এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ।’

সুকান্ত চট্টোপাধ্যায় নামে আরেকজন লিখেছেন, ‘অযোগ্যরা যখন দেশ স্বাসন করে আর বুদ্ধিজীবীরা অন্ধ হয়ে তাবেদারী করে তখন যোগ্য মানুষরা হারিয়ে যায় অন্ধকার গহবরে।’

বাংলা সাহিত্যের প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক কমলকুমার মজুমদার গবেষক পশ্চিমবঙ্গের লেখক হিরন্ময় গঙ্গোপাধ্যায় ব্যাপক হতাশা ক্ষোভ প্রকাশ করে নিজের ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ রাজ্যের লেখক-কবিদের উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘হিম্মত থাকলে, বাংলা আকাদেমি বয়কট করুন বাঙালি লেখক/ কবি।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App