×

সারাদেশ

জাফলংয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে পর্যটকরা লাঞ্ছিত, নারী-শিশুসহ আহত ৫

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২২, ০৮:৫৯ পিএম

জাফলংয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের হাতে পর্যটকরা লাঞ্ছিত, নারী-শিশুসহ আহত ৫

বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেটের জাফলংয়ে পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদানকারী স্বেচ্ছাসেবকদের হাতেই নিগৃহীত হন পর্যটকরা। ছবি: ভোরের কাগজ

আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল এবারের ঈদে সর্বোচ্চ পর্যটকের সমাগম হবে সিলেটে। সে অনুযায়ী পর্যটকদের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তবে শেষ পর্যন্ত এড়ানো গেল না বিব্রতকর পরিস্থিতি। পর্যটকদের নিরাপত্তা প্রদানকারী স্বেচ্ছাসেবকদের হাতেই নিগৃহীত হলেন পর্যটকরা।

বৃহস্পতিবার (৫ মে) দুপুরে সিলেটের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ে ঘটে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা। পর্যটন কেন্দ্রে টিকেট কেনাকে কেন্দ্র করে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায় ঘটনাস্থলে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবকরা। হামলায় নারী, শিশুসহ অনন্ত ৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, জাফলং পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশে নির্ধারিত ১০ টাকা ফি দেয়া নিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয় শহর থেকে যাওয়া একটি পরিবারের। বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে কাউন্টারে থাকা স্বেচ্ছাসেবকরা লাঠিসোঁটা দিয়ে পর্যটকদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় এক তরুণী ও কোলে শিশু নিয়ে একজন নারী এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা চালায় স্বেচ্ছাসেবকরা। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি ঘটনার ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। মুহূর্তে ভাইরাল এই ভিডিও নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

তুহিন ভট্টাচার্য্য নামে এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লেখেন, ‘কারা এদের এত প্রশ্রয় দেয়! কার অভয়ে এরা পর্যটকদের ওপর আক্রমণের সাহস পায়! সবকিছুই কি নষ্টদের দখলে?’

উদয়ন বড়ুয়া নামের একজন লিখেছেন, ‘সিলেটকে বলা হয় আধ্যাত্মিক এবং পর্যটনের নগরী। কিন্তু টিকেটের নামে যদি এমন প্রকাশ্য চাঁদাবাজি এবং এমনকি নারী পর্যটকদের ওপরও হামলা হয়, তাহলে কোথায় আইনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা? স্বেচ্ছাসেবক নামে এই সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাহস কোথা থেকে পায় তারা? সিলেটের সুধী মহলকে প্রশ্ন, অনেক কিছুর মতো সিলেটের পর্যটন সুনামটাও কী এবার বিলীন হবে? সব ধরনের চাঁদাবাজি এখনই বন্ধ হোক।’

তবে ঘটনার পরপরই দুজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুর রহমান। আটককৃতরা হলো- গোয়াইনঘাট উপজেলার পন্নগ্রামের মৃত রাখালচন্দ্র দাসের পুত্র লক্ষণ চন্দ্র দাস (২১) এবং ইসলামপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার পুত্র সেলিম আহমেদ (২১)। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, ঘটনাস্থলের একটু দূরে ছিল সিলেট জেলা পুলিশের একটি দল। ঘটনার খবর পেয়েই তাৎক্ষণিক দুই স্বেচ্ছাসেবীকে আটক করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের লোকবল কম থাকায় সব স্পটে পুলিশ মোতায়েন করা সম্ভব হয় না। তবে ঘটনার পর প্রতিটি স্পটে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাহমিলুর রহমান জানান, এটি একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা। এমন ঘটনা ঘটতে পারে তা ধারনাতেই ছিল না। তিনি বলেন, জাফলং-এ পর্যটকদের সব সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জেলা পর্যটন কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১০ টাকা ফি আদায় করা হয়। এখন পর্যন্ত কেউ এটি নিয়ে দ্বিমত করেনি। আমরা পর্যটকদের জন্য ফ্রি ওয়াইফাই, নিরাপদ পার্কিং, পানীয় জল ও পাবলিক টয়লেটের মতো সুবিধা নিশ্চিত করেছি।

তিনি বলেন, আজকের ঘটনা শোনার পরপরই আমরা উপজেলা প্রশাসন থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তিনি আরো বলেন, ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া এ ধরনের ঘটনার পুনারাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য পর্যটকদের নিরাপত্তা জোরদারে সবপক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App